প্রিয় পাঠক লক্ষ্য করুন

জোনাকী অনলাইন লাইব্রেরীতে আপনাকে স্বাগতম | জোনাকী যদি আপনার ভালো লাগে তবে আপনার বন্ধুদের সাথে লিংকটি শেয়ার করার অনুরোধ জানাচ্ছি | এছাড়াও যারা ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করতে আগ্রহী তারা jaherrahman@gmail.com এ মেইল করার অনুরোধ করা হচ্ছে | আপনার অংশগ্রহণে সমৃদ্ধ হোক আপনার প্রিয় অনলাইন লাইব্রেরী। আমাদের সকল লেখক, পাঠক- শুভানুধ্যায়ীদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা- অভিনন্দন।

আলতা | কামরুল আলম সিদ্দিকী


মঙ্গলবার, জ্যৈষ্ঠ, ১৩৬৮ বাংলা। আজ হাটবার। ময়নাপুরের সপ্তার হাট। সুরুজ মিয়ার বাড়ির দক্ষিণেই লাগোয়া পূর্ব-পশ্চিম মেঠোপথ। মধ্যাহ্নের সূর্য পশ্চিমে ঢলতেই পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে মানুষের স্রোত নামতে থাকল ঢলের পানির মতো। উদ্দেশ্য হাট। কারও মাথায় লম্বা বরাক বাঁশ, তিন-চারটে বাঁশ একত্রে আঁটি বেঁধে দুই মাথায় দু’জনে বয়ে নিয়ে যাচ্ছে। যেন রাস্তার উপরে বাঁশের সেতু হাঁটে তালে তালে। জাই আর জিংলা দু-একটা বাঁশ একজনের মাথাতেই দেখা যাচ্ছে—কারও মাথায় চাঁই, আইডার স্তূপ। সামনেই বর্ষা, মাছ ধরার মৌসুম, তাই। কারও হাতে ঝোলা, কারও হাতে শুধু টর্চ... নানান লোক, নানান জিনিস, নানান উদ্দেশ্য নিয়ে ছুটছে হাটে।
সুরুজ মিয়া তখনও ঘরের দক্ষিণের ছোট্ট উঠোনে দাঁড়িয়ে লম্বালম্বি লটকানো বাঁশের খুঁটিতে পুরান জালে টইন দিয়ে কটিতে সেলাইরত। বউ জরিনা দু’বার এসে বলে গেল বাজারের কথা। চাল, তেল, নুন, বরজ... কিন্তু কোনো গরজ দেখা গেল না সুরুজের। ঘরে যে টাকা আছে, তা দিয়ে পাঁচ সের চাল আনলে আর কিছু কেনা হবে না, এই ভেবে চুপ। ওপাশে বাড়ির দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে বিশাল একটা আমতলায় একমনে খেলছে তার সাত বছরের কন্যা আলতাভানু। তৃতীয়বার। এবার মায়ের অনুরোধের সঙ্গে আলতার আবদার এসে যোগ হলো। আলতা বলল, বাজান, আমিও আডে যাইবাম— আলতা আনবাম, পুতুল কিনবাম, চুড়ি লইবাম, যাইবাম, যাইবাম। একমাত্র কন্যার আবেদনে সুরুজ মিয়া এবার ঘাড় না উঠিয়েই বলল, যাইবা, যাইবা। সব আনবাম সব, আলতা, লিবিস্টিক আর কি জানি মা কও তো।
—আর পুতুল, আর আলতা, আর আলতা—লাল আলতা, বলল। বলে দৌড়ে চলে গেল গাছতলায়। ওখানে তার বয়সী আরও সই ছিল। মাটির পুতুলগুলো নেড়েচেড়ে আবার মাটির এঘর থেকে ওঘরে নিল; পুতুল জামাই-বউকে একঘরে শুতে দিল, বালু দিয়ে বালুভাত, পাতা দিয়ে শাক রান্না হতে লাগল। কেউ খড়ি আনে, কেউ গাছের কচিপাতা টোকায়, কেউ বালু আনে। প্রতিদিনের মতোই আজকের খেলা। সুরুজ মিয়া গরিব মানুষ। চার-পাঁচ শতক বাড়ির ওপর উত্তর পাশে দখিনমুখো একখানা ছোট শনের ঘর। তার মধ্যে ওরা তিনজন পাটি আর তেল চিটচিটে কাঁথা বিছিয়ে থাকে। সামনে ছোট্ট আয়নার মতো চকচকে উঠোন। জরিনা ওটাকে খুব আদর করে পরিচ্ছন্ন রাখে—যেন নিজেরই আত্মার জমিন। যে জমিনে পেটে ভাত না থাকলেও স্বাধীন জরিনা। সুরুজের ভালোবাসার সংসার, তিনবেলা আহার না জুটলেও পরিপাটি চাতাল এবং টুকটুকে শিশুর মতো পরিচ্ছন্ন ছোট্ট ঘরখানি দেখলেই বোঝা যায়।
