বিভিন্ন পর্বে বিষয়টির যেসব পয়েন্ট আলোচিত হবে:
১. আলোচ্য বিষয়টির গুরুত্ব
২. বর্তমান বিশ্ব মুসলমানদের মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য সম্বন্ধে অসতর্ক ধারণাসমূহ
৩. মানুষের জীবনের কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন বিভাগ
৪. মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য সম্বন্ধে বিবেক-বুদ্ধির তথ্যসমূহ
৫. মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য সম্বন্ধে আল-কুরআনের তথ্যসমূহ
৬. আল্লাহর দৃষ্টিতে ন্যায়-অন্যায় কাজগুলো কী কী তা জানার উপায়
৭. ন্যায়-অন্যায় কাজগুলোর দু’চারটা করলে চলবে না সবগুলো করতে হবে৮. মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য সম্বন্ধে হাদীসের তথ্যসমূহ
৯.মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য সম্বন্ধে ইসলামের চূড়ান্ত রায়
১০.উপাসনামূলক কাজগুলোর অধিক গুরুত্বের করণ
১১.মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য সাধনের জন্যে কুরআনের জ্ঞান অর্জনের গুরুত্ব
১২.মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের চলমান চিত্র
১৩.শেষ কথা
১: আলোচ্য বিষয়টির গুরুত্ব
সুধী পাঠক, প্রথমে চলুন পর্যালোচনা করা যাক আলোচ্য বিষয়টি মানুষের দুনিয়া ও আখিরাতের জীবনের জন্যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
দুনিয়ার দৃষ্টিকোণ হতে মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য জানার গুরুত্ব
তথ্য-১
কোন জিনিস ব্যবহার করে দুনিয়ায় কল্যাণ পেতে হলে ঐ জিনিসটি তার প্রস্তুতকারক যে উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন, সেই উদ্দেশ্য সাধনকে সামনে রেখে তা ব্যবহার করতে হয়। এটা একটা চির সত্য কথা।
একটা উদাহরণ দিলে ব্যাপারটা আরো পরিষ্কার হবে। ধরুন, একটা রেডিও। এই রেডিও থেকে কল্যাণ বা উপকার পেতে হলে সর্বপ্রথম জানতে হবে, রেডিওটা কী উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। তারপর সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে রেডিওটি ব্যবহার করতে হবে। রেডিও বানানো হয়েছে এই উদ্দেশ্যে যে, মানুষ রেডিওর মাধ্যমে বিভিন্ন রেডিও সেন্টারের অনুষ্ঠান শুনবে এবং তা থেকে বিভিন্নভাবে উপকৃত হবে। এখন মানুষ যদি রেডিওকে তার প্রস্তুতকারকের উদ্দেশ্য অনুযায়ী ব্যবহার না করে দেখার বস্তু হিসেবে ঘরের কোণে রেখে দেয়, তাহলে এর দ্বারা মানুষের কোন কল্যাণ হবে না।
আল্লাহ্ও অনুরূপভাবে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন একটা উদ্দেশ্য নিয়ে। মানুষ যদি তার শরীর, মন ও জীবন ব্যবহার করে দুনিয়ায় কল্যাণ পেতে চায়, তবে তাকে অবশ্যই সৃষ্টিকর্তার সেই উদ্দেশ্যকে প্রথমে জানতে ও বুঝতে হবে এবং তারপর তার জীবনের প্রতিটি কর্মকাণ্ডকে পরিচালনা করতে হবে সেই উদ্দেশ্য সাধনকে সামনে রেখে।
আর মানুষ যদি তার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালার সেই উদ্দেশ্যকে সামনে না রেখে তাদের শরীর, মন ও জীবনকে ব্যবহার করে তবে দুনিয়াতে তাদের অবশ্যই ভোগ করতে হবে নানা অশান্তি ও অকল্যাণ।
তথ্য-২
