এক সময় পৃথিবীতে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল মুসলমানদের। আর এ কারণে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন আর ঐতিহ্যে জড়িয়ে আছে মুসলিম সভ্যতা। আর তখনকার মুসলিম সভ্যতা আনুষঙ্গিক সবকিছুর সঙ্গে সঙ্গে স্থাপত্য আর শিল্পকলায়ও ছিল অনন্য। তবে অন্য প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনগুলোর তুলনায় মুসলিম স্থাপত্যের নিদর্শনগুলো বরাবরই আলাদা ও ভিন্ন মাত্রার। বিশেষত ভৌগলিক অবস্থান ও জাতিগত পার্থক্যের কারণে একেক জায়গার স্থাপত্যে একেক মাত্রা ছিল। তেমনি নানা জায়গার নির্মাণশৈলীর ভিন্নতাও ছিল অনেক। তবে ব্যতিক্রমী ও রাজকীয় ভঙ্গির পরশে নির্মিত এসব স্থাপত্য দেখলে সহজেই অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর স্থাপত্যশিল্প থেকে আলাদা করে চেনা যায়। এমনি এক নান্দনিক স্থাপত্যের নাম 'নাকশ-ই-জাহান'। মনজুড়ানো এই স্থাপত্যের অবস্থান ইরানের ইস্পাহান শহরে। আগে এটি 'শাহ স্কোয়ার' নামে সবার কাছে পরিচিত ছিল। এখন অবশ্য অনেকেই একে 'ইমাম স্কোয়ার' নামেও চলে।
চারকোণাকৃতি বিশাল চত্বরে নির্মিত এই স্থাপনা বিশ্ব ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। আর এই গুরুত্ব এবং 'নাকশ-ই-জাহান'-এর ঐতিহাসিক মূল্য বিচার করে ইউনেস্কো এটিকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তালিকাভুক্ত করেছে। তবে 'নাকশ-ই জাহান' কোনো একক ভবন বা স্থাপত্যকর্ম নয়। বরং এটি হচ্ছে একটি চারকোণাকৃতি ক্ষেত্র। আর সেই ক্ষেত্রের ভেতর রয়েছে দুটি মসজিদ, দুটি ধর্মীয় পাঠশালা এবং চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্যমণ্ডিত একটি বিশাল প্রাসাদ। ১৬০২ থেকে ১৬১৯ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝিতে নির্মিত হয়েছিল এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটি। নাকশ-ই-জাহানের নকশা তৈরি করেছিলেন তৎকালীন মুসলিম বিশ্বের বিখ্যাত স্থপতি মোহাম্মদ রেজা ইস্পাহানি। আর মসজিদটির নামকরণ করা হয় ইস্পাহানে আমন্ত্রিত একজন লেবাননি ইসলাম প্রচারকের নামে। কারণ শেখ লুৎফুল্লাহ নামক ওই ব্যক্তির ওপর তাৎকালীন পারস্যের বাদশাহ শাহ আব্বাস বিশেষভাবেই মনোযোগী ছিলেন। মসজিদটির ভেতরে দাঁড়িয়ে গম্বুজের কেন্দ্রে তাকালে বাইরে ঠিকরে পড়া আলো দেখে মনে হবে যেন এক ময়ূর ছড়িয়ে আছে তার বাহারি পেখম।
নাকশ-ই জাহানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত শাহ মসজিদ। এ মসজিদটি নির্মিত হয় ১৬১১ খ্রিস্টাব্দে। মূল মসজিদের উচ্চতা ২৭ মিটার এবং মিনারের উচ্চতা ৪২ মিটার। এর দরজা-জানালাগুলো কাঠনির্মিত হলেও সোনা-রুপার মতো মূল্যবান ধাতব পদার্থে ঢাকা। মসজিদের কিবলার দিকে আছে আরও দুটি বড় বড় নান্দনিক মিনার।
নাকশ-ই জাহানের আরেকটি উল্লেখযোগ্য এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হচ্ছে আলী গাফু প্রাসাদ। এটি ছিল মূলত রাজকীয় বাসভবন এবং বিনোদন কেন্দ্র। আলী অর্থ প্রশংসিত এবং গাফু অর্থ প্রবেশ।