বৈশাখের হুহু দখিন দগ্ধ হাওয়া ডালের আমে, জালে দোলা দিচ্ছে বারবার। যেন নলকূপে পানি তোলারত পুরান বধূর বুকের দোলা, পাকা আম টুকটাক মাঝে মধ্যে দমকা বাতাসে দু-একটা নিচে পড়ামাত্র শিশুদের হুড়োহুড়ি—কে কার আগে নেবে।
আলতার আবদারে সুরুজের বুকটা ছ্যাঁত্ করে উঠল, যেন পাতিলায় বাগার দিল কেউ। বাগারের ঝাঁঝালো সুঘ্রাণ, কিন্তু সুরুজের বুক পাতিলায় কেবল ঝাঁঝালো একটা ঝাঁকি খেল। কত সপ্তার কতো হাট গেল—আলতার আলতা আনা হয়নি আজও।
আলতাভানুকে খেলায় মাতিয়ে সুরুজ মিয়া চুপিচুপি ঘরের একমাত্র পাঁচ টাকার নোটটি খুতিতে গুঁজে নিয়ে হাটে চলে গেল।
গ্রামের হাট। ময়না নদীতীর। ময়না নদীর নামেই হাটটির নাম কোনো এক কালে ময়নাপুর হয়েছে। হাটের বেশিরভাগ দোকানই টিনের তৈরি, দু-একটা চায়ের স্টল শনের। শতবর্ষী পুরান হাট। হাটের দক্ষিণ প্রান্ত দিয়ে বয়ে গেছে খরাস্রোতা নদীটি। নদীটির কোলে রাখা ডানপাশের হাটটি যেন নানা জিনিসভর্তি এক ঝোলা। এই ঝোলা কোলে রেখে নদী বয়ে চলেছে আদরে যুগ যুগ ধরে। বরাবরের মুদির দোকানে সুরুজ মিয়া পাঁচ টাকায় তিন কেজি চাল, আধা কেজি নুন, আধা পোয়া সরিষার তেল কিনল আর নদীর পার থেকে দুই আনায় আধেক চাঁদের মতো এক চিড় তালকদু কিনে নিল। হাতে বাকি দুই আনা। কাজ না পেলে এটা পরের পুরো সপ্তার সম্বল। সংসারের কত কিছু; দু’আনায় কী হয়! নদীর কোলঘেঁষে গাইনিরা বসেছে আলতা, চুড়ি, ফিতা, লিপস্টিক—এসবের পসরা নিয়ে। কেউ পুতুল বিক্রি করছে। সুরুজ মিয়া ফেরার পথে একটা লাল আলতার শিশি হাতে নিয়ে জিজ্ঞেস করল দাম। গাইনি বলল, তিন আনা, কম অইব না। রক্তের রঙের মতো লাল কাচের শিশিটা মুঠোয় নিয়ে মনে হলো আসমানের শান্ত রসগোল্লা চাঁদটা তার হাতে—ওটা কিনতে পারলে তার বাজারের পুরোটাই কেনা হতো।
সুরুজ মিয়া ওটা নেড়েচেড়ে রেখে দিল। দোকানি গাইনি বলল, রাইখ্যা দিলা যে, নিতা না?
— না নিতাম না। ওই আলতা বালা না, রঙডা ফাক্কা না। গাইনি বলল, তুমি মিয়া রোজ রোজ আলতা দেহো... ছোডো মাইনসের লাহান, নেও তো না... গায়ে নয়া রঙ লাগছে নাহি? পানমুখটা বেঁকিয়ে বলল, বউয়ের রঙটা ফাক্কা নি, ঢং!
— সুরুজ মিয়া কোনো উত্তর না দিয়েই জায়গাটা থেকে কেটে পড়ল তড়িঘড়ি। হাটে ঢোল হচ্ছে, দূরের আওয়াজ, সুরুজ মিয়ার কানে স্পষ্ট আসছে না। কাছে এলে শুনতে পেল—ভাইসব সবাই হুনুইন, মন দিয়া। ঢোলের বাড়িতে কিছুক্ষণের জন্য কেনাকাটা, কথাবার্তায় ছেদ পড়ে যেন ভাদ্রের নিরাগ দুপুর।
‘হুনুইন ভাইসব, আগামী পইলা আষাঢ় রোজ সমবার থাইক্যা সরকার এক ফরমান জারি হরছে—এহন থাইক্যা কোনো মাইয়্যার বয়স আঠারো না ওইলে এবং ছেলের বয়স একুশ না ওইলে বিয়া দেয়া যাইবো না। এই আদেশ ভঙ্গ করলে কঠিন বিচার ওইব।’ সবাই শুনল ঢোল। এই ঢোলে কারও কারও পাগল হবার জো। যাদের ঘরে ছোট ছোট ছেলেমেয়ে। সুরুজ মিয়াও, তার বুকটা আবার ধাক্কা খেল। ‘তা ওইলে তার আলতাভানুর কী ওইবো, তার কী বিয়া ওইবো না। মাত্র সাত। আঠারো বছর ওইলে মাইয়্যারে তো কেউ লইবো না, হায় হায়।’ মনে এই চিন্তা করতে করতে সে বাড়ি ফিরল।
