আকাশে উড়ে বেড়াবার সাধ প্রায় প্রতিটি মানুষেরই ছিলো। কেউ কেউ নানাভাবে আকাশে উড়তে চেষ্টা করেছেনও। তবে সফল হননি তারা। কারণ কী করে, কোন প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে বাতাসের ওপর ভেসে থাকা যায়, তা তখনো জানতেন না তারা।
একটি কার্যক্ষম উড়তে সক্ষম বিমান কে আবিষ্কার করেছিলেন? না, তিনি কোনো একক ব্যক্তি নন। তারা ছিলেন আপন দুই ভাই উইলবার রাইট আর অরভিল রাইট। উইলবার রাইট জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৮৬৭ সালে। তিনি মারা যান ১৯১২ সালে। অরভিল রাইটের জন্ম ১৮৭১ সালের ১৯ আগস্ট। তিনি মারা যান ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি। আমেরিকার ডেটনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তারা। তাদের বাবা মিলটন রাইট ছিলেন হার্সভিল কলেজের অধ্যাপক। পরে হন ধর্মযাজক। মায়ের নাম ছিলো সুসান রাইট।
১৮৮৯ সালের ৪ জুলাই মা সুসান মারা যাবার পর উইলবার ও অরভিল রোজগারের দিকে মনোযোগ দেন। তারা একটি পুরনো ছাপাখানা কিনে প্রকাশনা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু মাত্র এক বছর পর ছাপাখানা বন্ধ করে সাইকেল বিক্রি ও মেরামতের কাজে লেগে যান। ব্যবসা ভালোই জমে ওঠে। হাতে আসে সচ্ছলভাবে চলার মতো টাকা-পয়সা।
এ সময় একটি খবর পরে অরভিল জানতে পারেন যে, লিলিয়েনথাল নামে এক জার্মান বিজ্ঞানী পাখির মতো ডানা বানিয়ে আকাশে উড়তে চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। কিছুদিন আগে পাহাড়ের চূড়া থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে মারা গেছেন তিনি।
এই খবরটি আমূল বদলে দেয় দু’ভাইকে। তারা সিদ্ধান্ত নেন লিলিয়েনথাল যা করতে পারেননি তারা তা করবেন। আকাশে উড়ে বেড়াবার মতো ইঞ্জিন আবিষ্কার করে বিশ্ববাসীকে চমকে দেবেন।
এ সিদ্ধান্ত নেয়ার পর দুই ভাই দ্রুত কাজে নেমে পড়েন। বাতাসের গতি ও প্রকৃতির ওপর ব্যাপক পড়াশোনা করেন। বিভিন্ন ধরনের ইঞ্জিন সম্পর্কে হাতে-কলমে জ্ঞান অর্জন করেন। তারপর নানা ধরনের ইঞ্জিনবিহীন গ্লাইডার বানিয়ে উড়ে বেড়াবার ওপর প্রশিক্ষণ নেন। এভাবে বাতাসের প্রকৃতি ও আচরণ সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা অর্জনের পর ১৯০১ সালে ৯৮ পাউন্ড ওজনের গ্লাইডার নিয়ে প্রথম আকাশে ওড়েন উইলবার পরে অরভিল। দু’ভাই রাতের পর রাত জেগে পড়াশোনা চালিয়ে যান। বিভিন্ন ধরনের বিমানের মডেল এঁকে চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন।
১৯০৩ সালে রাইট ভাইদের সঙ্গে টার্চি টেলর নামে এক যন্ত্রবিদের সঙ্গে পরিচয় হয়। তিনি দু’ভাইকে সহযোগিতা করার জন্য হাত বাড়িয়ে দেন। তার সহযোগিতায় উইলবার তৈরি করেন ১২ হর্স পাওয়ারের একটি ইঞ্জিন। আর বানানো হয় ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের ডানাওয়ালা একটি বিমান। নাম দেয়া হয় ‘ফ্লাইয়ার-ওয়ান’। এটির ওজন গিয়ে দাঁড়ায় ৭৫০ পাউন্ডে। সেই ফ্লাইয়ার-ওয়ান নিয়ে ১৯০৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর প্রথম আকাশে ওড়েন উইলবার রাইট। মাত্র তিন সেকেন্ড পর মাটিতে নেমে আসে বিমান। মাটির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ওটা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে সেদিন ফিরে যান তারা। তবে ১৭ ডিসেম্বর দু’ভাই আবার চলে আসেন কিটি হক নামের জায়গাটিতে। এবার প্রথম ওড়েন অরভিল। সাতাশ মাইল বেগে প্রবাহিত বাতাসের বিপরীতে ১২ সেকেন্ড উড়ে ১২০ ফুট পথ উড়তে সক্ষম হয় ফ্লাইয়ার ওয়ান। সেদিন দু’ভাই মোট তিনবার আকাশে ওড়েন। দ্বিতীয়বার পনেরো সেকেন্ড উড়তে সক্ষম হন অরভিল। তৃতীয়বার উইলবার উড়ে বেড়ান ৫৯ সেকেন্ড। এ সময়ের মধ্যে অতিক্রম করেন ৮৫২ ফুট আকাশ পথ। ১৯০৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর মানুষের পক্ষে প্রথম সম্ভব হয়েছিলো যান্ত্রিক যানে চড়ে আকাশে ভ্রমণ। তাই এ দিনটিকে বিমান আবিষ্কারের দিন বলে মেনে নেয়া হয়েছে। এর পর ফ্লাইয়ার-টু নামে আরেকটি বিমানে ১৬ হর্স পাওয়ারের মেশিন ব্যবহার করে একশো পাঁচবার আকাশে ওড়েন। বিমান শিল্প যতো দ্রুত উন্নতি লাভ করে এমন সৌভাগ্য আর কোনো শিল্পের ভাগ্যে জোটেনি। ভবিষ্যতে বিমান শিল্প আরো উন্নতি লাভ করবে এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত।
