মু’মিনদের জন্য লায়লাতুল কদর একটি অতি মর্যাদাময় রজনী। শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মতদের জন্য আল্লাহ তায়ালা তাঁর অফুরন্ত নিয়াআমতের ভাণ্ডার থেকে খাতিমুন্নবী (সা.)-এর মিল্লাতকে অত্যাধিক সওয়াব অর্জনের সুযোগ দেয়ার লক্ষ্যেই মহান স্রষ্টা এ ব্যবস্থা করেছেন বলে মনে করা যেতে পারে। এর কারণ হিসেবে যেসব ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে সেগুলো অকাট্য দলিল হিসেবে গ্রহণে অনেকের আপত্তি থাকলেও এর যৌক্তিকতাকে একেবারে অস্বীকার করা যায় না। যেমন বলা হয়েছে পূর্বকালের আম্বিয়ায়ে কেরামের উম্মতগণ দীর্ঘ হায়াত লাভ করতেন। তারা তাদের দীর্ঘ জীবনব্যাপী সালাত, সাওম, জিহাদসহ অন্য ইবাদতে আল্লাহর নৈকট্য লাভের প্রচেষ্টা চালাতেন। মহানবী (সা.)-এর সাহাবীগণ এসব বর্ণনা শুনে নিজেদের স্বল্পকালীন আয়ুষ্কালে পূর্ববর্তীদের ন্যায় বেশি ইবাদত ও পুণ্য লাভে অপরাগতার বিষয় চিন্তা করে আফসোস করতেছিলেন তখনই মহান রাব্বুল আলামীন লাইলাতুল ক্বদরের মত মহা মর্যাদাময় রাতের সুসংবাদ আল্লাহর রাসূল (সা.) এর মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহকে জানিয়ে দেন। এ মর্মে পবিত্র কুরআনুল কারীমে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা ইরশাদ করেন, ইন্না আনযালনাহু ফি লাইলাতিল ক্বাদরি, অমা আদরাকা মা লাইলাতুল ক্বাদরি। লাইলাতুল ক্বাদরি খায়রুম মিন আলফি শাহরি। অর্থাৎ আমি ইহা (কুরআন) ক্বাদরের রাতে নাযিল করেছি। (হে রাসূল) তুমি কি জান ক্বদরের রজনী কি? ক্বদরের রজনী হাজার মাস থেকেও অধিক উত্তম। (সূরা আল ক্বাদর, আয়াত ১, ২, ৩)। এর রাতের মর্যাদা শুধু এ পর্যন্ত বর্ণনা করেই আল্লাহ তায়ালা শেষ করেননি। এ রজনীর কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আরো ঘেষণা করেনÑ তানাযযালুল মালায়িকাতু ওয়াররূহ ফিহা বিজনি রাব্বিহিম মিন কুল্লি আমরি। সালামুন হিয়া হাত্তা মাতুলায়্যিল ফাজর। অর্থাৎ ফিরিশতা ও রূহ এ (রজনীতে) তাদের রবের অণুমতিক্রমে সব আদেশ নিয়ে অবতীর্ণ হয়। সে রাত পুরোপুরি শান্তি ও নিরাপত্তার ফরজ উদয় হওয়া পর্যন্ত (সূরা আল ক্বাদর আয়াত ৪,৫)।
পবিত্র কুরআনুল কারীমে লাইলাতুল ক্বাদরের এ বর্ণনা খুবই তাৎপর্যমণ্ডিত। মহানবী (সা.)কে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন রিসালাতের শেষ নবী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে পৃথিবীতে আম্বিয়ায়েগণের আগমনের ধারাবাহিকতার সমাপ্তি টেনেছেন। এ মর্মে মহানবী (সা.)