প্রিয় পাঠক লক্ষ্য করুন

জোনাকী অনলাইন লাইব্রেরীতে আপনাকে স্বাগতম | জোনাকী যদি আপনার ভালো লাগে তবে আপনার বন্ধুদের সাথে লিংকটি শেয়ার করার অনুরোধ জানাচ্ছি | এছাড়াও যারা ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করতে আগ্রহী তারা jaherrahman@gmail.com এ মেইল করার অনুরোধ করা হচ্ছে | আপনার অংশগ্রহণে সমৃদ্ধ হোক আপনার প্রিয় অনলাইন লাইব্রেরী। আমাদের সকল লেখক, পাঠক- শুভানুধ্যায়ীদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা- অভিনন্দন।

রজনীকান্ত সেন


প্রখ্যাত কবি, গীতিকার এবং সুরকার হিসেবে বাঙালি শিক্ষা-সংস্কৃতিতে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের সমসাময়িক এই গীতিকারের গানগুলো খুবই জনপ্রিয়। ঈশ্বরের আরাধনায় ভক্তিমূলক ও দেশের প্রতি গভীর মমত্ববোধ বা স্বদেশ প্রেমই তাঁর গানের প্রধান বৈশিষ্ট্য ও উপজীব্য বিষয়।

শৈশবকাল
পিতা গুরুপ্রসাদ সেন ও মাতা মনোমোহিনী দেবীর ৩য় সন্তান ছিলেন রজনীকান্ত। গুরুপ্রসাদ চারশত বৈষ্ণব ব্রজবুলী কবিতাসঙ্কলনকে একত্রিত করে 'পদচিন্তামণিমালা' নামক কীর্তন গ্রন্থ প্রকাশ করেন। এছাড়াও 'অভয়াবিহার' গীতি-কাব্যের রচয়িতা ছিলেন তিনি। মনোমোহিনী দেবী সু-গৃহিণী ছিলেন। রজনীকান্তের জন্মের সময় তিনি কটোয়ায় কর্মরত ছিলেন। তাঁর শৈশবকালীন সময়ে তিনি অনেক জায়গায় চাকুরী করেন। ১৮৭৫ সালে বরিশালের সাব-জজ পদ থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন। ফলে তাঁদের পুরো পরিবার জ্যেঠার বড় ছেলে - বরদা গোবিন্দ এবং কালী কুমারের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। দূর্ভাগ্যবশতঃ ১৮৭৮ সালে তারা উভয়েই আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। রজনী'র ছোট ভাই জানকীকান্ত জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়েও মারা যায়। ফলে, আকস্মিকভাবেই আর্থিকভাবে স্বচ্ছল পরিবারটি চরম আর্থিক সঙ্কটে নিপতিত হয়। বড় ভাই গোবিন্দনাথও একজন সফল আইনজীবী ছিলেন।
 
শিক্ষাজীবন
শৈশবে রজনী খুবই দুষ্টপ্রকৃতির অধিকারী ও সদা-সর্বদাই খেলাধূলায় ব্যস্ত থাকতেন। কিন্তু তাঁর নৈতিক চরিত্র সকলের আদর্শস্থানীয় ছিল। তিনি পড়াশোনায় কিঞ্চিৎ সময় ব্যয় করার সুযোগ পেতেন। তারপরও পরীক্ষায় আশাতীত ফলাফল অর্জন করতে পারতেন তিনি। পরবর্তীকালে এ বিষয়ে তিনি তাঁর দিনপঞ্জী বা ডায়রীতে উল্লেখ করেছেন[১] -
“     আমি কখনও বইপ্রেমী ছিলাম না। অত্যন্ত কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্যে ঈশ্বরের কাছে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।     ”

বিদ্যালয় অবকাশকালীন সময়ে প্রতিবেশীর গৃহে সময় ব্যয় করতেন। সেখানে রাজনাথ তারকরত্ন মহাশয়ের কাছ থেকে সংস্কৃত ভাষা শিখতেন। এছাড়াও, গোপাল চন্দ্র লাহিড়ীকে তিনি তার শিক্ষাগুরু হিসেবে পেয়েছিলেন। রজনীকান্ত বোয়ালীয়া জিলা স্কুলে (বর্তমান রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল) ভর্তি হন। ১৮৮৩ সালে কুচবিহার জেনকিন্স স্কুল থেকে ২য় বিভাগে এন্ট্রান্স পাস করেন। এরফলে তিনি প্রতিমাসে দশ রূপি বৃত্তি পেতেন। পরবর্তীতে ১৮৮৫ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে ২য় বিভাগে এফ.এ পাশ করে সিটি কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৮৮৯ সালে বি.এ পাশ করে করেন। অতঃপর একই কলেজ থেকে ১৮৯১ সালে পরিবারকে সহায়তা করার জন্য আইন বিষয়ে বি.এল ডিগ্রী অর্জন করেন রজনীকান্ত সেন।[২]
 
ব্যক্তিগত জীবন
তিনি হিরন্ময়ী দেবী নাম্নী এক বিদূষী নারীকে ১৮৮৩ সালে (৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১২৯০ বঙ্গাব্দ) বিবাহ করেন। হিরন্ময়ী দেবী রজনী'র লেখা কবিতাগুলো নিয়ে আলোচনা করতেন। কখনো কখনো তাঁর কবিতার বিষয়বস্তু সম্পর্কে মতামত ও সমালোচনা ব্যক্ত করতেন। তাঁদের সংসারে চার পুত্র - শচীন্দ্র, জ্ঞানেন্দ্র, ভুপেন্দ্র ও ক্ষীতেন্দ্র এবং দুই কন্যা - শতদলবাসিনী ও শান্তিবালা ছিল। কিন্তু ভুপেন্দ্র খুব অল্প বয়সেই মারা যায়। রজনী দুঃখ-ভারাক্রান্ত মনে এবং ঈশ্বরের উপর অগাধ আস্থা রেখে পরদিনই রচনা করেন -
“    
তোমারি দেওয়া প্রাণে তোমারি দেওয়া দুখ,
তোমারি দেওয়া বুকে, তোমারি অনুভব৷
তোমারি দুনয়নে তোমারি শোক-বারি,
তোমারি ব্যাকুলতা তোমারি হা হা রব৷
    ”
 