কোন বিষয়ের উদ্দেশ্য সঠিকভাবে জানা থাকলে কোন্ কাজটি ঐ বিষয়ের করণীয় কাজ নয় তা সহজে বুঝা যায়। যদি দেখা যায় একটি কাজ কোন বিষয়ের উদ্দেশ্য সাধনের পথে বিরাট বা স্পষ্ট প্রতিবন্ধকতা, তবে সহজেই বলা যাবে যে, ঐ কাজটি ঐ বিষয়ের করণীয় কাজ হতে পারে না। উদাহরণ স্বরূপ একটি কলমকে ধরা যায়। কলম তৈরির উদ্দেশ্য হল লেখা। যদি বলা হয় কলম ব্যবহারের একটি বিধান হল লিখার সময় নিবটি উপরের দিকে ধরে রাখা, তবে যার কলম তৈরির উদ্দেশ্যটা জানা আছে সে সহজেই বলতে পারবে যে এটি কলম ব্যবহারের বিধান হতে পারে না। কারণ নিব উপরের দিকে থাকলে কলম তৈরির উদ্দেশ্য তথা লিখা কাজটি সাধন হবে না বা তা কলম তৈরির উদ্দেশ্য সাধনের পথে একটি বিরাট প্রতিবন্ধকতা।
একইভাবে যার মানুষ সৃষ্টির সঠিক উদ্দেশ্যটি জানা আছে সে সহজেই বুঝতে পারবে কোন কাজটি মানুষের জীবনের করণীয় বিধান বা কাজ হবে না। সে যখন দেখবে একটি কাজ মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য সাধনের পথে বিরাট প্রতিবন্ধকতা তখন সে সহজেই বলে দিতে পারবে ঐ কাজটি মানুষের জীবনের কোন করণীয় কাজ নয় বরং নিষিদ্ধ কাজ।
আখিরাতের দৃষ্টিকোণ হতে মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য জানার গুরুত্ব
মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের সূরা ছোয়াদের ২৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে
وَمَا خَلَقْنَا السَّمَاءَ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا بَاطِلاً ذَلِكَ ظَنُّ الَّذِيْنَ كَفَرُوا فَوَيْلٌ لِلَّذِيْنَ كَفَرُوا مِنَ النَّارِ.
অর্থ: মহাকাশ ও পৃথিবী এবং এ উভয়ের মধ্যে থাকা কোন কিছুই আমি বিনা উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করিনি। উহা কাফের লোকদের ধারণা। আর ঐ ধরনের কাফের লোকদের জাহান্নামের আগুনে ধ্বংস হওয়া অনিবার্য।
ব্যাখ্যা: আল-কুরআনের এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আয়াতটির মাধ্যমে যে তথ্যগুলো মহান আল্লাহ্ স্পষ্টভাবে মানুষকে জানিয়ে দিয়েছেন তা হচ্ছে
মহাকাশ, পৃথিবী এবং এ উভয়ের মধ্যে থাকা সকল কিছু অর্থাৎ মানুষ, পশু-পাখি, গাছপালা, নদীনালা, কুরআন, নামাজ, রোজা, হজ্জ ইত্যাদির প্রত্যেকটি সৃষ্টি বা প্রণয়ন করার পেছনে তাঁর একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য আছে।
যারা মনে করে বা ধারণা করে, ঐ সকলকিছুর কোন একটিও মহান আল্লাহ্ বিনা উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন, তারা কাফের।
পরকালে ঐ কাফেরদের ঠিকানা হবে দোযখ।
মহান আল্লাহ্ এখানে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, মানুষ, পশু-পাখি, গাছপালা, নদীনালা, পাহাড়-পর্বত, খাবার-দাবার, কুরআন, নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি যে সকল জিনিস বা বিষয় মহাকাশ ও পৃথিবীর মধ্যে আছে, তার কোন কিছুকে তিনি বিনা উদ্দেশ্যে সৃষ্টি বা প্রণয়ন করেছেনএটা যারা মনে করবে বা ধারণা করবে, তারা কাফের এবং তাদের ঠিকানা হবে দোযখ। তাহলে নিশ্চয়তা দিয়েই বলা যায়, যারা ঐ ধারণাকে বিশ্বাসে রূপান্তরিত করে, ঐ সকল জিনিস বা বিষয়ের কোন একটিকেও এমনভাবে ব্যবহার বা আমল করবে, যাতে ঐ জিনিস বা বিষয়টি সৃষ্টি বা প্রণয়নের পেছনে থাকা আল্লাহর উদ্দেশ্যটি সাধন হয় না বা সে উদ্দেশ্য সাধনের ব্যাপারে তা কোন ভূমিকা রাখে না, তবে সে ব্যক্তি বা সে ব্যক্তিদেরও আল্লাহর নিকট কাফের হিসেবে গণ্য হতে হবে এবং তাদের ঠিকানা হবে আরো নিম্নস্তরের দোযখ।
