স্কুলে তো তোমাদের অনেক বন্ধু। বাবা-মার মতো বাসায়ও আছে কাছের কিছু বন্ধু। এদের সঙ্গে তোমরা প্রায় নিয়মিতই মেলামেশা কর। তারপরও তোমার প্রিয় বন্ধুদের জন্য ৩৬৫ দিনের মধ্যে আছে আলাদা একটি দিন। আলাদা এই দিনটি হচ্ছে ‘বন্ধু দিবস’। যে দিনে বন্ধুদের সঙ্গে তোমরা মিশে যেতে পার আপন মনে।
প্রিয় বন্ধুকে নিয়ে ঘুরতে পার সুন্দর সব জায়গায়। খেতে পার মজার মজার খাবার। আসছে রোববার অর্থাত্ ৫ আগস্ট হচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক বন্ধু দিবস’। তাই দিনটিকে তোমরা রাঙিয়ে নিতে পার মনের মতো করে। কিন্তু যে দিবসে তোমরা এত মজা করবে, সে দিবসটি কীভাবে এলো, তা কি জান?
বন্ধু ও বন্ধুত্বের প্রান্তর এত বেশি প্রসারিত যে, সেখানে চষে বেড়ানো যায় আজীবন। বন্ধুত্ব মানে প্রশান্তির অবিরাম ছায়া। সেখানে বন্ধু আছে, সেখানে দুজনে মিলে তৃতীয় একটা পৃথিবী গড়ার স্বপ্ন থাকে। মানুষে মানুষে যেমন বন্ধুত্ব হতে পারে, ঠিক তেমনি সৃষ্টি জগতের অন্যান্য প্রাণীর সঙ্গেও মানুষের বন্ধুত্ব হতে পারে।
বন্ধুত্ব যুগে যুগে : সৃষ্টির আদি যুগ থেকেই বন্ধুত্ব রয়েছে। পৃথিবীর প্রথম মানব-মানবীর মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল। প্রাচীন ব্যাবিলন সভ্যতায় বন্ধুত্বের যে পরিসর ছিল, তার পরিচয় পাওয়া যায় ব্যাবিলনীয়দের কাব্যগ্রন্থ ‘দি এপিক অব গিলগামেশে’র মাধ্যমে। বন্ধুত্বের ইতিহাসে প্রথম দিকের সাহিত্যকর্ম মনে করা হয় এটিকে। গিলগামেশ আর এনকিডোর মধ্যে চমত্কার বন্ধুত্ব ছিল। বন্ধুত্বের গ্রিক রোমান মিথের নির্ভরযোগ্য উদাহরণ হলো অরেস্টেস এবং পাইলেডস।
বন্ধু দিবস উদযাপন রীতি : সভ্যতার শুরু থেকেই বন্ধু এবং বন্ধুত্বের মূল্য রয়েছে। যে সমাজে মানুষ তার বন্ধুদের প্রতি এত আন্তরিক সেই উপলব্ধি থেকেই কেউ কেউ বন্ধুত্বের জন্য আলাদা একটা দিবস রাখার চিন্তা-ভাবনা শুরু করে। বর্তমান সময়ে আমরা যেভাবে বন্ধুত্ব দিবস পালিত হতে দেখছি, তার শুরু আমেরিকায়। ১৯৩৫ সালে আমেরিকার কংগ্রেস আগস্ট মাসের প্রথম রোববারকে জাতীয় বন্ধুত্ব দিবস ঘোষণা করে। তারপর প্রতি বছরই আমেরিকায় বন্ধুত্ব দিবস পালিত হতে থাকে। এ মহত্ উদ্যোগটি একসময় আমেরিকার জনপ্রিয় উত্সব হয়ে ওঠে। তখন বেশকিছু দেশ বন্ধুত্ব দিবসের সংস্কৃতিকে গ্রহণ করে নেয়। এভাবেই বন্ধুত্ব দিবস পালনের আয়তন বাড়তে থাকে। বর্তমানে সারাবিশ্বেই আগ্রহ নিয়ে বন্ধুত্ব দিবস পালিত হচ্ছে। ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘ বিশ্বময় বন্ধুত্বের আলাদা অবস্থানে নিজেদের নিয়ে যায়। সে বছরটিতে জাতিসংঘ উইনিকে বন্ধুত্বের বিশ্বদূত হিসেবে নির্বাচিত করে। এতে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বন্ধুত্বের ধারণাটি আরও বেশি প্রসারিত হয়েছে।
সাহিত্যে বন্ধুত্ব : পৃথিবীর সব ভাষার সাহিত্যে বন্ধুত্বের প্রসঙ্গ এসেছে। অনেক জনপ্রিয় সাহিত্যিক একে অপরের বন্ধু ছিলেন। এছাড়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের মধ্যেও ছিল চমত্কার বন্ধুত্ব। আমাদের সাহিত্যের প্রেক্ষাপটের দিকে তাকালে কাজী নজরুল ইসলাম এবং মোতাহার হোসেনের বন্ধুত্বের বিষয়টি চলে আসবে। ইংরেজ কবি কোলরিজ এবং উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ একে অপরের খুবই ভালো বন্ধু ছিলেন। আবার টিএস এলিয়ট এবং এজরা পাউন্ড পরস্পরের বন্ধু ছিলেন। আমাদের দেশে এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে—যেখানে কবি-সাহিত্যিকরা একে অপরের ভালো বন্ধু।