-এর হাদিস এভাবে বর্ণিত হয়েছে, ক্বয়ালা রাসূলুল্লাহ (সা.) লানাবিয়্যা বাআদী ওয়ালা উম্মাতা বাআদা উম্মাতি অর্থাৎ আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন আমার পর আর কোনো নবী নেই আর আমার উম্মতের পর আর কোনো উম্মত নেই। (বায়হাকি)। স্বভাবতই সর্বশেষ নেতা ও তাঁর অনুসারীদের জন্য পৃথক মর্যাদা তথা পুরস্কার ও অতুলনীয় হওয়াটাই স্বাভাবিক। বিশ্বনবী (সা.) সম্পর্কে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা ঘোষণা করেন, অমা আরসালনাকা ইল্লা কাফফাতাললিন্নাছি বাশীরাও ওয়া নাযীরাও অলাকিন্না আকছারান্নাছিলা ইয়ালামুন অর্থাৎ হে নবী, আমি সমগ্র মানব জাতির জন্য তোমাকে সুসংবাদ দানকারী ও ভীতি প্রদর্শনকারী হিসেবে পাঠিয়েছি, কিন্তু অনেক লোক জানে না (সূরা সাবা ২৮)। একমাত্র মহানবী (সা.)কে শেষ নবী হিসেবে গোটা মানব জাতির রাসূল রূপে প্রেরণ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে হযরত জাবির বিন আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে এভাবে বর্ণনা এসেছে কানান্নাবী (আ.) বাআছাইলা কাউমিহি খাসসাতাওয়া বুয়িসতু ইলান্নাছি আম্মাতা অর্থাৎ প্রথমে প্রত্যেক নবীকে বিশেষ জাতির কাছে তাদের জন্য পাঠানো হয়েছে আর আমি প্রেরিত হয়েছি সমগ্র মানবজাতির কাছে (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)। বিশ্ব নবী (সা.) রিসালাতের সিলমহর হিসেবে ক্বিয়ামত পর্যন্ত তাঁর প্রচলিত শরিআহ তথা নিয়ম পদ্ধতিই বলবত থাকবে এবং সমগ্র মানব জাতির জন্য মহানবী (সা.)র শরিআতের আইনই মেনে চলা অবধারিত। আল্লাহ রাসূর (সা.) এর শরিয়াতের বিধিবিধানের মূল উৎস পবিত্র কুরআনুল কারিম। যেটা মানুষের জন্য পরিপূর্ণ জীবন বিধান। এ কুরআনুল কারিম অপরিবর্তিনীয়। কুরআনুল কারিম সর্বশেষ আসমানি কিতাব হিসেবে এর মর্যাদা সর্বোচ্চে। দ্বীন ইসলামকে কুরআন নাযিলের মাধ্যমেই পূর্ণতা দান করা হয়েছে। এ মর্মে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা মহানবী (সা.)-এর উদ্দেশ্যে ঘোষণা করেন, আল ইয়াওমা আকমালতুলাকুম দ্বীনাকুম ওয়া আতমামতু আলাকুম নিমাতি ওয়া রাদিতুলাকুমুল ইসলামা দ্বীনান। অর্থাৎ আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে তোমাদের জন্য সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং আমার নিয়ামত তোমাদের প্রতি পূর্ণ করে দিলাম আর তোমাদের জন্য ইসলামকে তোমাদের দ্বীন হিসেবে কবুল করে নিলাম (সূরা মায়েদা, আয়াত ৩)।
মূল কথা হলো, দ্বীন ইসলাম ও মানব জাতির গাইড বুক তথা পথ প্রদর্শক। পবিত্র কুরআনুল কারিমের নাযিলের সূচনা হয় এই বরকতময় লাইলাতুল ক্বদরে। মহাগ্রন্থ আল কুরআনের অপরিসীম মর্যাদার কারণেই ক্বদরের রজনীর এ অফুরন্ত ফজিলত। এ মর্মে মহান রাব্বুল আলামীন ঘোষণা করেনÑ ইন্না আনযালনাহু ফি লাইলাতিম মুবারাকাতিন ইন্না কুন্না মুনজিবীন। অর্থাৎ আমি উহাকে এক বড় কল্যাণময় ও