সাহিত্য-সংস্কৃতি
রজনীকান্ত সেনের মা মনোমোহিনী দেবী বাংলা সাহিত্যের প্রতি বেশ অনুরক্ত ছিলেন। তিনি এ বিষয়ে কিশোর রজনীকান্তের সাথে আলাপ-আলোচনা করতেন। এই আলোচনা-পর্যালোচনাই তাঁর ভবিষ্যত জীবনে ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল। ভাঙ্গাকুঠি'র তারকেশ্বর চক্রবর্তী ছিলেন তাঁর বন্ধু। তাঁর সঙ্গীত সাধনাও রজনীকে সঙ্গীতের প্রতি দূর্বার আকর্ষণ গড়তে সাহায্য করে।

শৈশবকাল থেকেই তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে ও স্বাবলীল ভঙ্গীমায় বাংলা ও সংস্কৃত - উভয় ভাষায়ই কবিতা লিখতেন। তিনি তাঁর রচিত কবিতাগুলোকে গান আকারে রূপ দিতে শুরু করেন। পরবর্তীতে বাদ্যযন্ত্র সহযোগে গান পরিবেশন করতেন। রজনী'র কবিতাগুলো স্থানীয় উৎস, আশালতা প্রমূখ সংবাদ-সাময়িকীতে অনেকবার প্রকাশিত হয়েছিল। কলেজ জীবনের দিনগুলোতে তিনি গান লিখতেন। অভিষেক অনুষ্ঠান ও সমাপণী বা বিদায় অনুষ্ঠানেই গানগুলো রচনা করে গাওয়া হতো। তিনি তার অতি জনপ্রিয় গানগুলো খুবই স্বল্প সময়ের ব্যবধানে রচনা করতে সক্ষমতা দেখিয়েছিলেন। তেমনি একটি গান রাজশাহী গ্রন্থাগারের সমাবেশে মাত্র এক ঘন্টার মধ্যে রচনা করেছিলেন[১] -
“     তব, চরণ নিম্নে, উৎসবময়ী শ্যাম-ধরনী সরসা;

ঊর্দ্ধে চাহ অগণিত-মনি-রঞ্জিত নভো-নীলাঞ্চলা
সৌম্য-মধুর-দিব্যাঙ্গনা শান্ত-কুশল-দরশা৷
    ”

১৫ বছর বয়সে কালীসঙ্গীত রচনার মাধ্যমে তাঁর অপূর্ব কবিত্বশক্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। আইন পেশার পাশাপাশি তিনি সাহিত্য-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিশেষতঃ সঙ্গীত, সাহিত্য, নাটকে অভিনয় ইত্যাদিতে গভীরভাবে মনোঃসংযোগ ঘটান। এরই প্রেক্ষাপটে রাজশাহীতে অবস্থানকালে তাঁর বন্ধু ও বিখ্যাত ঐতিহাসিক অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় মহাশয় এবং স্ত্রীর কাছ থেকে বেশ সক্রিয় সমর্থন পান।[৩][৪]
শরৎ কুমার রায়কে লিখিত চিঠিতে সঙ্গীতের আসক্তির কথা লিখেছিলেন।

রজনীকান্ত ওকালতি পেশায় গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট ও সন্তুষ্ট হতে পারেননি। এ সময় থেকে মৃত্যুর প্রায় এক বৎসর পূর্ব পর্যন্ত রজনীকান্তের জীবন এক অখণ্ড আনন্দের খনি ছিল। তাঁর সঙ্গীত-প্রতিভাই তাঁকে অমর করে রেখেছে। সঙ্গীত-রচনা করা তাঁর পক্ষে এমনই সহজ ও স্বাভাবিক ছিল যে, তিনি অবহেলায় উপেক্ষায় অতি উৎকৃষ্ট সঙ্গীত রচনা করতে পারতেন। সঙ্গীতের প্রতি তার প্রবল আগ্রহের কথা ব্যক্ত করে তিনি শরৎ কুমার রায়কে চিঠিতে জানিয়েছিলেন -
“     কুমার, আমি আইন ব্যবসায়ী, কিন্তু আমি ব্যবসায় করিতে পারি নাই। কোন দুর্লঙ্ঘ্য অদৃষ্ট আমাকে ঐ ব্যবসায়ের সহিত বাঁধিয়া দিয়াছিল, কিন্তু আমার চিত্ত উহাতে প্রবেশ লাভ করিতে পারে নাই। আমি শিশুকাল হইতে সাহিত্য ভালবাসিতাম; কবিতার পূজা করিতাম, কল্পনার আরাধনা করিতাম; আমার চিত্ত তাই লইয়া জীবিত ছিল।     ”

—একান্ত অনুগত
শ্রীরজনী কান্ত সেন
 

বঙ্গভঙ্গ ও স্বদেশী আন্দোলন
স্বদেশী আন্দোলনে তাঁর গান ছিল অসীম প্রেরণার উৎসস্থল। ৭ আগস্ট, ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে কলকাতার টাউনহলে একটি জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিলাতী পণ্য বর্জন এবং স্বদেশী পণ্য গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন বাংলার প্রখ্যাত নেতৃবর্গ। ভারতের সাধারণ জনগণ বিশেষতঃ আহমেদাবাদ এবং বোম্বের অধিবাসীগণ ভারতে তৈরী বস্ত্র ব্যবহার করতে শুরু করেন। কিন্তু এ কাপড়গুলোর গুণগতমান বিলাতে তৈরী কাপড়ের তুলনায় তেমন মসৃণ ও ভাল ছিল না। এর ফলে কিছুসংখ্যক ভারতবাসী খুশী হতে পারেননি। এই কিছুসংখ্যক ভারতীয়দেরকে ঘিরে রজনীকান্ত রচনা করেন তার বিখ্যাত দেশাত্মবোধক ও অবিস্মরণীয় গান -
“     মায়ের দেওয়া মোটা কাপড় মাথায় তুলে নেরে ভাই;

