ঈশপের গল্প পড়েছো তোমরা। পড়ে কারো ভালো লেগেছে কারো লাগে নি। গত সংখ্যার মতো এই সংখ্যায়ও তোমাদের জন্য হাজির করা হলো ঈশপের গল্প পড়ে লেখা আরেকটি গল্প। গল্পটা পড়ে দেখো কেমন লাগে...
বিলেতে দুই যুগ কাটিয়ে লতিফ মিয়া ফিরল বাড়িতে। পুরনো ঘরদোর ভেঙে নতুন দালান উঠল। জমিজমা চাষবাস করতে এলো একখানা ট্রাক্টর। পুকুর সংস্কার হলো এবং তাতে মাছের পোনা পড়ল। ফলের পুরনো গাছগুলো ফেলা হলো কেটে।
যারা লতিফ-দাদুর সমবয়েসী তারা হা-হা করে উঠল, 'আহা-হা করো কী? ফলবতী গাছ কাটতে নেই। তোমার তো অনেক জমি, নতুন গাছ ওখানে লাগাও।'
ব্যাজার হয়ে গেল তার মুখ, 'কী সব আবোল-তাবোল বকছো তোমরা! আম-জাম-কাঁঠালের মতো বাজে গাছ রেখে লাভ কী?'
'বাজে গাছ!' সমবয়েসীরা হতবাক, 'তোমাদের বাগানে আরও কত রকমের ফল গাছ_ আমড়া, ডেফল, চালতা, জাম্বুরা, বড়ই, আমলকী_ সব কেটে ফেলবে?'
লতিফ দাদুর কপাল কুঁচকে গেল, 'এসব রাখার মানে কী? তোমরা খাও না, বিক্রি হয়। বাজার থেকে তো আঙুর, আপেল, নাশপাতি হরদম আগুনে-দামে কিনছো। ... আমাকে কেন উপদেশ দিচ্ছো আম-জাম-জাম্বুরা গাছ রেখে দিতে?'
সমবয়সী একজন বলল, 'আফটার অল লতিফ, দেশি ফলের বাগান-কেটে ফেলা বোধহয় ঠিক হবে না।'
সে পরামর্শ তিনি শুনলেন না।
গড়ে উঠল আঙুর-আপেলের বাগান।
দিনের পর দিন যায়, মাসের পর মাস, তারপর বছর। গাছ বাড়ে, ফুলই হয় না, ফল তো দূরের কথা। দিন আরও গড়ায়। পাড়ি দেয় মাস হয়ে বছরে। সব চুল-দাঁড়ি শাদা হয়ে যায়।
একদিন ফুল আসে। ঝরে যায় কিছুদিন যেতে না যেতেই। পরের বছর আবার ফুল আসে। শাদা চুল ও দাড়িঅলার হাতে লাঠি ভর করে ঠুকঠুক শব্দ শোনা যায় আঙুর লতার ঝোপের আশপাশে।
কিছুদিন যেতে না যেতেই আঙুরলতার ঝোপ থেকে চিৎকার ভেসে আসে কারও- 'ধরছে, ধরছে।'
তখন বিকেল। ঘর থেকে সবে বেরিয়েছি মাত্র, মনে হলো ভাগ্য সদয়। আমার আর বুঝতে বাকি রইল না, লতিফ দাদুর বাগানে আঙুর ধরেছে। মিষ্টি গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে চারপাশে। সাধে কী আর আমাকে পণ্ডিত বলে?
পায়ে পায়ে কাছে গেলাম বাগানের। ধারণা সত্যি। থোকা থোকা পাকা আঙুর ঝুলছে। যেদিক চোখ যায়, সেদিকে আঙুর। আমার জিবে জল এসে গেল। এরকম পাকা ফল দেখলে কার না লোভ হবে বলো?
লাফ দিয়ে নাগালে পাওয়া গেল এক থোকা।
মুখে দিতেই শরীরের লোম শিরশিরিয়ে উঠল।
এত টক?
মন খারাপ হলো আমার। বেচারা লতিফ দাদু, অযথাই সময় নাশ! দেশি ফল হলে দু'তিন বছরে কত খেতে পারতে তুমি। এখন মিষ্টি বানাতে যাবে আরও সময়। সেই আঙুর ফলকে টক বলবে না, মিষ্টি বলবে কউ?