পারস্যের তাৎকালীন বাদশাহ শাহ আব্বাস এই প্রাসাদেই সর্বপ্রথম নওরোজ উদযাপন করেন। ৪৮ মিটার উচ্চতার আলী গাফু প্রাসাদটি পাঁচতলাবিশিষ্ট একটি ভবন। সাধারণত যে কোনো বাড়ি বা প্রাসাদের অভ্যর্থনা কক্ষ নিচের তলায় হলেও এর অভ্যর্থনা কক্ষটি একবারে পাঁচ তলায়। সবচেয়ে বড় কক্ষটি দামি পেয়ালা, ফুলের টব এবং মূল্যবান আসবাবে সজ্জিত। প্রাসাদের সামনের অংশে আছে গ্যালারি, যেখানে বসে শাসকরা পোলো খেলা এবং ঘোড়দৌড় উপভোগ করতেন। অপূর্ব সুন্দর এ প্রাসাদটি নির্মাণ করা হয় ছয়টি ধাপে, যার জন্য সময় লেগেছিল দীর্ঘ প্রায় সাত বছর। নাকশ-ই জাহান চত্বরের মাঝখানে এখন রয়েছে একটি সুন্দর বাগান। এছাড়া প্রাসাদের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে বর্তমানে বিশেষে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন
চারকোণাকৃতি বিশাল চত্বরে নির্মিত এই স্থাপনা বিশ্ব ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। আর এই গুরুত্ব এবং 'নাকশ-ই-জাহান'-এর ঐতিহাসিক মূল্য বিচার করে ইউনেস্কো এটিকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তালিকাভুক্ত করেছে। তবে 'নাকশ-ই জাহান' কোনো একক ভবন বা স্থাপত্যকর্ম নয়। বরং এটি হচ্ছে একটি চারকোণাকৃতি ক্ষেত্র। আর সেই ক্ষেত্রের ভেতর রয়েছে দুটি মসজিদ, দুটি ধর্মীয় পাঠশালা এবং চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্যমণ্ডিত একটি বিশাল প্রাসাদ। ১৬০২ থেকে ১৬১৯ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝিতে নির্মিত হয়েছিল এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটি। নাকশ-ই-জাহানের নকশা তৈরি করেছিলেন তৎকালীন মুসলিম বিশ্বের বিখ্যাত স্থপতি মোহাম্মদ রেজা ইস্পাহানি। আর মসজিদটির নামকরণ করা হয় ইস্পাহানে আমন্ত্রিত একজন লেবাননি ইসলাম প্রচারকের নামে। কারণ শেখ লুৎফুল্লাহ নামক ওই ব্যক্তির ওপর তাৎকালীন পারস্যের বাদশাহ শাহ আব্বাস বিশেষভাবেই মনোযোগী ছিলেন। মসজিদটির ভেতরে দাঁড়িয়ে গম্বুজের কেন্দ্রে তাকালে বাইরে ঠিকরে পড়া আলো দেখে মনে হবে যেন এক ময়ূর ছড়িয়ে আছে তার বাহারি পেখম।
নাকশ-ই জাহানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত শাহ মসজিদ। এ মসজিদটি নির্মিত হয় ১৬১১ খ্রিস্টাব্দে। মূল মসজিদের উচ্চতা ২৭ মিটার এবং মিনারের উচ্চতা ৪২ মিটার। এর দরজা-জানালাগুলো কাঠনির্মিত হলেও সোনা-রুপার মতো মূল্যবান ধাতব পদার্থে ঢাকা। মসজিদের কিবলার দিকে আছে আরও দুটি বড় বড় নান্দনিক মিনার।
নাকশ-ই জাহানের আরেকটি উল্লেখযোগ্য এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হচ্ছে আলী গাফু প্রাসাদ। এটি ছিল মূলত রাজকীয় বাসভবন এবং বিনোদন কেন্দ্র। আলী অর্থ প্রশংসিত এবং গাফু অর্থ প্রবেশ।
পারস্যের তাৎকালীন বাদশাহ শাহ আব্বাস এই প্রাসাদেই সর্বপ্রথম নওরোজ উদযাপন করেন। ৪৮ মিটার উচ্চতার আলী গাফু প্রাসাদটি পাঁচতলাবিশিষ্ট একটি ভবন। সাধারণত যে কোনো বাড়ি বা প্রাসাদের অভ্যর্থনা কক্ষ নিচের তলায় হলেও এর অভ্যর্থনা কক্ষটি একবারে পাঁচ তলায়। সবচেয়ে বড় কক্ষটি দামি পেয়ালা, ফুলের টব এবং মূল্যবান আসবাবে সজ্জিত। প্রাসাদের সামনের অংশে আছে গ্যালারি, যেখানে বসে শাসকরা পোলো খেলা এবং ঘোড়দৌড় উপভোগ করতেন। অপূর্ব সুন্দর এ প্রাসাদটি নির্মাণ করা হয় ছয়টি ধাপে, যার জন্য সময় লেগেছিল দীর্ঘ প্রায় সাত বছর। নাকশ-ই জাহান চত্বরের মাঝখানে এখন রয়েছে একটি সুন্দর বাগান। এছাড়া প্রাসাদের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে বর্তমানে বিশেষে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত দিন