খোদাভীতি ও তাকওয়া অর্জনের অপূর্ব সুযোগের মাস রমজান। আমাদের মুত্তাকি হওয়ার জন্যই আল্লাহতায়ালা আমাদের ওপর রোজা ফরজ করেছেন। কালামে পাকে পরিষ্কার বলে দিয়েছেন—“হে মুমিনগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর, যেন তোমরা মুত্তাকি হতে পার” (বাকারা-১৮৪)। মহান রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জনের অত্যন্ত কার্যকরী ও সহজ মাধ্যম হলো রোজা। রহমত, বরকত ও নাজাতের এ মাসে বড় বড় আমলের পাশাপাশি ছোট ছোট বহু আমলের মাধ্যমে আমাদের নাজাতের পথ সহজ করে দিয়েছেন। খুলে দিয়েছেন দুর্বল মানুষের মুক্তির অসংখ্য পথ। ঘোষণা করেছেন, ছোট ও সহজ একটি আমলও আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং নাজাতের জন্য যথেষ্ট হতে পারে। একটি আমল হচ্ছে, কাজের লোক ও অধীনস্থদের প্রতি সদয় হওয়া। হজরত সালমান ফার্সি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলে পাক (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে দাস,-দাসীদের, কাজের লোকদের কাজের বোঝা হালকা করে দেয়; আল্লাহ তাদের মাফ করে দেন এবং দোজখের আজাব থেকে নাজাত দান করেন।’ (মেশকাত, বায়হাকি)। ছোট্ট এই আমলটা ইচ্ছা করলে সহজেই আমরা করতে পারি। একটু লক্ষ্য করলেই হয়, আমার বাড়ির কাজের ছেলেটি বা মেয়েটির কাজ যদি সামান্য কমিয়ে দিই, তার প্রতি একটু সদয় হই; অফিসে কিংবা দোকানে যে লোকটি আমার অধীনে কাজ করে ইচ্ছা করলেই তার মাধ্যমে আমি নিশ্চিত দুটি পুরস্কার লাভ করতে পারি। ১. আল্লাহর সন্তুষ্টি ও ২. জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি। কত সহজ এ আমল! আমলের জন্য আপনার ইচ্ছেই যথেষ্ট। কাজের তাগিদে রমজানেও আমাদের যথারীতি ঘরের বাইরে যেতে হয়; সব সময়ের রুটিনের কাজ আনজাম দিতে হয়। নিজেদের দুর্বলতার দরুন অন্যের সহযোগিতা নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে আমরা যদি এ হাদিসের কথা মনে রাখি তবে আমল করা খুবই সহজ। ধরুন, রিকশায় উঠে রোজাদার রিকশাচালকের প্রতি সদয় হয়ে একটু আস্তে চালাতে বললাম, সম্ভব হলে ভাড়াটাও একটু বাড়িয়ে দিলাম, এ মাসে কাজের লোকদের বেতনের প্রতি যথাসম্ভব বাড়তি খেয়াল রাখলাম। এভাবে কেউ যদি রাসুলে আরাবির এ হাদিস স্মরণ রাখেন এবং আমলের সুযোগ খুঁজতে থাকেন, দেখা যাবে নিজের অজান্তেই মাহে রমজানের এক একটি দিনের ছোট ছোট আমল তার জন্য বয়ে নিয়ে আসবে চূড়ান্ত সফলতা। অনেক সময় দেখা যায়, আমরা অন্যের বেলায় এ কাজগুলো করি কিন্তু নিজের খুব কাছের-ঘরের মানুষের বেলায় তা ভুলে যাই। নিজের স্ত্রীর সঙ্গে আচরণে সাধারণ সৌজন্যটুকুর কথাও মনে থাকে না। এদিকে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি কাম্য।
মাহে রমজান আমাদের সুন্দর, ভারসাম্যপূর্ণ ও সহমর্মী জীবনযাপনের মাধ্যমে সব সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে তাকওয়া হাসিলের পথ সহজ ও সুগম করে তুলুক। আমীন।
মাহে রমজান আমাদের সুন্দর, ভারসাম্যপূর্ণ ও সহমর্মী জীবনযাপনের মাধ্যমে সব সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে তাকওয়া হাসিলের পথ সহজ ও সুগম করে তুলুক। আমীন।
লেখক : প্রাবন্ধিক, শিক্ষক
সূত্র : আমার দেশ
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত দিন