বরকতপূর্ণ রাতে অবতীর্ণ করেছি। কেননা আমি মানুষদেরকে সাবধান করবার ইচ্ছা করেছিলাম (সূরা দুখান, আয়াত ৩)। মূলত পবিত্র কুরআনুল কারিম নাযিলের এ রজনী বিশ্বাসীদের জন্য বিশাল প্রাপ্তির একটা মাধ্যম তৈরি করে দিয়েছেন মহান রাব্বুল আ’লামীন। লাইলাতুল ক্বদরের নে’আমতে পূর্ণ রজনী যে রমজান মাসেই রয়েছে তা জোর দিয়েই বলা যেতে পারে, কারণ পবিত্র কুরআনুল কারিম এ মাসেই নাজিল হয়। এ মর্মে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা ঘোষণা করেন শাহরু রামাদানাল্লাজী উনযিলা ফীহিল কুরআনু, হুদাল লিন্নাছি, অবাইয়েনাতি মিনাল হুদা ওয়াল ফুরক্বান। অর্থাৎ রমজান মাস, এ মাসেই কুরআন মাজিদ নাজিল হয়েছে, তা গোটা মানব জাতির জন্য জীবন যাপনের বিধান এবং তা এমন সুস্পষ্ট উপদেশ সমূহে পরিপূর্ণ যা সঠিক ও সত্যপথ প্রদর্শন করে এবং হক ও বাতিলের পার্থক্য পরিষ্কারভাবে তুলে ধরে (সূরা আল বাকারা, আয়াত ১৮৫)। পবিত্র কুরআনুল কারিমের এ ভাষণে সুস্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছে যে, কুরআন নাজিলের এ মাসেই লাইলাতুল ক্বদর রয়েছে। লাইলাতুল ক্বদর হাজার মাস থেকেও যে উত্তম তা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনই ঘোষণা করেছেন। মহানবী (সা.)-এর উম্মতের জন্য এতবড় নেআমত কেন দান করা হয়েছে তা পূর্বে কিছুটা আলোচনা করা হয়েছে। হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর উম্মতদেরকে মধ্যমপন্থী জাতি বানিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন এবং তারা সত্যের সাক্ষ্যদাতা হবেন আর আল্লাহর রাসূল (সা.) ও সত্যের পতাকাবাহী উম্মতদের জন্য সাক্ষ্যদানকারী। হবেন। এ মর্মে পবিত্র কুরআনুল কারিমে আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করেন, কাজালিকা জাআলনাকুম উম্মাতাউ ওসাতালিতাকুনু শূহাদাআ আলান্নাছি অইকুনার রাসূলু আলাইকুম শাহিদা অমা জাআলনাল ক্বিবলাতাল্লাতী কুনতা আলাইহা ইল্লালিনা’লামা মাই ইত্তাবিউর রাছূলা ... অর্থাৎ আর এভাবেই আমি তোমাদেরকে একটি মধ্যম পন্থা অনুসারী উম্মাৎ বানিয়েছি। যেন তোমরা দুনিয়ার লোকদের জন্য সাক্ষী হও আর রাসূল যেন সাক্ষ্য হয় তোমাদের ওপর (সূরা আল বাকারা, আয়াত ১৪৩)। পৃথিবীর সকল মানুষের ওপর মহানবী (সা.)-এর উম্মতদেরকে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা কর্তৃক সাক্ষ্য হিসেবে ঘোষণা দেয়া একটা শ্রেষ্ঠতম পুরস্কার ভিন্ন আর কি হতে পারে? এ মর্যাদার দাবিদার জাতিকে অবশ্যই গোটা মানবগোষ্ঠীকে সঠিক পথে আহ্বানের দায়িত্ব বহন করতে হবে। এ মর্মে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা ঘোষণা করেন কুনতুম খায়রা উম্মাতিন উখরিজাত লিন্নাছি তামুরুনা বিলমারুফি