বর্তমান বিশ্বের মুসলমান তথা মানুষের অবস্থা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, অধিকাংশেরই আল্লাহ্ কী উদ্দেশ্যে তাদের এবং কী উদ্দেশ্যে কুরআন, নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত, পশু-পাখি, খাবার-দাবার, নদীনালা ইত্যাদি সৃষ্টি বা প্রণয়ন করেছেন, সে ব্যাপারে সঠিক ধারণা নেই। তাই তারা তাদের জীবন ও অন্যান্য জিনিস বা বিষয় এমনভাবে ব্যবহার বা আমল করছেন যে, ঐ সকল জিনিস বা বিষয় সৃষ্টি বা প্রণয়ন করার পেছনে থাকা আল্লাহর উদ্দেশ্যগুলো সাধিত হচ্ছে না। তাই পরকালে বর্তমান বিশ্বের অধিকাংশ মুসলমানের অবস্থা কি হবে, তা ভেবে চিন্তাশীল ও দরদী সকলেরই ঘুম হারাম হয়ে যাওয়ার কথা।
তাই আমার এ প্রচেষ্টার উদ্দেশ্য হচ্ছে কুরআন, হাদীস ও বিবেক-বুদ্ধির তথ্যের মাধ্যমে মহান আল্লাহ মানুষকে কী উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন তা পর্যালোচনা করা এবং সে পর্যালোচনার ফলাফল মানুষকে জানানো। যাতে তারা সৃষ্টির সেই উদ্দেশ্য সাধনকে সামনে রেখে তাদের জীবনকে পরিচালনা করে দুনিয়ায় শান্তি পায় এবং আখিরাতে কামিয়াব হয়।
(কিউআরএফ, সিরিজ-১, পর্ব-১)
১. আলোচ্য বিষয়টির গুরুত্ব
২. বর্তমান বিশ্ব মুসলমানদের মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য সম্বন্ধে অসতর্ক ধারণাসমূহ
৩. মানুষের জীবনের কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন বিভাগ
৪. মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য সম্বন্ধে বিবেক-বুদ্ধির তথ্যসমূহ
৫. মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য সম্বন্ধে আল-কুরআনের তথ্যসমূহ
৬. আল্লাহর দৃষ্টিতে ন্যায়-অন্যায় কাজগুলো কী কী তা জানার উপায়
৭. ন্যায়-অন্যায় কাজগুলোর দু’চারটা করলে চলবে না সবগুলো করতে হবে৮. মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য সম্বন্ধে হাদীসের তথ্যসমূহ
৯.মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য সম্বন্ধে ইসলামের চূড়ান্ত রায়
১০.উপাসনামূলক কাজগুলোর অধিক গুরুত্বের করণ
১১.মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য সাধনের জন্যে কুরআনের জ্ঞান অর্জনের গুরুত্ব
১২.মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের চলমান চিত্র
১৩.শেষ কথা
১: আলোচ্য বিষয়টির গুরুত্ব
সুধী পাঠক, প্রথমে চলুন পর্যালোচনা করা যাক আলোচ্য বিষয়টি মানুষের দুনিয়া ও আখিরাতের জীবনের জন্যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
দুনিয়ার দৃষ্টিকোণ হতে মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য জানার গুরুত্ব
তথ্য-১