ঘরে আসতেই আলতা ঝোলাটা টেনে নিল প্রায় বারান্দা থেকেই। ঘরে এসে কুপির আলোয় ঝোলার ভিতর খুঁজতে লাগল তার আলতার শিশি, কিন্তু ওটা নেই। রাঙা বেলুন চুপসে যাওয়ার মতো আলতার মুখটাও চুপসে গেল মুহূর্তেই। এর মধ্যে মা এলো। চুপিসারে কুপির আগুনের শিস সাপের শিসের মতো আলতার চুলে প্রায় লাগে লাগে।
মার বকুনি খেয়ে আলতা কুপি ও ঝোলা রেখে দিল মেঝেতে। জরিনা একটা ঝুড়িতে ঝোলাটা ঢালল। আলতা তো নেই। আস্তে আস্তে বলল, আইজ্জাও মাইয়্যাডার আলতা আনো নাই। একটা মাত্র ছেরি আমরার, এইডার কোনো আবদারই তুমি রাহ না।
— মনডা তো ছাই, পয়সা ছিল না।
দিনমজুর সুরুজ মিয়া কোনোমতন দিন কাটায়। কখনো কাজ থাকে, কখনো থাকে না। কাজ না থাকলে মাছ ধরা, ওটা-সেটা করা নিয়ে ব্যস্ত থাকে; তা দিয়ে সংসার চলছেই না।
সারাদেশে বিয়ের বয়স নিয়ে তোলপাড়, পক্ষে-বিপক্ষের নানা মত—বেশি দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে গেল অবিবাহিত ছোট ছোট ছেলেমেয়ের বাবা-মায়ের। তাদের মাথায় যেন বিনা মেঘেই বজ্রপাত।
আষাঢ়ের প্রথম, এর মধ্যে বিয়ে দিতে না পারলে আলতার কী হবে—এই ভেবে রাতে আর জরিনা-সুরুজ ঘুমোয়নি। পাশে আলতাভানু, ঘরে আলো নেই। তবু আলতার আলতারং মুখ ঘর রঙিন করে রাখল। গোলগাল মুখখানি, ছিমছাম সাত বছরের আলতা এখন বেঘোর ঘুমোচ্ছে। সারাদিন পাড়াময় ঘোরাঘুরি, সাথিদের নিয়ে বৌছি খেলা, কখনও পুতুল, কখনও গোল্লাছুট—এই নিয়ে ওদের কাটে বেলা। ক্লান্ত শরীর কাঁথায় লাগামাত্র ঘুম। ঘুমের আগে সুরুজ মিয়া কন্যাকে চুমো কেটে আদরে হাসিতে বলছিল, মা, তোমারে শ্বশুর বাড়িত দেম। শ্বশুর আলতা আাানব, লিবিস্টিক, চুড়ি আরও কতো কী ...
আলতা কিছুক্ষণ চুপ থাকল। মনে পড়ল সাথিদের কথা। তারা যেন বিয়ে বিয়ে কী বলছিল। বিয়ে হলে শ্বশুরবাড়ি যেতে হয়। শ্বশুরবাড়ির কথা মনে হতেই ঝট করে আলতা বলল, শ্বশুরবাড়ি যাইতাম না। আমি তোমার সঙ্গে তাহুম বাজান। তোমার সঙ্গে। তুমি আমারে আলতা দিবা।
মসজিদে ফজরের নামাজ শেষে সুরুজ মিয়া আবার ছেঁড়া জাল ছড়িয়ে সেলাই করতে থাকল। জরিনা ঘুম থেকে উঠে ঘরলাগোয়া পশ্চিমের ছোট্ট ছাপড়া রান্নাঘরে ঝিমুচ্ছে। আলতা ঘুম থেকে জেগেই আমতলায় আম খুঁজতে গেল। পরনে একটা কুঁচি দেয়া জোড় কলসির মতো হাফ প্যান্ট, উদাম শরীর চুলভর্তি আলুথালু মাথা সকালের হালকা বাতাসে হাওয়ায় উড়ছে। সুন্দর কচি মুখখানা সবকিছুকে ছাপিয়ে যেন মেঘের ভেতরের চাঁদের মতো ভাসছে।
তখনও পুব দিগন্তে সূর্য দেখা যায়নি; কিন্তু ফরসা। পাশের গাঁও চাতালপুর থেকে ফজরের নামাজ পড়ে ঈদু বেপারী ঢলতে ঢলতে এসে হাজির হলো সুরুজ মিয়ার চাতালে। পরনে একটা হাফ পাঞ্জাবি, আর একটা চেক লুঙ্গি, মাথায় গোলটুপি, মুখে চাপদাড়ি, মাঝারি গড়নের শরীর। সুরুজ সেলাইয়ের টইনটা নামিয়ে বলল,
‘আরে বেপারি ছাব আফনে, বসুইন বসুইন। তা কী মনে হইরা। ও আলতার মা, একটা ফিড়ি আনো আমাদের বেপারি ছাব আইছে, বইতে দেও।’ পিঁড়িতে বসতে বসতে বেপারী সরাসরি বলল, বইতাম না, একটা পয়গাম আনছি, কথা রাহন লাগব।
— কী হতা, কিছুই বুঝতাছি না।
— বুঝলা না, আমার পুলা আর তোমার মাইয়া... হুনছি তোমার মাইয়াডা সুন্দর। জানো তো, আমার জমি-ক্ষ্যাতি ব্যবসা সবই আছে। আর সরকার যে ফরমান দিছে—আর তো বিয়াও হরান যাইবো না। ত তুমি মত দিলেই ওইলো। পুলাডা আমার বালা। একটু সহজ-সরল এইডাই, এইডাই আরকি!