বিলেতে দুই যুগ কাটিয়ে লতিফ মিয়া ফিরল বাড়িতে। পুরনো ঘরদোর ভেঙে নতুন দালান উঠল। জমিজমা চাষবাস করতে এলো একখানা ট্রাক্টর। পুকুর সংস্কার হলো এবং তাতে মাছের পোনা পড়ল। ফলের পুরনো গাছগুলো ফেলা হলো কেটে।
যারা লতিফ-দাদুর সমবয়েসী তারা হা-হা করে উঠল, 'আহা-হা করো কী? ফলবতী গাছ কাটতে নেই। তোমার তো অনেক জমি, নতুন গাছ ওখানে লাগাও।'
ব্যাজার হয়ে গেল তার মুখ, 'কী সব আবোল-তাবোল বকছো তোমরা! আম-জাম-কাঁঠালের মতো বাজে গাছ রেখে লাভ কী?'
'বাজে গাছ!' সমবয়েসীরা হতবাক, 'তোমাদের বাগানে আরও কত রকমের ফল গাছ_ আমড়া, ডেফল, চালতা, জাম্বুরা, বড়ই, আমলকী_ সব কেটে ফেলবে?'
লতিফ দাদুর কপাল কুঁচকে গেল, 'এসব রাখার মানে কী? তোমরা খাও না, বিক্রি হয়। বাজার থেকে তো আঙুর, আপেল, নাশপাতি হরদম আগুনে-দামে কিনছো। ... আমাকে কেন উপদেশ দিচ্ছো আম-জাম-জাম্বুরা গাছ রেখে দিতে?'
সমবয়সী একজন বলল, 'আফটার অল লতিফ, দেশি ফলের বাগান-কেটে ফেলা বোধহয় ঠিক হবে না।'
সে পরামর্শ তিনি শুনলেন না।
গড়ে উঠল আঙুর-আপেলের বাগান।
দিনের পর দিন যায়, মাসের পর মাস, তারপর বছর। গাছ বাড়ে, ফুলই হয় না, ফল তো দূরের কথা। দিন আরও গড়ায়। পাড়ি দেয় মাস হয়ে বছরে। সব চুল-দাঁড়ি শাদা হয়ে যায়।
একদিন ফুল আসে। ঝরে যায় কিছুদিন যেতে না যেতেই। পরের বছর আবার ফুল আসে। শাদা চুল ও দাড়িঅলার হাতে লাঠি ভর করে ঠুকঠুক শব্দ শোনা যায় আঙুর লতার ঝোপের আশপাশে।
কিছুদিন যেতে না যেতেই আঙুরলতার ঝোপ থেকে চিৎকার ভেসে আসে কারও- 'ধরছে, ধরছে।'
তখন বিকেল। ঘর থেকে সবে বেরিয়েছি মাত্র, মনে হলো ভাগ্য সদয়। আমার আর বুঝতে বাকি রইল না, লতিফ দাদুর বাগানে আঙুর ধরেছে। মিষ্টি গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে চারপাশে। সাধে কী আর আমাকে পণ্ডিত বলে?
পায়ে পায়ে কাছে গেলাম বাগানের। ধারণা সত্যি। থোকা থোকা পাকা আঙুর ঝুলছে। যেদিক চোখ যায়, সেদিকে আঙুর। আমার জিবে জল এসে গেল। এরকম পাকা ফল দেখলে কার না লোভ হবে বলো?
লাফ দিয়ে নাগালে পাওয়া গেল এক থোকা।
মুখে দিতেই শরীরের লোম শিরশিরিয়ে উঠল।
এত টক?
মন খারাপ হলো আমার। বেচারা লতিফ দাদু, অযথাই সময় নাশ! দেশি ফল হলে দু'তিন বছরে কত খেতে পারতে তুমি। এখন মিষ্টি বানাতে যাবে আরও সময়। সেই আঙুর ফলকে টক বলবে না, মিষ্টি বলবে কউ?
সুত্র : সমকাল
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত দিন