কোন জিনিস ব্যবহার করে দুনিয়ায় কল্যাণ পেতে হলে ঐ জিনিসটি তার প্রস্তুতকারক যে উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন, সেই উদ্দেশ্য সাধনকে সামনে রেখে তা ব্যবহার করতে হয়। এটা একটা চির সত্য কথা।
একটা উদাহরণ দিলে ব্যাপারটা আরো পরিষ্কার হবে। ধরুন, একটা রেডিও। এই রেডিও থেকে কল্যাণ বা উপকার পেতে হলে সর্বপ্রথম জানতে হবে, রেডিওটা কী উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। তারপর সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে রেডিওটি ব্যবহার করতে হবে। রেডিও বানানো হয়েছে এই উদ্দেশ্যে যে, মানুষ রেডিওর মাধ্যমে বিভিন্ন রেডিও সেন্টারের অনুষ্ঠান শুনবে এবং তা থেকে বিভিন্নভাবে উপকৃত হবে। এখন মানুষ যদি রেডিওকে তার প্রস্তুতকারকের উদ্দেশ্য অনুযায়ী ব্যবহার না করে দেখার বস্তু হিসেবে ঘরের কোণে রেখে দেয়, তাহলে এর দ্বারা মানুষের কোন কল্যাণ হবে না।
আল্লাহ্ও অনুরূপভাবে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন একটা উদ্দেশ্য নিয়ে। মানুষ যদি তার শরীর, মন ও জীবন ব্যবহার করে দুনিয়ায় কল্যাণ পেতে চায়, তবে তাকে অবশ্যই সৃষ্টিকর্তার সেই উদ্দেশ্যকে প্রথমে জানতে ও বুঝতে হবে এবং তারপর তার জীবনের প্রতিটি কর্মকাণ্ডকে পরিচালনা করতে হবে সেই উদ্দেশ্য সাধনকে সামনে রেখে।
আর মানুষ যদি তার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালার সেই উদ্দেশ্যকে সামনে না রেখে তাদের শরীর, মন ও জীবনকে ব্যবহার করে তবে দুনিয়াতে তাদের অবশ্যই ভোগ করতে হবে নানা অশান্তি ও অকল্যাণ।
তথ্য-২
কোন বিষয়ের উদ্দেশ্য সঠিকভাবে জানা থাকলে কোন্ কাজটি ঐ বিষয়ের করণীয় কাজ নয় তা সহজে বুঝা যায়। যদি দেখা যায় একটি কাজ কোন বিষয়ের উদ্দেশ্য সাধনের পথে বিরাট বা স্পষ্ট প্রতিবন্ধকতা, তবে সহজেই বলা যাবে যে, ঐ কাজটি ঐ বিষয়ের করণীয় কাজ হতে পারে না। উদাহরণ স্বরূপ একটি কলমকে ধরা যায়। কলম তৈরির উদ্দেশ্য হল লেখা। যদি বলা হয় কলম ব্যবহারের একটি বিধান হল লিখার সময় নিবটি উপরের দিকে ধরে রাখা, তবে যার কলম তৈরির উদ্দেশ্যটা জানা আছে সে সহজেই বলতে পারবে যে এটি কলম ব্যবহারের বিধান হতে পারে না। কারণ নিব উপরের দিকে থাকলে কলম তৈরির উদ্দেশ্য তথা লিখা কাজটি সাধন হবে না বা তা কলম তৈরির উদ্দেশ্য সাধনের পথে একটি বিরাট প্রতিবন্ধকতা।
একইভাবে যার মানুষ সৃষ্টির সঠিক উদ্দেশ্যটি জানা আছে সে সহজেই বুঝতে পারবে কোন কাজটি মানুষের জীবনের করণীয় বিধান বা কাজ হবে না। সে যখন দেখবে একটি কাজ মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য সাধনের পথে বিরাট প্রতিবন্ধকতা তখন সে সহজেই বলে দিতে পারবে ঐ কাজটি মানুষের জীবনের কোন করণীয় কাজ নয় বরং নিষিদ্ধ কাজ।
আখিরাতের দৃষ্টিকোণ হতে মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য জানার গুরুত্ব
মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের সূরা ছোয়াদের ২৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে
وَمَا خَلَقْنَا السَّمَاءَ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا بَاطِلاً ذَلِكَ ظَنُّ الَّذِيْنَ كَفَرُوا فَوَيْلٌ لِلَّذِيْنَ كَفَرُوا مِنَ النَّارِ.