দীন দুখিনি মা যে তোদের তার বেশি আর সাধ্য নাই৷
    ”

এই একটি গান রচনার ফলে রাজশাহীর পল্লী-কবি রজনীকান্ত সমগ্র বঙ্গের জাতীয় কবি - কান্তকবি রজনীকান্ত হয়ে উঠলেন ও জনসমক্ষে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করলেন।[৫] প্রায়শঃই তাঁর গানগুলোকে কান্তগীতি নামে অভিহিত করা হতো।

এ গানটি রচনার ফলে পুরো বাংলায় অদ্ভূত গণ-আন্দোলন ও নবজাগরণের পরিবেশ সৃষ্টি করে। গানের কথা, সুর ও মাহাত্ম্য বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করায় রজনীকান্তও ভীষণ খুশী হয়েছিলেন। স্বদেশী আন্দোলনের সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গও গানটিকে উপজীব্য করে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপণায় অগ্রসর হতে থাকেন। ভারতীয় বিপ্লবী নেতারাও পরবর্তী বছরগুলোয় বেশ সোৎসাহে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন গানটিকে ঘিরে।

পরবর্তীকালে তিনি প্রায় একই ঘরানার আরো একটি জনপ্রিয় গান রচনা করেন -
“     আমরা নেহাত গরীব, আমরা নেহাত ছোট,-

তবু আছি সাতকোটি ভাই,-জেগে ওঠ!
    ”

গানটির পরবর্তী চরণগুলো ছিল মূলতঃ ব্রিটিশ পণ্য বর্জন সংক্রান্ত। বিখ্যাত আরো একটি গান তিনি প্রার্থনা সঙ্গীত হিসেবে রচনা করেছিলেন -
“     তুমি নির্মল কর মঙ্গল করে, মলিন মর্ম মুছায়ে;

তব পূণ্য-কিরণ দিয়ে যাক, মোর মোহ কালিমা ঘুচায়ে৷
    ”

সঙ্গীত জীবন
রজনীকান্ত শৈশবকাল থেকে সঙ্গীতপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। কোথাও কোন সুমধুর সঙ্গী শুনলেই তিনি সুর, তাল-সহ তৎক্ষণাৎ তা কণ্ঠস্থ করতে পারতেন। তাঁর পিতা গুরুপ্রসাদ সেন একজন দক্ষ সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। ফলে পিতার সাহচর্য্যেই শৈশবে সঙ্গীত অনুশীলন করার সুযোগ ঘটে তাঁর। বস্তুতঃ কাব্যের চেয়ে গানের ক্ষেত্রে তাঁর কৃতিত্ব অধিক। যৌবনে সঙ্গীত রচনায় বিশেষ পারদর্শীতার পরিচয় প্রদান করেন রজনীকান্ত।[৬]

অক্ষয়কুমারের বাসভবনে আয়োজিত গানের আসরে তিনি স্বরচিত গানের সুকণ্ঠ গায়ক হিসেবে আবির্ভূত হন তিনি। রাজশাহীতে অবস্থানকালে রজনীকান্ত সেন তৎকালীন সময়ের অত্যন্ত জনপ্রিয় কবি দ্বিজেন্দ্রলালের কণ্ঠে হাসির গান শুনে হাসির গান রচনা শুরু করেন। অত্যন্ত ক্ষিপ্রতার সঙ্গে গান রচনায় তার জুড়ি মেলা ভার ছিল। তিনি কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের লেখনীর দ্বারা ভীষণভাবে প্রভাবান্বিত হয়েছিলেন। ফলে তিনিও তাঁর মতো করে সমগোত্রীয় লেখা লিখতে শুরু করেন।

তাঁর রচিত গানগুলোকে বিষয়বস্তু অনুযায়ী চারটি ভাগে বিভাজিত করা হয়েছে -

   1. দেশাত্মবোধক গান
   2. ভক্তিমূলক গান
   3. প্রীতিমূলক গান
   4. হাস্যরসের গান।

তন্মধ্যে - রজনীকান্তের দেশাত্মবোধক গানের আবেদনই বিশাল ও ব্যাপক। স্বদেশী আন্দোলন (১৯০৫-১৯১১) চলাকালে 'মায়ের দেওয়া মোটা কাপড় মাথায় তুলে নেরে ভাই' গানটি রচনা করে অভূতপূর্ব গণআলোড়নের পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল।

বাংলাদেশ এবং ভারতের অনেক সঙ্গীত শিল্পী কান্তগীতি গানগুলো গেয়েছেন। তন্মধ্যে - কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায়, নীলা মজুমদার, পান্নালাল ভট্টাচার্য্য, অনুপ ঘোষাল, নিশীথ সাধু, হেমন্ত কুমার মুখোপাধ্যায়, শ্রীকান্ত আচার্য্য, অর্ঘ্য সেন, জুঁথিকা রায়, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, আরতী মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, ছবি বন্দ্যোপাধ্যায়, ইফফাত আরা দেওয়ান, উৎপলা সেন প্রমুখ অন্যতম।
 
কবিতা
কবি হিসেবেও যথেষ্ট সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন রজনীকান্ত সেন। নির্মল আবেগ ও কোমল সুরের ব্যঞ্জনায় তাঁর গান ও কবিতাগুলো হয়েছে ঋদ্ধ ও সমৃদ্ধ।
 