অতান হাওনা আনিল মুনকার অতুমিনুনা বিল্লাহি ... অর্থাৎ এখন পৃথিবীর সর্বোত্তম দল তোমরা, যাদেরকে মানুষের হেদায়াত ও সংস্কার বিধানের জন্য কর্মক্ষেত্রে উপস্থিত করা হয়েছে তোমরা ভালো কাজের আদেশ কর, অন্যায় ও পাপ কাজ থেকে লোকদের বিরত রাখ এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান রক্ষা করে চলো ... (সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১১০)। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার এ ঘোষণার দ্বারা এ কথা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়ে গেছে যে, বিশ্বনবী (সা.) এর উম্মতদের শ্রেষ্ঠত্বের মূল বিষয় হলো তাদেরকে সারা দুনিয়ার মানুষের জন্য দৃষ্টান্তমূলক আদর্শের নমুনা হতে হবে। সমগ্র মানব জাতির পথ প্রদর্শন ও নেতৃত্বদানের যোগ্যতা মুসলমানদেরকেই অর্জন করতে হবে। এ জন্য তাদেরকে কঠোর পরিশ্রমী ও নিরলসভাবে কাজ করার প্রশিক্ষণ গ্রহণ জরুরি। পবিত্র মাহে রমজানের সিয়াম সাধনা মুসলমানদেরকে তাকওয়া অর্জনের সাথে সাথে ভোগবিলাস তথা অলসতা বর্জনের শিক্ষাও দান করে থাকে। পবিত্র লাইলাতুল ক্বদরের শিক্ষা ও এরই পরিপূরক। বরকতপূর্ণ ক্বদরের রজনীর সওয়াব লাভ করতে হলেও নিরলস প্রচেষ্টা একাগ্র সাধনার মাধ্যমে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার কাছে নিজকে সমর্পণ করে দিয়ে তাঁর দয়া ও রহমতের ভিখারি হতে হবে। লাইলাতুল ক্বদরের ফজিলত সম্পর্কে মহানবী (সা.)-এর একটি হাদিস এভাবে বর্ণিত আছে, আন আবিহুরাইরাতা অনিন্নাবী (সা.) ক্য়ালা মানক্বানা লাইলাতাল ক্বাদরে ঈমানা উ অইহতে সাবান গুফিরা লাহু মাতাক্বাদ্দামা মিন জান্বিহী অমান সামা রামাদানা ঈমানাউ অইহতে সাবান গুফিরালাহু মাতাক্বাদ্দামা মিন জান্বিহী অর্থাৎ আবু হুরাইরা (রা.) নবী (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন। নবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি শবে ক্বদরে ঈমানসহ সওয়াবের আশায় সালাত আদায় করল তার অতীতের গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হয়, আর যে ব্যক্তি সওয়াবের আশায় ঈমান সহ রমজানের সিয়াম পালন করে তারও অতীতের গোনাহ মাফ করে দেয়া হয়। (সহিহ আল বুখারি, হাদিস ১৭৬৭)। লাইলাতুল ক্বদরে যে রকম অতি বরকতময় তেমনি এটাকে লাভ করাও শ্রমসাধ্য ব্যাপার। যে বিষয় অতি মূল্যবান বা মর্যাদাময় তা লাভ করাও কষ্টসাধ্য ব্যাপারও বটে। ক্বদরের এ পুণ্যময় রাতের তারিখ স্পষ্ট করে বলা হয়নি। এর উদ্দেশ্য একটাই যে, বান্দাহ মহান রাব্বুল আ’লামীনের সন্তুষ্টি লাভের আশায় তাঁর এ অবারিত নেআমতকে অর্জনের জন্য নিরলসভাবে ইবাদত করে যাবে। এর দ্বারা মুমিনগণ কষ্টসহিষ্ণু ও আল্লাহর দ্বীনের জন্য কাজের উদ্দেশ্যে কঠোর পরিশ্রমী হয়ে গড়ে উঠবে এটাই হলো এসব আনুষ্ঠানিক ইবাদতের লক্ষ্য। লাইলাতুল ক্বদরকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর রাসূল (সা.)কে জানিয়েও তার তারিখ ভুলিয়ে দিয়েছেন। এর দ্বারা আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা তাঁর একনিষ্ঠ তথা রিলস ইবাদতকারী বান্দাদেরকে পরীক্ষা করতে চান।