সুরুজ মিয়া চুপ করে রইল। যেন বৈশাখের ঝড়-বৃষ্টি একসঙ্গে তার ভেতরে নামল। বৈশাখে এমনই ঝড় না এলে বৃষ্টি আসে না। বৃষ্টিরও দরকার, কিন্তু ঝড়ের তাণ্ডবে তো ঘরখানি উড়ে যায়। সুরুজ মিয়া বৃষ্টি পেল ঠিক, কিন্তু সঙ্গে যে ঝড়েরও আভাস পেল। এই চিন্তা করতে করতে হঠাত্ সরাসরি বলল, ওনছি আফনের ছেরাডা বেক্কল।
না না, একটু সোজা আরকি, বেয়া ওইলে সব সোজা ওইয়া যাইব। তাছাড়া তোমারে আমার এককানি জমি দিবাম, তুমি কইরা খাইবা। দেহ ভাইব্যা।
সুরুজ মিয়ার চোখ পড়ল আমতলার আলতার চোখে। কী মুখ, কী চোখ, যেন সুরুজের সব সুখ তার মুখে। যে ঘরে যাবে, সে ঘরে সুখের আলো জ্বলবে নির্ঘাত।
সুরুজ চুপ থাকায় বেপারী বলল, তুমি ভাইবা দেহ। ফরে নি আবার মাইয়্যাডার বিয়া না অয়। এই কথা বলে ঈদু বেপারী উঠি উঠি করছিল। বেপারীর উঠি উঠি ভাব দেখে সরল সুরুজ মিয়া ভাবল—এই বুঝি তার ভালো একটা পয়গাম হাতছাড়া হয়ে গেল। সুরুজ মিয়া আর কোনো চিন্তা না করেই বলল,
- বেপারি সাব বইন- বইন একটু বইন।
সুরুজ মিয়ার মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকল সরকারের ফরমান, নিজের অসহায়ত্ব, দারিদ্র্য আর অন্যদিকে ধনী পুত্র বোকা রাজা মিয়া। ঈদু বেপারী শখ করে তার নাম রেখেছিল রাজা। রাজা একদিন সত্যিই রাজা হবে—এই ভেবে; কিন্তু ভাগ্যের লিখনে হলো এক বোকা প্রজা। সুরুজ মিয়া চিন্তা করল, ছেলে বোকা হলেও মেয়েটা তো খেয়ে-পরে আরামেই থাকবে।
সুরুজ বলল, বইন বইন ভাই বইন। আফনে নিজে পয়গাম আনছুইন আমি ফালাইতাম না।
— ঠিক আছে কাইল বিশুদবার বিকালে আমরা দু-একজন আইয়্যা পান-চিনি কইরা যাইবাম। দিন তারিখ টিক করবাম। ধরো তুমি পান-তামুক দিলেই অইব। এই ধরো বলে পাঞ্জাবির পাশের জেব থেকে দশটি টাকা সুরুজের হাতে চট করে গুঁজে দিয়ে বলল, পান-চিনির খরচা। সুরুজ টাকা হাতে নিয়ে মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে চুপ করে রইল। আধা মিনিট পরে বলল, টিক আছে!
পাড়ায় পাড়ায় বিয়ে। ১ আষাঢ়ের মধ্যে সব বিয়ে হতে হবে। ধুম পড়ে গেল। বৈশাখের বানের পানি এলে যেমন কাঁচা-পাকা সব ধান চড়া দামে মুনি নিয়ে কেটে ঘরে আনতে হয়—ঠিক এমনিই অবস্থা। কেউ বউ ঘরে তুলবে, কেউ কন্যা বিদেয় করবে। বর, কনের বয়সের আর কোনো পাকা-কাঁচা নেই।
১৬ জ্যৈষ্ঠ। মোহাম্মদী পঞ্জিকা মতে ১ আষাঢ়ের আগে কিংবা ১৬ জ্যৈষ্ঠের পরে আর কোনো শুভ বিবাহের দিন ধার্য নাই। ১৬ জ্যৈষ্ঠ শুক্রবার ঠিক হলো আলতার বিয়ে। সাত বছরের শিশু আলতা যেন ষোলো বছরের ভরা কন্যায় পরিণত হলো। পান-চিনিতে দেয়া বরপক্ষের লাল শাড়ি আর চুড়ি পরে ঘরে বসে থাকে। মায়ের আদেশমতে শুধু গোসলের সময় পুকুরঘাটে যায়। উঠোনে শাড়িটা ছড়িয়ে দেয়। দাদি-নানিরা বলে, আলতা বেশ বড় ওইয়া গেছস। শ্বশুরবাড়িত যাইবে, দেখবে কী মজা। আলতা হাসে। বলে, যাইতাম না, যাইতাম না, বাজানের লগে তাহুম। একদিনে ওই শুক্রবারে কয়েক গ্রামে কয়েক শ’ বিয়ে। হাটে দুধ নেই, বাজারে মুরগি নেই, লাই-লাজিমার দাম দ্বিগুণ। দুধের অভাবে আলতার বিয়েতে ফিরনি হলো না, মাংসের কমতি আর বরপক্ষের চুড়ি আছে তো আয়না নেই, গয়না আছে তো পাটি নেই। কন্যাপক্ষের কেউ কেউ জোর আপত্তি তুলল, অমন হদ্দ বোকা ছেলের কাছে কন্যা দেয়া যাবে না। এসব নিয়ে দু’পক্ষের দরবার শেষে মধ্যরাতে বিয়ে পড়ানো হলো। কন্যার পক্ষে কবুল দিল বাবা সুরুজ মিয়া। অমনিই শুরু হয়ে গেল কান্নার রোল। যেন ঝমঝম বৃষ্টি—দুঃখের নয় আশার, তবু কান্নারই সৃষ্টি। আলতার মার বুকফাটা বিলাপ ঝড়োবৃষ্টির মতো নামতে লাগল যেন আলতাদের ছোট্ট সুখের উঠোনে। বাবার কান্না ভেতরে গুমোট মেঘের মতো গুড়গুড় করতে লাগল। বরের বয়স ১৫-১৬ হওয়াতে রাজা নিজেই কবুল পাঠ করল। রাজা কবুল করে প্রকাশ্য দরবারেই বলে ফেলল, এল্লা আমার বউ দেইন। এই কথা শুনে কেউ হাসে, আলতার বাবার ভেতর ফাটে, মায়ে কাঁদে।