ব্যঙ্গ কবিতা
রজনীকান্ত সেন ব্যঙ্গ কবিতা রচনায় সিদ্ধহস্তের অধিকারী ছিলেন। তাঁর বুড়ো বাঙ্গাল কবিতাটি তেমন-ই একটি।[৭] কবিতাটি রস-নিবেদনে এবং ব্যঙ্গ চাতুর্যতায় - এক কথায় অপূর্বঃ-
“     বাজার হুদ্দা কিন্যা আইন্যা, ঢাইল্যা দিচি পায়;
তোমার লগে কেমতে পারুম, হৈয়্যা উঠছে দায়।
আরসি দিচি, কাহই দিচি, গাও মাজনের হাপান দিচি,
চুলে বান্দনের ফিত্যা দিচি, আর কি দ্যাওন যায়?
    ”
তিনি সমাজের বিভিন্ন দিক নিয়ে তীব্র ব্যঙ্গ করেছিলেন। তৎকালীন সামাজিক সংস্কার, শিক্ষিত সমাজের বিকৃতি ইত্যাদি উপকরণ নিয়ে ব্যঙ্গ করার সাথে সাথে গ্লানিমুক্ত নির্দোষ হাসির কবিতাও তিনি লিখেছেন।[৮] এদেশের ঐতিহাসিক গবেষণার প্রতি প্রচ্ছন্ন শ্লেষের সাথে কৌতুকরসের পরিবেশনা রয়েছে পুরাতত্ত্ববিৎ কবিতায় -
“     রাজা অশোকের কটা ছিল হাতি,
টোডরমল্লের কটা ছিল নাতি,
কালাপাহাড়ের কটা ছিল ছাতি,
এসব করিয়া বাহির, বড় বিদ্যে করেছি জাহির।

আকবর শাহ কাছা দিত কিনা,
নূরজাহানের কটা ছিল বীণা,
মন্থরা ছিলেন ক্ষীণা কিম্বা পীনা,
এসব করিয়া বাহির, বড় বিদ্যে করেছি জাহির।
    ”
 

নীতি কবিতা
গল্প, কাহিনী বা নিছক কলাশিল্পের সাহায্যে কবি জ্ঞানগর্ভ নীতিকথা বা তত্ত্ব প্রচার করেন। নীতিকথার তীব্রতা কল্পনার স্পর্শে যাতে কোমল ও কান্তরূপ পরিগ্রহ করে, তাই কবি হৃদয়ের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। সেই দৃষ্টিকোণে রজনীকান্ত সেনের অমৃত কাব্যগ্রন্থটি একটি স্বার্থক নীতি কবিতার অন্তর্ভূক্ত।[৯] উপযুক্ত কাল কবিতায় তিনি লিখেছেন -
“     শৈশবে সদুপদেশ যাহার না রোচে,
জীবনে তাহার কভু মূর্খতা না ঘোচে।
চৈত্রমাসে চাষ দিয়া না বোনে বৈশাখে,
কবে সেই হৈমন্তিক ধান্য পেয়ে থাকে?
    ”
 
কর্মজীবন
বি.এল ডিগ্রী অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষাজীবন শেষ করে ১৮৯১ সালে তিনি রাজশাহীতে আইন পেশায় নিয়োজিত হয়েছিলেন। তাঁর জ্যেঠা অর্থাৎ বাবার বড় ভাই তখন রাজশাহীতে উকিল হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ফলে আইন পেশায় রজনী'র দ্রুত উত্তরণ ঘটতে থাকে। কিন্তু আইন পেশার পাশাপাশি সাহিত্য-সাংস্কৃতিক অঙ্গনেই বেশী সম্পৃক্ত রাখতেন নিজেকে। ফলশ্রুতিতে তিনি তাঁর সুনাম হারাতে থাকেন। মক্কেলদের কাছে চাহিদামাফিক সময় দিতে পারতেন না। পরবর্তীকালে কিছুদিন তিনি নাটোর এবং নওগাঁ জেলায়ও অস্থায়ীভাবে মুন্সেফ হিসেবে কাজ করেছিলেন রজনীকান্ত সেন।
 

অন্যান্য
রজনী শারীরিক কসরৎ এবং খেলাধূলায় বেশ আগ্রহী ছিলেন। খেলাধূলায় অতি উৎসাহের কারণে নিজ ব্যয়ে ভাঙ্গাবাড়ীতে ফুটবল এবং ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করতেন। নিজ গ্রামে তিনি বেশ সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ছিলেন। সর্ববিদ্যায় পারদর্শীতা অর্জন - বিশেষ করে গান-বাজনা, খেলাধূলা, অভিনয়-কলা প্রভৃতি বিষয়ে পারঙ্গমতাই এর মূল কারণ। গ্রামের নিরক্ষর মহিলাদের মাঝে শিক্ষা প্রসারের জন্যেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন রজনীকান্ত সেন। এরফলে পশ্চাদমুখী, অশিক্ষিত গ্রামবাসীর অনুন্নত চিন্তা-ভাবনার মুখোমুখি হন তিনি। এমনকি তাঁর ছাত্রদের কাছ থেকেও বিভিন্ন ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে তা মোকাবিলা করতে হয়েছে তাঁকে।
 

রচনাসমগ্র
রাজশাহী থেকে প্রচারিত উৎসাহ মাসিক পত্রিকায় রজনীকান্তের রচনা প্রকাশিত হতো। তাঁর কবিতা ও গানের বিষয়বস্তু মূখ্যতঃ দেশপ্রীতি ও ভক্তিমূলক। হাস্যরস-প্রধান গানের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। জীবিত থাকাকালে তিনটি গ্রন্থ রচনা করেছেন তিনি। সেগুলো হলো -
    * বাণী (১৯০২)
    * কল্যাণী (১৯০৫)
    * অমৃত (১৯১০)
এছাড়াও ৫টি বই তাঁর মৃত্যু-পরবর্তীকালে প্রকাশিত হয়েছিল।[১০] সেগুলো হচ্ছে -
    * অভয়া (১৯১০)
    * আনন্দময়ী (১৯১০)
    * বিশ্রাম (১৯১০)
    * সদ্ভাবকুসুম (১৯১৩)
    * শেষদান (১৯১৬)
তন্মধ্যে - বাণী এবং কল্যাণী গ্রন্থটি ছিল তাঁর গানের সঙ্কলন বিশেষ। অমৃত কাব্যসহ দু'টি গ্রন্থে বর্ণিত রয়েছে শিশুদের পাঠ্য উপযোগী নীতিবোধ সম্পর্কীয় ক্ষুদ্র কবিতা বা ছড়া। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কণিকা কাব্যগ্রন্থটিই তাকে অমৃত কাব্যগ্রন্থ রচনা করতে ব্যাপক প্রভাবান্বিত করেছে।[১]
উল্লেখযোগ্য সাহিত্য-কর্ম এবং অবিস্মরণীয় আধ্যাত্মিক গানগুলো রচনার মাধ্যমে রজনীকান্ত সেন অমরত্ব লাভ করে চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। প্রধানতঃ তাঁর গানগুলো হিন্দুস্তানী শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ঘরণার। এতে তিনি কীর্তন, বাউল এবং টপ্পার যথাযথ সংমিশ্রণ ঘটাতে সক্ষমতা দেখিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশের অগণিত শ্রোতা-লেখকের মন জয় করেছেন।
 