বাংলাদেশে বন্ধু দিবস উদযাপন : আমাদের দেশে বন্ধু দিবসে সাধারণত ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ড, কার্ড আর ফুল দিয়ে বন্ধুকে বরণ করা হয়। এছাড়া অনেকেই কেক কেটেও বন্ধু দিবস উদযাপন করে। ফুলের মধ্যে হলুদ গোলাপ বন্ধুত্বের তাত্পর্য বহন করে। এখন যেহেতু রমজান মাস চলছে, তাই অনেকে ইফতার পার্টি দিয়েও বন্ধু দিবস পালন করবে।
বন্ধুত্ব বলতে অনেকেই পরিবারের বাইরের কারও সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ককে বোঝায়। কিন্তু পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও যে আন্তরিক বন্ধুত্ব হতে পারে, এটা অনেকে ধারণাতেই রাখেন না। বাবা-মা, ভাই-বোন কিংবা পরিবারের অন্যান্য সদস্য এক অপরের ভালো বন্ধু হতে পারে। মানুষের বয়স বাড়ে, কিন্তু বন্ধুত্বের বয়স বাড়ে না। তবে ভালো বন্ধু পাওয়াটা অনেক সময়ই ভাগ্যের ব্যাপার।
‘হাত বাড়ালেই বন্ধু পাওয়া যায় না/বাড়ালেই হাত বন্ধু সবাই হয় না’ গানটির কথাগুলো সত্যিই মনে হয়। বন্ধুত্বের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন মানসিকতা; বয়সের নির্দিষ্ট কোনো বাধা নেই। মানসিকতায় মিল থাকলে বন্ধুত্ব হয় সহজেই। বন্ধু সহযোগী হিসেবে পাশে দাঁড়াবে, হাত বাড়াবে, বন্ধু প্রয়োজনটাই হবে প্রধান বিষয়। থাকতে হবে আত্মত্যাগ বা নিজেকে উত্সর্গ করার মানসিকতা। নইলে বন্ধুত্বের সম্পর্ককে পবিত্র করে তোলা যাবে না।
প্রিয় বন্ধুকে নিয়ে ঘুরতে পার সুন্দর সব জায়গায়। খেতে পার মজার মজার খাবার। আসছে রোববার অর্থাত্ ৫ আগস্ট হচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক বন্ধু দিবস’। তাই দিনটিকে তোমরা রাঙিয়ে নিতে পার মনের মতো করে। কিন্তু যে দিবসে তোমরা এত মজা করবে, সে দিবসটি কীভাবে এলো, তা কি জান?
বন্ধু ও বন্ধুত্বের প্রান্তর এত বেশি প্রসারিত যে, সেখানে চষে বেড়ানো যায় আজীবন। বন্ধুত্ব মানে প্রশান্তির অবিরাম ছায়া। সেখানে বন্ধু আছে, সেখানে দুজনে মিলে তৃতীয় একটা পৃথিবী গড়ার স্বপ্ন থাকে। মানুষে মানুষে যেমন বন্ধুত্ব হতে পারে, ঠিক তেমনি সৃষ্টি জগতের অন্যান্য প্রাণীর সঙ্গেও মানুষের বন্ধুত্ব হতে পারে।
বন্ধুত্ব যুগে যুগে : সৃষ্টির আদি যুগ থেকেই বন্ধুত্ব রয়েছে। পৃথিবীর প্রথম মানব-মানবীর মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল। প্রাচীন ব্যাবিলন সভ্যতায় বন্ধুত্বের যে পরিসর ছিল, তার পরিচয় পাওয়া যায় ব্যাবিলনীয়দের কাব্যগ্রন্থ ‘দি এপিক অব গিলগামেশে’র মাধ্যমে। বন্ধুত্বের ইতিহাসে প্রথম দিকের সাহিত্যকর্ম মনে করা হয় এটিকে। গিলগামেশ আর এনকিডোর মধ্যে চমত্কার বন্ধুত্ব ছিল। বন্ধুত্বের গ্রিক রোমান মিথের নির্ভরযোগ্য উদাহরণ হলো অরেস্টেস এবং পাইলেডস।