বর্ষার কাছাকাছি হওয়াতে রাতভর বৃষ্টি হলো। লোকে বলাবলি করল কৈন্যার ভাগ্য ভালই। বৃষ্টিতে বিয়ে, ক্ষণ শুভ। কনের বাড়ি শামপাড়া, বরের বাড়ি চাতালপুর। শামপাড়ার পশ্চিমে খালে ততক্ষণে কোমরপানি লেগেছে। বরপক্ষ পালকি পেল না। সব পালকি আগেই বুকিং হয়ে গিয়েছিল। হট্টগোল আর আলতার মায়ের করুণ বিলাপের মধ্যে কনে বিদেয় হলো।
দুই গ্রামের মাঝে একটি খাল—আর কোনো পার্থক্য নেই। ওই একটি খালই মাঝে মাঝে দু’গ্রামের বা দূরের গ্রামের মানুষের জন্য বর্ষাকালে কাল হয়ে দাঁড়ায়।
পালকি নেই, তাহলে কনে কীভাবে শ্বশুরবাড়ি যাবে। বিয়ের দিন হাঁটিয়ে কনে নেয়া যায় না, আবার গরুর গাড়ি, রিকশার রাস্তাও নেই বা নৌকার চলনও শুরু হয়নি পানির অভাবে। দু’পক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বরের কোলে উঠে কন্যা যাবে শ্বশুরবাড়ি। আলতা তো বরের কোলে যেতে চাচ্ছে না। এ নিয়ে তামাশা। তবু বাবার কোলে উঠে দু’পাশে জঙ্গলঘেরা সরু পিছল মেঠোপথে খালপাড়ের রাস্তার মাথা পর্যন্ত গেল আলতা। একজনের হাতে হ্যাজাকের আলো নাচতে নাচতে পাড়ার প্রান্ত পর্যন্ত এলো। এরপর বরের কোলে খালপাড়ি দিয়ে শ্বশুরবাড়ি যাবে কন্যা। জোর করে বরের কোলে দেয়া হলো আলতাকে। বৃষ্টি তখনও থামেনি, বৃষ্টি আর আলতার চোখের পানি গড়িয়ে গড়িয়ে নামতে থাকল অদৃশ্য হতে হতে। জগতের এই নিয়ম—অদৃশ্য হয়ে যায় একসময় সবই। বরপক্ষের পরনে সবারই লুঙ্গি, লুঙ্গি পানির মাপে উপরে তুলতে তুলতে কেউ বুক পর্যন্ত তুলে লুঙ্গি না ভিজিয়েই খাল পাড় হলো। রাজার পরনে পাজামা-পাঞ্জাবি। খালে আধো অন্ধকারে হ্যাজাকের আলোয় গাঁয়ের কোল থেকে স্পষ্ট সব দেখা যাচ্ছে না। বাতাস নেই শুধু বৃষ্টি। বর রাজা শক্ত করে কাঁখে নিল আলতাকে—মেয়েদের কলস কাঁখে নেয়ার মতো। রাজার মনে হলো পৃথিরীর সব সম্পদ এখন তার কাঁখে। কে নেয় তার এ সম্পত্তি। আজ নেবার কেউ নেই রাজার নিজস্ব সম্পত্তি। বৃষ্টির পানি তোড়ে নামতে থাকে খাল দিয়ে। রাজা আলতাকে নিয়ে পানিতে নামল। প্রায় ঊরু পানি। আলতাকে কাঁখে নেয়ায় আলতার পা দুটো পানিতে ডুবে গেল। আলতার সঙ্গে সঙ্গে মনে হলো তার পায়ের আলতা পানিতে ধুয়ে যাচ্ছে।
আলতা কান্না থামিয়ে বলল, ‘আমার আলতা আমার আলতা!’ রাজা ভাবল, তার পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদের বিয়ের আলতা ধুয়ে নিয়ে যাচ্ছে খালের পানি, এ কেমন কথা। তত্ক্ষণাত্ প্রিয় সম্পত্তি আলতাভানুর পা দুটো উপরে তুলে মাথা নিচে রেখে পার হতে থাকল খাল। খালের কণ্ঠনালী ছিল না, জলের ভাষা ছিল না যে বলবে, আলতার কোমল মুখ মাথাসুদ্ধু পানির ভেতর ঝুলে আছে। অন্ধকারে প্রিয় জায়াকে নিয়ে বীরের মতো উঠে এলো রাজা ওপারে। আলতার মাথা ঘুরিয়ে ওপারে তুলতে গেল, আলতার হাতগুলো নিথর হয়ে পায়ের আলতার ওপর গিয়ে ঠেকল। চুলগুলো বর্ষার রোদে শুকাতে দেয়া ভেজা পাটের মতো পায়ের ওপর ঝুলে পড়ল। রাজা দেখল, আলতার লাল রং ফিকে হয়ে গেছে। বোকা রাজা ভারাক্রান্ত হৃদয়ে শুধু এটুকুই বলল, আহা রে, আমার আলতার আলতা পানিত ভাইস্যা গেল!