মাহে রমজানের শেষ দশকের ইতেকাফের উদ্দেশ্য লাইলাতুল ক্বদরের অফুরন্ত সওয়াব অর্জন করা। মহানবী (সা.) প্রাথমিক অবস্থায় সাহাবীয়ে কেরামসহ মধ্য রমজানের দশদিন দশরাত ইতেকাফ করতেন। মহানবী রাব্বুল আলামীন যখন তাকে অবহিত করলেন যে, লাইলাতুল ক্বদর রমজানুল মুবারকের শেষ দশকেই রয়েছে, তখন থেকে তিনি রমজানুল মুবারকের শেষ দশকে মসজিদে ইতেকাফ শুরু করেন। এ মর্মে একটি হাদিস এভাবে বর্ণিত আছেÑ আন সালামা বিন আব্দুর রহমান ক্বয়ালা সালতু আবা সাঈদিনিল খুদরী ক্বূলতুহাল সামীতা রাসূলুল্লাহ (সা.) ইয়াজকুরা লাইলাতাল ক্বাদরি ক্বয়ালা নাআম, ইতাকাফনা মাআ রাসূলুল্লাহ (সা.) আল আশরালআওসাতিমিন রামাদানা, ক্য়ালা ফাখাবাজনা সাবহাতা ইশরিনা ক্বয়ালা ফাখাতাবনা রাসূলুল্লাহ (সা.) সাবহাতা ইশরিনা ফাক্বয়ালা উরিতু লাইলাতাল ক্বাদরে অইন্নী নুসিতুহা ফালতা মিসুহাফিল আশরিল আওয়াখিরি ফিল বিতরি ... অর্থাৎ আবু সালামা ইবনে আব্দুর রহমান (রা.) বর্ণনা করেছেন, আমি আবু সাঈদ খুদরী (রা.)কে জিজ্ঞেস করলঅম, আপনি কি রাসূলুল্লাহ (সা.)কে লাইলাতুল ক্বদর সম্বন্ধে কিছু উল্লেখ করতে শুনেছেন? তিনি জবাব দিলেন হ্যাঁ, আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে রমজানের মধ্যের দশদিনে ইতেকাফে বসেছিলাম। আমরা বিশ তারিখের ভোরে বেরিয়ে আসলাম। রাসূলুল্লাহ (সা.) বিশ তারিখের ভোরেই আমাদের সামনে ভাষণ দান করলেন। তিনি ঘোষণা করলেন, আমাকে ক্বদরের রজনী দেখানো হয়েছে এবং আমাকে তা ভুলিয়েও দেয়া হয়েছে। তাই তোমরা তা শেষ দশদিনের বেজোড় রাত্রে তালাশ কর (সহিহ আল বুখারি, হাদিস ১৮৯৩)। বর্ণিত হাদিস থেকে লাইলাতুল ক্বদরের বিষয়টি পরিষ্কারভাবে জানা গেল যে, মাহে রমজানের শেষ দশ রজনীর যে কোনো বেজোড় রাত্রে লাইলাতুল ক্বদর আল্লাহর নৈকট্য অর্জন প্রত্যাশী মুমিনগণের সামনে এসে হাজির হয়। এ রজনীতে আল্লাহপ্রেমিক বান্দাগণ নিজেদের অপরাধসমূহের জন্য অনুতাপ ও আত্মবিশ্লেষণের মাধ্যমে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের প্রচেষ্টা করে থাকেন।
মহান রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে এই অতুলনীয় মর্যাদাময় রজনীর ফায়দা লাভের তাওফিক দান করুন। আমীন।
লেখক : প্রভাষক, দারুল ইসলাম একাডেমি, সিরাজগঞ্জ।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত দিন