অর্থ: মহাকাশ ও পৃথিবী এবং এ উভয়ের মধ্যে থাকা কোন কিছুই আমি বিনা উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করিনি। উহা কাফের লোকদের ধারণা। আর ঐ ধরনের কাফের লোকদের জাহান্নামের আগুনে ধ্বংস হওয়া অনিবার্য।
ব্যাখ্যা: আল-কুরআনের এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আয়াতটির মাধ্যমে যে তথ্যগুলো মহান আল্লাহ্ স্পষ্টভাবে মানুষকে জানিয়ে দিয়েছেন তা হচ্ছে
মহাকাশ, পৃথিবী এবং এ উভয়ের মধ্যে থাকা সকল কিছু অর্থাৎ মানুষ, পশু-পাখি, গাছপালা, নদীনালা, কুরআন, নামাজ, রোজা, হজ্জ ইত্যাদির প্রত্যেকটি সৃষ্টি বা প্রণয়ন করার পেছনে তাঁর একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য আছে।
যারা মনে করে বা ধারণা করে, ঐ সকলকিছুর কোন একটিও মহান আল্লাহ্ বিনা উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন, তারা কাফের।
পরকালে ঐ কাফেরদের ঠিকানা হবে দোযখ।
মহান আল্লাহ্ এখানে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, মানুষ, পশু-পাখি, গাছপালা, নদীনালা, পাহাড়-পর্বত, খাবার-দাবার, কুরআন, নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি যে সকল জিনিস বা বিষয় মহাকাশ ও পৃথিবীর মধ্যে আছে, তার কোন কিছুকে তিনি বিনা উদ্দেশ্যে সৃষ্টি বা প্রণয়ন করেছেনএটা যারা মনে করবে বা ধারণা করবে, তারা কাফের এবং তাদের ঠিকানা হবে দোযখ। তাহলে নিশ্চয়তা দিয়েই বলা যায়, যারা ঐ ধারণাকে বিশ্বাসে রূপান্তরিত করে, ঐ সকল জিনিস বা বিষয়ের কোন একটিকেও এমনভাবে ব্যবহার বা আমল করবে, যাতে ঐ জিনিস বা বিষয়টি সৃষ্টি বা প্রণয়নের পেছনে থাকা আল্লাহর উদ্দেশ্যটি সাধন হয় না বা সে উদ্দেশ্য সাধনের ব্যাপারে তা কোন ভূমিকা রাখে না, তবে সে ব্যক্তি বা সে ব্যক্তিদেরও আল্লাহর নিকট কাফের হিসেবে গণ্য হতে হবে এবং তাদের ঠিকানা হবে আরো নিম্নস্তরের দোযখ।
বর্তমান বিশ্বের মুসলমান তথা মানুষের অবস্থা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, অধিকাংশেরই আল্লাহ্ কী উদ্দেশ্যে তাদের এবং কী উদ্দেশ্যে কুরআন, নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত, পশু-পাখি, খাবার-দাবার, নদীনালা ইত্যাদি সৃষ্টি বা প্রণয়ন করেছেন, সে ব্যাপারে সঠিক ধারণা নেই। তাই তারা তাদের জীবন ও অন্যান্য জিনিস বা বিষয় এমনভাবে ব্যবহার বা আমল করছেন যে, ঐ সকল জিনিস বা বিষয় সৃষ্টি বা প্রণয়ন করার পেছনে থাকা আল্লাহর উদ্দেশ্যগুলো সাধিত হচ্ছে না। তাই পরকালে বর্তমান বিশ্বের অধিকাংশ মুসলমানের অবস্থা কি হবে, তা ভেবে চিন্তাশীল ও দরদী সকলেরই ঘুম হারাম হয়ে যাওয়ার কথা।
তাই আমার এ প্রচেষ্টার উদ্দেশ্য হচ্ছে কুরআন, হাদীস ও বিবেক-বুদ্ধির তথ্যের মাধ্যমে মহান আল্লাহ মানুষকে কী উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন তা পর্যালোচনা করা এবং সে পর্যালোচনার ফলাফল মানুষকে জানানো। যাতে তারা সৃষ্টির সেই উদ্দেশ্য সাধনকে সামনে রেখে তাদের জীবনকে পরিচালনা করে দুনিয়ায় শান্তি পায় এবং আখিরাতে কামিয়াব হয়।
(কিউআরএফ, সিরিজ-১, পর্ব-১)
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত দিন