ওপারের পাড়ার প্রান্ত থেকে আলতার মায়ের বিলাপ বাতাসে ভাসতে লাগল।
 
সূত্র : আমার দেশ

Stumble
Delicious
Technorati
Twitter
Facebook

0 Comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত দিন

নির্বাচিত বিষয়গুলো দেখুন

কবিতা ছোটগল্প গল্প নিবন্ধ ছড়া টিপস রম্য গল্প প্রেমের কবিতা স্বাস্থ্য কথা কৌতুক ইসলামী সাহিত্য কম্পিউটার টিপস জানা অজানা লাইফ স্ট্যাইল স্বাধীনতা স্থির চিত্র ফিচার শিশুতোষ গল্প ইসলাম কবি পরিচিতি প্রবন্ধ ইতিহাস চিত্র বিচিত্র প্রকৃতি বিজ্ঞান রম্য রচনা লিরিক ঐতিহ্য পাখি মুক্তিযুদ্ধ শরৎ শিশু সাহিত্য বর্ষা আলোচনা বিজ্ঞান ও কম্পিউটার বীরশ্রেষ্ঠ লেখক পরিচিতি স্বাস্থ টিপস উপন্যাস গাছপালা জীবনী ভিন্ন খবর হারানো ঐতিহ্য হাসতে নাকি জানেনা কেহ ছেলেবেলা ফল ফুল বিরহের কবিতা অনু গল্প প্রযুক্তি বিউটি টিপস ভ্রমণ মজার গণিত সংস্কৃতি সাক্ষাৎকার ঔষধ ডাউনলোড প্যারডী ফেসবুক মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য রম্য কবিতা সাধারণ জ্ঞান সাহিত্যিক পরিচিতি সায়েন্স ফিকশান স্বাধীনতার কবিতা স্বাধীনতার গল্প কৃষি তথ্য চতুর্দশপদী প্রেমের গল্প মোবাইল ফোন রুপকথার গল্প কাব্য ক্যারিয়ার গবেষণা গৌরব জীবনের গল্প ফটোসপ সবুজ সভ্যতা
অতনু বর্মণ অদ্বৈত মারুত অধ্যাপক গোলাম আযম অনন্ত জামান অনিন্দ্য বড়ুয়া অনুপ সাহা অনুপম দেব কানুনজ্ঞ অমিয় চক্রবর্তী অয়ন খান অরুদ্ধ সকাল অর্ক আ.শ.ম. বাবর আলী আইউব সৈয়দ আচার্য্য জগদীশচন্দ্র বসু আজমান আন্দালিব আতাউর রহমান কাবুল আতাউস সামাদ আতোয়ার রহমান আত্মভোলা (ছন্দ্রনাম) আদনান মুকিত আনিসা ফজলে লিসি আনিসুর রহমান আনিসুল হক আনোয়ারুল হক আন্জুমান আরা রিমা আবদুল ওহাব আজাদ আবদুল কুদ্দুস রানা আবদুল গাফফার চৌধুরী আবদুল মান্নান সৈয়দ আবদুল মাবুদ চৌধুরী আবদুল হাই শিকদার আবদুল হামিদ আবদুস শহীদ নাসিম আবিদ আনোয়ার আবু মকসুদ আবু সাইদ কামাল আবু সাঈদ জুবেরী আবু সালেহ আবুল কাইয়ুম আহম্মেদ আবুল মোমেন আবুল হায়াত আবুল হাসান আবুল হোসেন আবুল হোসেন খান আবেদীন জনী আব্দুল কাইয়ুম আব্দুল মান্নান সৈয়দ আব্দুল হালিম মিয়া আমানত উল্লাহ সোহান আমিনুল ইসলাম চৌধুরী আমিনুল ইসলাম মামুন আরিফুন নেছা সুখী আরিফুর রহমান খাদেম আল মাহমুদ আলম তালুকদার আশীফ এন্তাজ রবি আসমা আব্বাসী আসাদ চৌধুরী আসাদ সায়েম আসিফ মহিউদ্দীন আসিফুল হুদা আহমদ - উজ - জামান আহমদ বাসির আহমেদ আরিফ আহমেদ খালিদ আহমেদ রাজু আহমেদ রিয়াজ আহসান হাবিব আহসান হাবীব আহাম্মেদ খালিদ ইকবাল আজিজ ইকবাল খন্দকার ইব্রাহিম নোমান ইব্রাহীম মণ্ডল ইমদাদুল হক মিলন ইয়াসির মারুফ ইলিয়াস হোসেন ইশতিয়াক উত্তম মিত্র উত্তম সেন উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী এ কে আজাদ এ টি এম শামসুজ্জামান এ.বি.এম. ইয়াকুব আলী সিদ্দিকী একরামুল হক শামীম একে আজাদ এনামুল হায়াত এনায়েত রসুল এম আহসাবন এম. মুহাম্মদ আব্দুল গাফফার এম. হারুন অর রশিদ এরশাদ মজুদার এরশাদ মজুমদার এস এম নাজমুল হক ইমন এস এম শহীদুল আলম এস. এম. মতিউল হাসান এসএম মেহেদী আকরাম ওমর আলী ওয়াসিফ -এ-খোদা ওয়াহিদ সুজন কবি গোলাম মোহাম্মদ কমিনী রায় কাজী আনিসুল হক কাজী আবুল কালাম সিদ্দীক কাজী নজরুল ইসলাম কাজী মোস্তাক গাউসুল হক শরীফ কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম কাপালিক কামরুল আলম সিদ্দিকী কামাল উদ্দিন রায়হান কায়কোবাদ (কাজেম আলী কোরেশী) কার্তিক ঘোষ কৃষ্ণকলি ইসলাম কে এম নাহিদ শাহরিয়ার কেজি মোস্তফা খন্দকার আলমগীর হোসেন খন্দকার মুহাম্মদ হামিদুল্লাহ্ খান মুহাম্মদ মইনুদ্দীন খালেদ রাহী গাজী গিয়াস উদ্দিন গিয়াস উদ্দিন রূপম গিরিশচন্দ সেন গোলাম কিবরিয়া পিনু গোলাম নবী পান্না গোলাম মোস্তফা গোলাম মোহাম্মদ গোলাম সরোয়ার চন্দন চৌধুরী চৌধুরী ফেরদৌস ছালেহা খানম জুবিলী জ. রহমান জয়নাল আবেদীন বিল্লাল জসিম মল্লিক জসীম উদ্দিন জহির উদ্দিন বাবর জহির রহমান জহির রায়হান জাওয়াদ তাজুয়ার মাহবুব জাকিয়া সুলতানা জাকির আবু জাফর জাকির আহমেদ খান জান্নাতুল করিম চৌধুরী জান্নাতুল ফেরদাউস সীমা জাফর আহমদ জাফর তালুকদার জায়ান্ট কজওয়ে জাহাঙ্গীর আলম জাহান জাহাঙ্গীর ফিরোজ জাহিদ হোসাইন জাহিদুল গণি চৌধুরী জিয়া রহমান জিল্লুর রহমান জীবনানন্দ দাশ জুবাইদা গুলশান আরা জুবায়ের হুসাইন জুলফিকার শাহাদাৎ জেড জাওহার ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া ড. কাজী দীন মুহম্মদ ড. ফজলুল হক তুহিন ড. ফজলুল হক সৈকত ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ ড. মুহা. বিলাল হুসাইন ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ড. রহমান হাবিব ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ডক্টর সন্দীপক মল্লিক ডা: সালাহ্উদ্দিন শরীফ ডা. দিদারুল আহসান তমিজ উদদীন লোদী তাজনীন মুন তানজিল রিমন তাপস রায় তামান্না শারমিন তারক চন্দ্র দাস তারাবাঈ তারেক রহমান তারেক হাসান তাসনুবা নূসরাত ন্যান্সী তাসলিমা আলম জেনী তাহমিনা মিলি তুষার কবির তৈমুর রেজা তৈয়ব খান তৌহিদুর রহমান দর্পণ কবীর দিলওয়ার হাসান দেলোয়ার হোসেন ধ্রুব এষ ধ্রুব নীল নঈম মাহমুদ নবাব আমিন নাইমুর রশিদ লিখন নাইয়াদ নাজমুন নাহার নাজমুল ইমন নাফিস ইফতেখার নাবিল নাসির আহমেদ নাসির উদ্দিন খান নাহার মনিকা নাহিদা ইয়াসমিন নুসরাত নিজাম কুতুবী নির্জন আহমেদ অরণ্য নির্মলেন্দু গুণ নিসরাত আক্তার সালমা নীল কাব্য নীলয় পাল নুরে জান্নাত নূর মোহাম্মদ শেখ নূর হোসনা নাইস নৌশিয়া নাজনীন পীরজাদা সৈয়দ শামীম শিরাজী পুলক হাসান পুষ্পকলি প্রাঞ্জল সেলিম প্রীতম সাহা সুদীপ ফকির আবদুল মালেক ফজল শাহাবুদ্দীন ফয়সাল বিন হাফিজ ফররুখ আহমদ ফাতিহা জামান অদ্রিকা ফারুক আহমেদ ফারুক নওয়াজ ফারুক হাসান ফাহিম আহমদ ফাহিম ইবনে সারওয়ার ফেরদৌসী মাহমুদ বাদশা মিন্টু বাবুল হোসেইন বিকাশ রায় বিন্দু এনায়েত বিপ্রদাশ বড়ুয়া বেগম মমতাজ জসীম উদ্দীন বেগম রোকেয়া বেলাল হোসাইন বোরহান উদ্দিন আহমদ ম. লিপ্স্কেরভ মঈনুল হোসেন মজিবুর রহমান মন্জু মতিউর রহমান মল্লিক মতিন বৈরাগী মধু মনসুর হেলাল মনিরা চৌধুরী মনিরুল হক ফিরোজ মরুভূমির জলদস্যু মর্জিনা আফসার রোজী মশিউর রহমান মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর মা আমার ভালোবাসা মাইকেল মধুসূদন দত্ত মাওলানা মুহাম্মাদ মাকসুদা আমীন মুনিয়া মাখরাজ খান মাগরিব বিন মোস্তফা মাজেদ মানসুর মুজাম্মিল মানিক দেবনাথ মামুন হোসাইন মায়ফুল জাহিন মারজান শাওয়াল রিজওয়ান মারুফ রায়হান মালিহা মালেক মাহমুদ মাসুদ আনোয়ার মাসুদ মাহমুদ মাসুদা সুলতানা রুমী মাসুম বিল্লাহ মাহফুজ উল্লাহ মাহফুজ খান মাহফুজুর রহমান আখন্দ মাহবুব আলম মাহবুব হাসান মাহবুব হাসানাত মাহবুবা চৌধুরী মাহবুবুল আলম কবীর মাহমুদা ডলি মাহমুদুল বাসার মাহমুদুল হাসান নিজামী মাহ্‌মুদুল হক ফয়েজ মিতা জাহান মু. নুরুল হাসান মুজিবুল হক কবীর মুন্সি আব্দুর রউফ মুফতি আবদুর রহমান মুরাদুল ইসলাম মুস্তাফিজ মামুন