একটি কার্যক্ষম উড়তে সক্ষম বিমান কে আবিষ্কার করেছিলেন? না, তিনি কোনো একক ব্যক্তি নন। তারা ছিলেন আপন দুই ভাই উইলবার রাইট আর অরভিল রাইট। উইলবার রাইট জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৮৬৭ সালে। তিনি মারা যান ১৯১২ সালে। অরভিল রাইটের জন্ম ১৮৭১ সালের ১৯ আগস্ট। তিনি মারা যান ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি। আমেরিকার ডেটনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তারা। তাদের বাবা মিলটন রাইট ছিলেন হার্সভিল কলেজের অধ্যাপক। পরে হন ধর্মযাজক। মায়ের নাম ছিলো সুসান রাইট।
১৮৮৯ সালের ৪ জুলাই মা সুসান মারা যাবার পর উইলবার ও অরভিল রোজগারের দিকে মনোযোগ দেন। তারা একটি পুরনো ছাপাখানা কিনে প্রকাশনা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু মাত্র এক বছর পর ছাপাখানা বন্ধ করে সাইকেল বিক্রি ও মেরামতের কাজে লেগে যান। ব্যবসা ভালোই জমে ওঠে। হাতে আসে সচ্ছলভাবে চলার মতো টাকা-পয়সা।
এ সময় একটি খবর পরে অরভিল জানতে পারেন যে, লিলিয়েনথাল নামে এক জার্মান বিজ্ঞানী পাখির মতো ডানা বানিয়ে আকাশে উড়তে চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। কিছুদিন আগে পাহাড়ের চূড়া থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে মারা গেছেন তিনি।
এই খবরটি আমূল বদলে দেয় দু’ভাইকে। তারা সিদ্ধান্ত নেন লিলিয়েনথাল যা করতে পারেননি তারা তা করবেন। আকাশে উড়ে বেড়াবার মতো ইঞ্জিন আবিষ্কার করে বিশ্ববাসীকে চমকে দেবেন।
এ সিদ্ধান্ত নেয়ার পর দুই ভাই দ্রুত কাজে নেমে পড়েন। বাতাসের গতি ও প্রকৃতির ওপর ব্যাপক পড়াশোনা করেন। বিভিন্ন ধরনের ইঞ্জিন সম্পর্কে হাতে-কলমে জ্ঞান অর্জন করেন। তারপর নানা ধরনের ইঞ্জিনবিহীন গ্লাইডার বানিয়ে উড়ে বেড়াবার ওপর প্রশিক্ষণ নেন। এভাবে বাতাসের প্রকৃতি ও আচরণ সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা অর্জনের পর ১৯০১ সালে ৯৮ পাউন্ড ওজনের গ্লাইডার নিয়ে প্রথম আকাশে ওড়েন উইলবার পরে অরভিল। দু’ভাই রাতের পর রাত জেগে পড়াশোনা চালিয়ে যান। বিভিন্ন ধরনের বিমানের মডেল এঁকে চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন।
১৯০৩ সালে রাইট ভাইদের সঙ্গে টার্চি টেলর নামে এক যন্ত্রবিদের সঙ্গে পরিচয় হয়। তিনি দু’ভাইকে সহযোগিতা করার জন্য হাত বাড়িয়ে দেন। তার সহযোগিতায় উইলবার তৈরি করেন ১২ হর্স পাওয়ারের একটি ইঞ্জিন। আর বানানো হয় ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের ডানাওয়ালা একটি বিমান। নাম দেয়া হয় ‘ফ্লাইয়ার-ওয়ান’। এটির ওজন গিয়ে দাঁড়ায় ৭৫০ পাউন্ডে। সেই ফ্লাইয়ার-ওয়ান নিয়ে ১৯০৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর প্রথম আকাশে ওড়েন উইলবার রাইট। মাত্র তিন সেকেন্ড পর মাটিতে নেমে আসে বিমান। মাটির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ওটা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে সেদিন ফিরে যান তারা। তবে ১৭ ডিসেম্বর দু’ভাই আবার চলে আসেন কিটি হক নামের জায়গাটিতে। এবার প্রথম ওড়েন অরভিল। সাতাশ মাইল বেগে প্রবাহিত বাতাসের বিপরীতে ১২ সেকেন্ড উড়ে ১২০ ফুট পথ উড়তে সক্ষম হয় ফ্লাইয়ার ওয়ান। সেদিন দু’ভাই মোট তিনবার আকাশে ওড়েন। দ্বিতীয়বার পনেরো সেকেন্ড উড়তে সক্ষম হন অরভিল। তৃতীয়বার উইলবার উড়ে বেড়ান ৫৯ সেকেন্ড। এ সময়ের মধ্যে অতিক্রম করেন ৮৫২ ফুট আকাশ পথ। ১৯০৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর মানুষের পক্ষে প্রথম সম্ভব হয়েছিলো যান্ত্রিক যানে চড়ে আকাশে ভ্রমণ। তাই এ দিনটিকে বিমান আবিষ্কারের দিন বলে মেনে নেয়া হয়েছে। এর পর ফ্লাইয়ার-টু নামে আরেকটি বিমানে ১৬ হর্স পাওয়ারের মেশিন ব্যবহার করে একশো পাঁচবার আকাশে ওড়েন। বিমান শিল্প যতো দ্রুত উন্নতি লাভ করে এমন সৌভাগ্য আর কোনো শিল্পের ভাগ্যে জোটেনি। ভবিষ্যতে বিমান শিল্প আরো উন্নতি লাভ করবে এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত।
সূত্র : আমার দেশ
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত দিন