শেষ দিনগুলোয়
১৯০৯ সালে রজনীকান্ত কণ্ঠনালীর প্রদাহজনিত কারণে সমস্যা ভোগ করতে থাকেন। আর্থিক সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করা সত্ত্বেও একই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর তারিখে তাঁকে জোরপূর্বক কলকাতায় প্রেরণ করেন পরিবারের সদস্যরা। একজন ব্রিটিশ ডাক্তার তাঁকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন ও তাঁর ল্যারিঙ্কস্‌ ক্যানসার হয়েছে বলে সনাক্ত করেন। অতঃপর তিনি কলকাতার বিভিন্ন প্রথিতযশা ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। কিন্তু তাঁর অবস্থার আর উত্তরণ হয়নি, বরঞ্চ উত্তরোত্তর অবনতি হতে থাকে।
শেষ আশ্রয় হিসেবে বারাণসীতে ঈশ্বরের কাছ থেকে প্রকৃতি প্রদত্ত আরোগ্য লাভের আশায় বেশ কয়েকমাস ব্যয় করেন। এ ব্যয়ভার বহনের লক্ষ্যে খুবই বিষাদ চিত্তে তাঁর প্রকাশিত বাণী এবং কল্যাণী বই দু'টোর গ্রন্থস্বত্ত্ব বিক্রী করে দিতে বাধ্য হন তিনি। কলকাতায় পুণরায় ফিরে আসলেও শারীরিক অবস্থা ক্রমশঃ আরো ভেঙ্গে পড়ে। অতঃপর তিনি ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯১০ তারিখে ক্যাপ্টেন ডেনহ্যাম হুয়াইটের তত্ত্বাবধানে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ট্রাকিওটোমি অপারেশন করান। এরফলে তিনি কিছুটা আরোগ্য লাভ করলেও চীরতরে তাঁর বাকশক্তি হারান। অপারেশন পরবর্তী জীবনের বাকী দিনগুলোয় হাসপাতালের কটেজ ওয়ার্ডে ব্যয় করেন।
হাসপাতালে থাকাকালীন তিনি তাঁর দৈনিক দিনলিপি বা ডায়রী সংরক্ষণ করতেন। এছাড়াও, আত্মজীবনী লিখতে শুরু করলেও একটিমাত্র অধ্যায়েই তা শেষ হয়ে যায় মৃত্যুজনিত কারণে। কিছু কবিতাপ্রেমী ব্যক্তিত্ব এবং কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্ররা তাঁর দেখাশোনা ও খোঁজ-খবর নিতেন। মহারাজা মনীন্দ্র চন্দ্র নন্দী এবং শরৎ কুমার রায় তাঁকে আর্থিক দিক দিয়ে যথাসাধ্য সহযোগিতা করেন। স্মর্তব্য যে, ১১ জুন, ১৯১০ তারিখে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রজনীকান্ত সেনকে দেখার জন্যে হাসপাতাল পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন। তখন রজনী'র লিখিত একটি গান তাঁর পুত্র ক্ষিতীন্দ্রনাথ এবং কন্যা শান্তিবালা হারমোনিয়াম সহযোগে গাচ্ছিলেন। রজনী বিশ্বাস করতেন যে, ঈশ্বর তাঁকে ব্যথা-বেদনা দিয়ে তার পবিত্র আত্মাকে শুদ্ধ করছেন। এ বিশ্বাসটুকু তার অন্তঃশক্তি প্রদান করে শারীরিকভাবে ব্যথা থেকে সাময়িক বিমুক্ত রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। তাঁকে আত্মনিমগ্ন রেখে এ গান রচনা করতে সাহায্য করেছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে ঐদিন সাক্ষাতের প্রতিফলন হিসেবে নিম্নবর্ণিত গানটি রচনা করেছেন রজনীকান্ত সেন।
“     আমায় সকল রকমে কাঙ্গাল করেছে, গর্ব করিতে চূর,
তাই যশ ও অর্থ, মান ও স্বাস্থ্য, সকলি করেছে দূর৷
ঐ গুলো সব মায়াময় রূপে, ফেলেছিল মোরে অহমিকা-কূপে,
তাই সব বাধা সরায়ে দয়াল করেছে দীন আতুর;
    ”
তারপর তিনি গানটিকে কবিতা আকারে বোলপুরে রবীন্দ্রনাথের কাছে পাঠিয়ে দেন।[১] উষ্ণপ্রকৃতির এ কবিতা হাতে পেয়ে রবিঠাকুর ৩০ জুলাই একটি চিঠি লেখেন।[১] তাতে তিনি রজনী'র ব্যাপক সাহিত্য প্রতিভা এবং গৌরবময় ভূমিকার কথা সবিশেষভাবে উল্লেখ করেন। এর মাধ্যমেই তাঁর অন্তরাত্মা শক্তি ও সাহস জুগিয়ে সর্বপ্রকার ব্যথা-বেদনা থেকে মুক্ত থাকবে বলে ব্যক্ত করেন। এ সময়ে তিনি বেশ কিছু আগমণী এবং বিজয়া'র গান রচনা করেন।
 
মহাপ্রস্থান
রজনীকান্তের শেষ দিনগুলো ছিল অসম্ভব ব্যথায় পরিপূর্ণ। তিনি ১৩ সেপ্টেম্বর, ১৯১০ সালে (১৩১৭ বঙ্গাব্দের ২৮শে ভাদ্র) মঙ্গলবার রাত্রি সাড়ে আট ঘটিকার সময় লোকান্তরিত হন।[১][৫]
 

স্বীকৃতি
ক্ষণজন্মা এই অমর সঙ্গীতকার ও লেখক ব্যক্তিত্বকে সম্মান জানিয়ে বাংলাদেশের প্রখ্যাত কবি ও সাহিত্যিক আসাদ চৌধুরী ১৯৮৯ সালে রজনীকান্ত সেন শিরোনামে একটি জীবনীগ্রন্থ রচনা করেন।
 
তথ্যসূত্র
   1. ↑ ১.০ ১.১ ১.২ ১.৩ ১.৪ ১.৫ Kantakabi Rajanikanta, Nalini Ranjan Pandit, Bengal Book Company (1921)
   2. ↑ সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, সম্পাদকঃ অঞ্জলি বসু, ৪র্থ সংস্করণ, ১ম খণ্ড, ২০০২, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, পৃ. ৪৫০
   3. ↑ Rajanikanta Sen Banglapedia.
   4. ↑ http://www.abasar.net/litRajanikaant.htm
   5. ↑ ৫.০ ৫.১ সরল বাঙালা অভিধান, সংকলকঃ সুবলচন্দ্র মিত্র, নিউ বেঙ্গল প্রেস প্রাইভেট লিমিটেড, ৮ম সংস্করণ, ১৯৯৫, কলকাতা, পৃ. ১১৩৬
   6. ↑ বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান, সম্পাদকঃ সেলিনা হোসেন ও নূরুল ইসলাম, ২য় সংস্করণ, ২০০৩, বাংলা একাডেমী, ঢাকা, পৃ. ৩৩৮
   7. ↑ "বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত, মুহম্মদ আবদুল হাই ও সৈয়দ আলী আহসান, আহমদ পাবলিশিং হাউস, ঢাকা, ৮ম সংস্করণ, পৃষ্ঠাঃ ২৪৩
   8. ↑ "বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, মাহবুবুল আলম, খান ব্রাদার্স এ্যান্ড কোম্পানি, ঢাকা, ৭ম সংস্করণ, ১৯৯৭, পৃষ্ঠাঃ ৪৯১-২
   9. ↑ "সাহিত্য-সন্দর্শন", শ্রীশচন্দ্র দাশ, বর্ণ বিচিত্রা, ঢাকা, ৬ষ্ঠ সংস্করণ, ১৯৯৫, পৃষ্ঠা-৭৪
  10. ↑ Masik Basumati, 1963 Kartik Edition, p20