বন্ধু দিবস উদযাপন রীতি : সভ্যতার শুরু থেকেই বন্ধু এবং বন্ধুত্বের মূল্য রয়েছে। যে সমাজে মানুষ তার বন্ধুদের প্রতি এত আন্তরিক সেই উপলব্ধি থেকেই কেউ কেউ বন্ধুত্বের জন্য আলাদা একটা দিবস রাখার চিন্তা-ভাবনা শুরু করে। বর্তমান সময়ে আমরা যেভাবে বন্ধুত্ব দিবস পালিত হতে দেখছি, তার শুরু আমেরিকায়। ১৯৩৫ সালে আমেরিকার কংগ্রেস আগস্ট মাসের প্রথম রোববারকে জাতীয় বন্ধুত্ব দিবস ঘোষণা করে। তারপর প্রতি বছরই আমেরিকায় বন্ধুত্ব দিবস পালিত হতে থাকে। এ মহত্ উদ্যোগটি একসময় আমেরিকার জনপ্রিয় উত্সব হয়ে ওঠে। তখন বেশকিছু দেশ বন্ধুত্ব দিবসের সংস্কৃতিকে গ্রহণ করে নেয়। এভাবেই বন্ধুত্ব দিবস পালনের আয়তন বাড়তে থাকে। বর্তমানে সারাবিশ্বেই আগ্রহ নিয়ে বন্ধুত্ব দিবস পালিত হচ্ছে। ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘ বিশ্বময় বন্ধুত্বের আলাদা অবস্থানে নিজেদের নিয়ে যায়। সে বছরটিতে জাতিসংঘ উইনিকে বন্ধুত্বের বিশ্বদূত হিসেবে নির্বাচিত করে। এতে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বন্ধুত্বের ধারণাটি আরও বেশি প্রসারিত হয়েছে।
সাহিত্যে বন্ধুত্ব : পৃথিবীর সব ভাষার সাহিত্যে বন্ধুত্বের প্রসঙ্গ এসেছে। অনেক জনপ্রিয় সাহিত্যিক একে অপরের বন্ধু ছিলেন। এছাড়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের মধ্যেও ছিল চমত্কার বন্ধুত্ব। আমাদের সাহিত্যের প্রেক্ষাপটের দিকে তাকালে কাজী নজরুল ইসলাম এবং মোতাহার হোসেনের বন্ধুত্বের বিষয়টি চলে আসবে। ইংরেজ কবি কোলরিজ এবং উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ একে অপরের খুবই ভালো বন্ধু ছিলেন। আবার টিএস এলিয়ট এবং এজরা পাউন্ড পরস্পরের বন্ধু ছিলেন। আমাদের দেশে এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে—যেখানে কবি-সাহিত্যিকরা একে অপরের ভালো বন্ধু।
বাংলাদেশে বন্ধু দিবস উদযাপন : আমাদের দেশে বন্ধু দিবসে সাধারণত ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ড, কার্ড আর ফুল দিয়ে বন্ধুকে বরণ করা হয়। এছাড়া অনেকেই কেক কেটেও বন্ধু দিবস উদযাপন করে। ফুলের মধ্যে হলুদ গোলাপ বন্ধুত্বের তাত্পর্য বহন করে। এখন যেহেতু রমজান মাস চলছে, তাই অনেকে ইফতার পার্টি দিয়েও বন্ধু দিবস পালন করবে।
বন্ধুত্ব বলতে অনেকেই পরিবারের বাইরের কারও সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ককে বোঝায়। কিন্তু পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও যে আন্তরিক বন্ধুত্ব হতে পারে, এটা অনেকে ধারণাতেই রাখেন না। বাবা-মা, ভাই-বোন কিংবা পরিবারের অন্যান্য সদস্য এক অপরের ভালো বন্ধু হতে পারে। মানুষের বয়স বাড়ে, কিন্তু বন্ধুত্বের বয়স বাড়ে না। তবে ভালো বন্ধু পাওয়াটা অনেক সময়ই ভাগ্যের ব্যাপার।
‘হাত বাড়ালেই বন্ধু পাওয়া যায় না/বাড়ালেই হাত বন্ধু সবাই হয় না’ গানটির কথাগুলো সত্যিই মনে হয়। বন্ধুত্বের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন মানসিকতা; বয়সের নির্দিষ্ট কোনো বাধা নেই। মানসিকতায় মিল থাকলে বন্ধুত্ব হয় সহজেই। বন্ধু সহযোগী হিসেবে পাশে দাঁড়াবে, হাত বাড়াবে, বন্ধু প্রয়োজনটাই হবে প্রধান বিষয়। থাকতে হবে আত্মত্যাগ বা নিজেকে উত্সর্গ করার মানসিকতা। নইলে বন্ধুত্বের সম্পর্ককে পবিত্র করে তোলা যাবে না।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত দিন