মুহম্মদ নূরুল হুদা মুহম্মদ শাহাদাত হোসেন মুহাম্মদ আনছারুল্লাহ হাসান মুহাম্মদ আবু নাসের মুহাম্মদ আমিনুল হক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল মুহাম্মদ মহিউদ্দিন মুহাম্মাদ হাবীবুল্লাহ মুহিউদ্দীন খান মেজবাহ উদ্দিন মেহনাজ বিনতে সিরাজ মেহেদি হাসান শিশির মো: জামাল উদ্দিন মো. আরিফুজ্জামান আরিফ মোঃ আহসান হাবিব মোঃ তাজুল ইসলাম সরকার মোঃ রাকিব হাসান মোঃ রাশেদুল কবির আজাদ মোঃ সাইফুদ্দিন মোমিন মেহেদী মোর্শেদা আক্তার মনি মোশাররফ মোশাররফ হোসেন খান মোশারেফ হোসেন পাটওয়ারী মোহসেনা জয়া মোহাম্মদ আল মাহী মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন মোহাম্মদ নূরুল হক মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ্ মোহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহ মোহাম্মদ সা'দাত আলী মোহাম্মদ সাদিক মোহাম্মদ হোসাইন মৌরী তানিয় যতীন্দ্র মোহন বাগচী রজনীকান্ত সেন রণক ইকরাম রফিক আজাদ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রহমান মাসুদ রহিম রায়হান রহিমা আখতার কল্পনা রাখাল রাজিব রাজিবুল আলম রাজীব রাজু আলীম রাজু ইসলাম রানা হোসেন রিয়াজ চৌধুরী রিয়াদ রুমা মরিয়ম রেজা উদ্দিন স্টালিন রেজা পারভেজ রেজাউল হাসু রেহমান সিদ্দিক রোকনুজ্জামান খান রোকেয়া খাতুন রুবী শওকত হোসেন শওকত হোসেন লিটু শওগাত আলী সাগর শফিক আলম মেহেদী শরীফ আতিক-উজ-জামান শরীফ আবদুল গোফরান শরীফ নাজমুল শাইখুল হাদিস আল্লামা আজীজুল হক শামছুল হক রাসেল শামসুজ্জামান খান শামসুর রহমান শামস্ শামীম হাসনাইন শারমিন পড়শি শাহ আব্দুল হান্নান শাহ আলম শাহ আলম বাদশা শাহ আহমদ রেজা শাহ নেওয়াজ চৌধুরী শাহ মুহাম্মদ মোশাহিদ শাহজাহান কিবরিয়া শাহজাহান মোহাম্মদ শাহনাজ পারভীন শাহাদাত হোসাইন সাদিক শাহাবুদ্দীন আহমদ শাহাবুদ্দীন নাগরী শাহিন শাহিন রিজভি শিউল মনজুর শিরিন সুলতানা শিশিরার্দ্র মামুন শুভ অংকুর শেখ হাবিবুর রহমান সজীব সজীব আহমেদ সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত সাইদা সারমিন রুমা সাইফ আলি সাইফ চৌধুরী সাইফ মাহাদী সাইফুল করীম সাইয়্যেদ আবুল আ'লা মওদূদী সাকিব হাসান সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ সানজানা রহমান সাবরিনা সিরাজী তিতির সামছুদ্দিন জেহাদ সামিয়া পপি সাযযাদ কাদির সারোয়ার সোহেন সালমা আক্তার চৌধুরী সালমা রহমান সালেহ আকরাম সালেহ আহমদ সালেহা সুলতানা সিকদার মনজিলুর রহমান সিমু নাসের সিরহানা হক সিরাজুল ইসলাম সিরাজুল ফরিদ সুকান্ত ভট্টাচার্য সুকুমার বড়ুয়া সুকুমার রায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সুফিয়া কামাল সুভাষ মুখোপাধ্যায় সুমন সোহরাব সুমনা হক সুমন্ত আসলাম সুমাইয়া সুহৃদ সরকার সৈয়দ আরিফুল ইসলাম সৈয়দ আলমগীর সৈয়দ আলী আহসান সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী সৈয়দ তানভীর আজম সৈয়দ মুজতবা আলী সৈয়দ সোহরাব হানিফ মাহমুদ হামিদুর রহমান হাসান আলীম হাসান ভূইয়া হাসান মাহবুব হাসান শরীফ হাসান শান্তনু হাসান হাফিজ হাসিনা মমতাজ হুমায়ূন আহমেদ হুমায়ূন কবীর ঢালী হেলাল মুহম্মদ আবু তাহের হেলাল হাফিজ হোসেন মাহমুদ হোসেন শওকত হ্নীলার বাঁধন

মাসের শীর্ষ পঠিত

 
রায়পুর তরুণ ও যুব ফোরাম

.::jonaaki online::. © ২০১১ || টেমপ্লেট তৈরি করেছেন জোনাকী টিম || ডিজাইন ও অনলাইন সম্পাদক জহির রহমান || জোনাকী সম্পর্কে পড়ুন || জোনাকীতে বেড়াতে আসার জন্য ধন্যবাদ