Stumble
Delicious
Technorati
Twitter
Facebook

0 Comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত দিন

নির্বাচিত বিষয়গুলো দেখুন

কবিতা ছোটগল্প গল্প নিবন্ধ ছড়া টিপস রম্য গল্প প্রেমের কবিতা স্বাস্থ্য কথা কৌতুক ইসলামী সাহিত্য কম্পিউটার টিপস জানা অজানা লাইফ স্ট্যাইল স্বাধীনতা স্থির চিত্র ফিচার শিশুতোষ গল্প ইসলাম কবি পরিচিতি প্রবন্ধ ইতিহাস চিত্র বিচিত্র প্রকৃতি বিজ্ঞান রম্য রচনা লিরিক ঐতিহ্য পাখি মুক্তিযুদ্ধ শরৎ শিশু সাহিত্য বর্ষা আলোচনা বিজ্ঞান ও কম্পিউটার বীরশ্রেষ্ঠ লেখক পরিচিতি স্বাস্থ টিপস উপন্যাস গাছপালা জীবনী ভিন্ন খবর হারানো ঐতিহ্য হাসতে নাকি জানেনা কেহ ছেলেবেলা ফল ফুল বিরহের কবিতা অনু গল্প প্রযুক্তি বিউটি টিপস ভ্রমণ মজার গণিত সংস্কৃতি সাক্ষাৎকার ঔষধ ডাউনলোড প্যারডী ফেসবুক মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য রম্য কবিতা সাধারণ জ্ঞান সাহিত্যিক পরিচিতি সায়েন্স ফিকশান স্বাধীনতার কবিতা স্বাধীনতার গল্প কৃষি তথ্য চতুর্দশপদী প্রেমের গল্প মোবাইল ফোন রুপকথার গল্প কাব্য ক্যারিয়ার গবেষণা গৌরব জীবনের গল্প ফটোসপ সবুজ সভ্যতা
অতনু বর্মণ অদ্বৈত মারুত অধ্যাপক গোলাম আযম অনন্ত জামান অনিন্দ্য বড়ুয়া অনুপ সাহা অনুপম দেব কানুনজ্ঞ অমিয় চক্রবর্তী অয়ন খান অরুদ্ধ সকাল অর্ক আ.শ.ম. বাবর আলী আইউব সৈয়দ আচার্য্য জগদীশচন্দ্র বসু আজমান আন্দালিব আতাউর রহমান কাবুল আতাউস সামাদ আতোয়ার রহমান আত্মভোলা (ছন্দ্রনাম) আদনান মুকিত আনিসা ফজলে লিসি আনিসুর রহমান আনিসুল হক আনোয়ারুল হক আন্জুমান আরা রিমা আবদুল ওহাব আজাদ আবদুল কুদ্দুস রানা আবদুল গাফফার চৌধুরী আবদুল মান্নান সৈয়দ আবদুল মাবুদ চৌধুরী আবদুল হাই শিকদার আবদুল হামিদ আবদুস শহীদ নাসিম আবিদ আনোয়ার আবু মকসুদ আবু সাইদ কামাল আবু সাঈদ জুবেরী আবু সালেহ আবুল কাইয়ুম আহম্মেদ আবুল মোমেন আবুল হায়াত আবুল হাসান আবুল হোসেন আবুল হোসেন খান আবেদীন জনী আব্দুল কাইয়ুম আব্দুল মান্নান সৈয়দ আব্দুল হালিম মিয়া আমানত উল্লাহ সোহান আমিনুল ইসলাম চৌধুরী আমিনুল ইসলাম মামুন আরিফুন নেছা সুখী আরিফুর রহমান খাদেম আল মাহমুদ আলম তালুকদার আশীফ এন্তাজ রবি আসমা আব্বাসী আসাদ চৌধুরী আসাদ সায়েম আসিফ মহিউদ্দীন আসিফুল হুদা আহমদ - উজ - জামান আহমদ বাসির আহমেদ আরিফ আহমেদ খালিদ আহমেদ রাজু আহমেদ রিয়াজ আহসান হাবিব আহসান হাবীব আহাম্মেদ খালিদ ইকবাল আজিজ ইকবাল খন্দকার ইব্রাহিম নোমান ইব্রাহীম মণ্ডল ইমদাদুল হক মিলন ইয়াসির মারুফ ইলিয়াস হোসেন ইশতিয়াক উত্তম মিত্র উত্তম সেন উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী এ কে আজাদ এ টি এম শামসুজ্জামান এ.বি.এম. ইয়াকুব আলী সিদ্দিকী একরামুল হক শামীম একে আজাদ এনামুল হায়াত এনায়েত রসুল এম আহসাবন এম. মুহাম্মদ আব্দুল গাফফার এম. হারুন অর রশিদ এরশাদ মজুদার এরশাদ মজুমদার এস এম নাজমুল হক ইমন এস এম শহীদুল আলম এস. এম. মতিউল হাসান এসএম মেহেদী আকরাম ওমর আলী ওয়াসিফ -এ-খোদা ওয়াহিদ সুজন কবি গোলাম মোহাম্মদ কমিনী রায় কাজী আনিসুল হক কাজী আবুল কালাম সিদ্দীক কাজী নজরুল ইসলাম কাজী মোস্তাক গাউসুল হক শরীফ কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম কাপালিক কামরুল আলম সিদ্দিকী কামাল উদ্দিন রায়হান কায়কোবাদ (কাজেম আলী কোরেশী) কার্তিক ঘোষ কৃষ্ণকলি ইসলাম কে এম নাহিদ শাহরিয়ার কেজি মোস্তফা খন্দকার আলমগীর হোসেন খন্দকার মুহাম্মদ হামিদুল্লাহ্ খান মুহাম্মদ মইনুদ্দীন খালেদ রাহী গাজী গিয়াস উদ্দিন গিয়াস উদ্দিন রূপম গিরিশচন্দ সেন গোলাম কিবরিয়া পিনু গোলাম নবী পান্না গোলাম মোস্তফা গোলাম মোহাম্মদ গোলাম সরোয়ার চন্দন চৌধুরী চৌধুরী ফেরদৌস ছালেহা খানম জুবিলী জ. রহমান জয়নাল আবেদীন বিল্লাল জসিম মল্লিক জসীম উদ্দিন জহির উদ্দিন বাবর জহির রহমান জহির রায়হান জাওয়াদ তাজুয়ার মাহবুব জাকিয়া সুলতানা জাকির আবু জাফর জাকির আহমেদ খান জান্নাতুল করিম চৌধুরী জান্নাতুল ফেরদাউস সীমা জাফর আহমদ জাফর তালুকদার জায়ান্ট কজওয়ে জাহাঙ্গীর আলম জাহান জাহাঙ্গীর ফিরোজ জাহিদ হোসাইন জাহিদুল গণি চৌধুরী জিয়া রহমান জিল্লুর রহমান জীবনানন্দ দাশ জুবাইদা গুলশান আরা জুবায়ের হুসাইন জুলফিকার শাহাদাৎ জেড জাওহার ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া ড. কাজী দীন মুহম্মদ ড. ফজলুল হক তুহিন ড. ফজলুল হক সৈকত ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ ড. মুহা. বিলাল হুসাইন ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ড. রহমান হাবিব ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ডক্টর সন্দীপক মল্লিক ডা: সালাহ্উদ্দিন শরীফ ডা. দিদারুল আহসান তমিজ উদদীন লোদী তাজনীন মুন তানজিল রিমন তাপস রায় তামান্না শারমিন তারক চন্দ্র দাস তারাবাঈ তারেক রহমান তারেক হাসান তাসনুবা নূসরাত ন্যান্সী তাসলিমা আলম জেনী তাহমিনা মিলি তুষার কবির তৈমুর রেজা তৈয়ব খান তৌহিদুর রহমান দর্পণ কবীর দিলওয়ার হাসান দেলোয়ার হোসেন ধ্রুব এষ ধ্রুব নীল নঈম মাহমুদ নবাব আমিন নাইমুর রশিদ লিখন নাইয়াদ নাজমুন নাহার নাজমুল ইমন নাফিস ইফতেখার নাবিল নাসির আহমেদ নাসির উদ্দিন খান নাহার মনিকা নাহিদা ইয়াসমিন নুসরাত নিজাম কুতুবী নির্জন আহমেদ অরণ্য নির্মলেন্দু গুণ নিসরাত আক্তার সালমা নীল কাব্য নীলয় পাল নুরে জান্নাত নূর মোহাম্মদ শেখ নূর হোসনা নাইস নৌশিয়া নাজনীন পীরজাদা সৈয়দ শামীম শিরাজী পুলক হাসান পুষ্পকলি প্রাঞ্জল সেলিম প্রীতম সাহা সুদীপ ফকির আবদুল মালেক ফজল শাহাবুদ্দীন ফয়সাল বিন হাফিজ ফররুখ আহমদ ফাতিহা জামান অদ্রিকা ফারুক আহমেদ ফারুক নওয়াজ ফারুক হাসান ফাহিম আহমদ ফাহিম ইবনে সারওয়ার ফেরদৌসী মাহমুদ বাদশা মিন্টু বাবুল হোসেইন বিকাশ রায় বিন্দু এনায়েত বিপ্রদাশ বড়ুয়া বেগম মমতাজ জসীম উদ্দীন বেগম রোকেয়া বেলাল হোসাইন বোরহান উদ্দিন আহমদ ম. লিপ্স্কেরভ মঈনুল হোসেন মজিবুর রহমান মন্জু মতিউর রহমান মল্লিক মতিন বৈরাগী মধু মনসুর হেলাল মনিরা চৌধুরী মনিরুল হক ফিরোজ মরুভূমির জলদস্যু মর্জিনা আফসার রোজী মশিউর রহমান মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর মা আমার ভালোবাসা মাইকেল মধুসূদন দত্ত মাওলানা মুহাম্মাদ মাকসুদা আমীন মুনিয়া মাখরাজ খান মাগরিব বিন মোস্তফা মাজেদ মানসুর মুজাম্মিল মানিক দেবনাথ মামুন হোসাইন মায়ফুল জাহিন মারজান শাওয়াল রিজওয়ান মারুফ রায়হান মালিহা মালেক মাহমুদ মাসুদ আনোয়ার মাসুদ মাহমুদ মাসুদা সুলতানা রুমী মাসুম বিল্লাহ মাহফুজ উল্লাহ মাহফুজ খান মাহফুজুর রহমান আখন্দ মাহবুব আলম মাহবুব হাসান মাহবুব হাসানাত মাহবুবা চৌধুরী মাহবুবুল আলম কবীর মাহমুদা ডলি মাহমুদুল বাসার মাহমুদুল হাসান নিজামী মাহ্‌মুদুল হক ফয়েজ মিতা জাহান মু. নুরুল হাসান মুজিবুল হক কবীর মুন্সি আব্দুর রউফ মুফতি আবদুর রহমান মুরাদুল ইসলাম মুস্তাফিজ মামুন মুহম্মদ নূরুল হুদা মুহম্মদ শাহাদাত হোসেন মুহাম্মদ আনছারুল্লাহ হাসান মুহাম্মদ আবু নাসের মুহাম্মদ আমিনুল হক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল মুহাম্মদ মহিউদ্দিন মুহাম্মাদ হাবীবুল্লাহ মুহিউদ্দীন খান মেজবাহ উদ্দিন মেহনাজ বিনতে সিরাজ মেহেদি হাসান শিশির মো: জামাল উদ্দিন মো. আরিফুজ্জামান আরিফ মোঃ আহসান হাবিব মোঃ তাজুল ইসলাম সরকার মোঃ রাকিব হাসান মোঃ রাশেদুল কবির আজাদ মোঃ সাইফুদ্দিন মোমিন মেহেদী মোর্শেদা আক্তার মনি মোশাররফ মোশাররফ হোসেন খান মোশারেফ হোসেন পাটওয়ারী মোহসেনা জয়া মোহাম্মদ আল মাহী মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন মোহাম্মদ নূরুল হক মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ্ মোহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহ মোহাম্মদ সা'দাত আলী মোহাম্মদ সাদিক মোহাম্মদ হোসাইন মৌরী তানিয় যতীন্দ্র মোহন বাগচী রজনীকান্ত সেন রণক ইকরাম রফিক আজাদ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রহমান মাসুদ রহিম রায়হান রহিমা আখতার কল্পনা রাখাল রাজিব রাজিবুল আলম রাজীব রাজু আলীম রাজু ইসলাম রানা হোসেন রিয়াজ চৌধুরী রিয়াদ রুমা মরিয়ম রেজা উদ্দিন স্টালিন রেজা পারভেজ রেজাউল হাসু রেহমান সিদ্দিক রোকনুজ্জামান খান রোকেয়া খাতুন রুবী শওকত হোসেন শওকত হোসেন লিটু শওগাত আলী সাগর শফিক আলম মেহেদী শরীফ আতিক-উজ-জামান শরীফ আবদুল গোফরান শরীফ নাজমুল শাইখুল হাদিস আল্লামা আজীজুল হক শামছুল হক রাসেল শামসুজ্জামান খান শামসুর রহমান শামস্ শামীম হাসনাইন শারমিন পড়শি শাহ আব্দুল হান্নান শাহ আলম শাহ আলম বাদশা শাহ আহমদ রেজা শাহ নেওয়াজ চৌধুরী শাহ মুহাম্মদ মোশাহিদ শাহজাহান কিবরিয়া শাহজাহান মোহাম্মদ শাহনাজ পারভীন শাহাদাত হোসাইন সাদিক শাহাবুদ্দীন আহমদ শাহাবুদ্দীন নাগরী শাহিন শাহিন রিজভি শিউল মনজুর শিরিন সুলতানা শিশিরার্দ্র মামুন শুভ অংকুর শেখ হাবিবুর রহমান সজীব সজীব আহমেদ সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত সাইদা সারমিন রুমা সাইফ আলি সাইফ চৌধুরী সাইফ মাহাদী সাইফুল করীম সাইয়্যেদ আবুল আ'লা মওদূদী সাকিব হাসান সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ সানজানা রহমান সাবরিনা সিরাজী তিতির সামছুদ্দিন জেহাদ সামিয়া পপি সাযযাদ কাদির সারোয়ার সোহেন সালমা আক্তার চৌধুরী সালমা রহমান সালেহ আকরাম সালেহ আহমদ সালেহা সুলতানা সিকদার মনজিলুর রহমান সিমু নাসের সিরহানা হক সিরাজুল ইসলাম সিরাজুল ফরিদ সুকান্ত ভট্টাচার্য সুকুমার বড়ুয়া সুকুমার রায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সুফিয়া কামাল সুভাষ মুখোপাধ্যায় সুমন সোহরাব সুমনা হক সুমন্ত আসলাম সুমাইয়া সুহৃদ সরকার সৈয়দ আরিফুল ইসলাম সৈয়দ আলমগীর সৈয়দ আলী আহসান সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী সৈয়দ তানভীর আজম সৈয়দ মুজতবা আলী সৈয়দ সোহরাব হানিফ মাহমুদ হামিদুর রহমান হাসান আলীম হাসান ভূইয়া হাসান মাহবুব হাসান শরীফ হাসান শান্তনু হাসান হাফিজ হাসিনা মমতাজ হুমায়ূন আহমেদ হুমায়ূন কবীর ঢালী হেলাল মুহম্মদ আবু তাহের হেলাল হাফিজ হোসেন মাহমুদ হোসেন শওকত হ্নীলার বাঁধন

মাসের শীর্ষ পঠিত

 
রায়পুর তরুণ ও যুব ফোরাম

.::jonaaki online::. © ২০১১ || টেমপ্লেট তৈরি করেছেন জোনাকী টিম || ডিজাইন ও অনলাইন সম্পাদক জহির রহমান || জোনাকী সম্পর্কে পড়ুন || জোনাকীতে বেড়াতে আসার জন্য ধন্যবাদ