শিশু জন্মের পর ধাপে ধাপে বেড়ে ওঠে। এই বেড়ে ওঠার পর্যায়গুলো যথাক্রমে শৈশব, কৈশোর, যৌবন ও প্রৌঢ়- মানুষের জীবনে বেড়ে ওঠার এই প্রতিটি ধাপই গুরুত্বপূর্ণ। বিশাল সাগর পাড়ি দিয়ে কিনারায় পৌঁছতে হয়। এ জন্য প্রয়োজন বাবা-মায়ের সাহায্য সহযোগিতা। বাবা-মাকে হতে হবে দক্ষ নাবিক। শক্ত হাতে হাল ধরতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ কৈশোর। এ স্তরে এসে ছেলেমেয়েদের শারীরিক গঠনের পরিবর্তন হয়। যেমন, ছেলেদের কণ্ঠস্বর পরিবর্তন হয় দাড়ি-গোঁফ গজায়, মাংসপেশি শক্ত হয়, বুকে-বগলে লোম দেখা দেয়। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বাড়ে। ঠিক তেমনি মেয়েদেরও শারীরিক নানা পরিবর্তন হয়, ঋতুস্রাব শুরু হয়, লাজুকতা বাড়ে। এই পরিবর্তনের সময়টাকে বলা হয় বয়ঃসন্ধিকাল। সাধারণত ১২-১৩ বছর বয়সে এই পরিবর্তন শুরু হয় থাকে। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সবময় বাবা-মাকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে, তাদের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। তা নাহলে ভয়াবহ পরিণতি হবে। এ সময়টা ছোটদের সঙ্গে মিশলে দেখতে ভালো দেখায় না, মনে হয় বুদ্ধি জ্ঞান হয়নি। আবার বড়দের সঙ্গে মিশলে অস্বাভাবিক লাগে। এটা একটা কঠিন সময়। অনেক বাবা-মা বোঝেও না বয়ঃসন্ধি কখন হয়। ছেলেমেয়েদের প্রতি একটু লক্ষ্য রাখলেই বুঝতে পারবে। হঠাত্ করে ছেলে বা মেয়েটি উদাসীন, পড়াশোনায় মন বসে না। ছোট ভাইবোনের সঙ্গে মেজাজ দেখায়। মা-বাবার কথা শুনতে ইচ্ছে করে না। অনেক সময় টিভি দেখতে ভালো লাগে আবার অনেক সময় জোরে গান শুনতে ইচ্ছে হয়। হঠাত্ করে চুপচাপ থাকতে ভালো লাগে।
অনেক সময় আড্ডা ভালো লাগে। তখন মা-বাবার উচিত ছেলেমেয়েদের সঙ্গে বন্ধুসুলভ ব্যবহার করা। ওদের ভালো লাগা, মন্দ লাগা নিয়ে, ওদের সঙ্গে মুক্ত আলোচনা করা। কিন্তু আমাদের দেশের বাবা-মা উল্টো আচরণ করেন। বন্ধু তো দূরের কথা, শত্রুর মতো ব্যবহার করে শাসন করার নামে। এটা করেছ কেন? ওটা করেছ কেন? তখন ছেলেমেয়েরা মা-বাবাকে ভয় ও লজ্জা পায়। চঞ্চলতা, উত্ফুল্লতা রেখে নিজেকে গুটিয়ে নেয়। নিজের ইচ্ছেকে হত্যা করে যন্ত্রচালিত মানব হয়। একটি মেয়ের মা-ই ভালো বন্ধু হতে পারেন। এক্ষেত্রে মাকে এগিয়ে আসতে হবে সবার আগে। যেমন ঋতুচক্র বা মাসিক একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এটা ভয়ভীতি বা লজ্জার কিছু না। এটা মেয়েদের জীবনে মা হওয়ার প্রথম ধাপ। এগুলো মেয়ের সঙ্গে আলোচনা করা যেতে পারে। এটা সব মেয়ের জীবনেই হয়। আমার হয়েছে, তোমার নানির হয়েছে, তোমার খালামনির হয়েছে। ঋতুস্রাবের সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে পরামর্শ দিতে পারেন। প্যাড-প্যান্টি কিনে দিতে পারেন। উষ্ণ গরম পানি ব্যবহার করতে বলতে পারেন। তখন পুষ্টিকর খাবার দিতে পারেন। ঠিক ছেলেদের তেমন যত্ন নিতে হবে। শেভিংক্রিম, লোশন কিনে দিতে পারেন। অনেক মা-বাবা ওই সময়টাকে না বুঝে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন এতে হিতে বিপরীত হয়।
মিতু দশম শ্রেণীর ছাত্রী, লেখাপড়ায় খুব ভালো ৫ম ও ৮ম শ্রেণীতে বৃত্তি পেয়েছে। ক’দিন ধরে মনটা খারাপ, লেখাপড়ার মন বসে না। বাবা দূরে থাকে। মা মারধর করে। গালাগাল করে। বাড়ি থেকে বের হতে বলে। মিতু জিদ করে বাড়ি থেকে বের হয়। ওর মা-ও পেছন পেছন ছুটছিল কিন্তু নাগাল পেল না। বাসে চড়ে বরিশাল যায়। সেখান থেকে রুপাতলি বাসস্ট্যান্ডে যায়। টিকিট করতে গিয়ে কয়েকটা বখাটে ছেলের চোখে পড়ে। কোথায় যাবে, কার সঙ্গে যাবে একা না সঙ্গে কেউ আছে এসব প্রশ্নে জর্জরিত করে। ঠিক সন্ধ্যায় ওকে নিয়ে ভিড় জমে যায়, অনেকে তামাশা করে ঠাট্টা করে। ওর ভাগ্য ভালো এমন সময় ওর এক আত্মীয়ের চোখে পড়ে। সেখানে বিব্রত অবস্থায় পড়ে। ওকে ওই জঘন্যপুরি থেকে উদ্ধার করে বাড়ি নেয়ে আসে, তখন রাত ১১টা ৩০ মিনিট। এ বয়সটায় জিদ থাকে বেশি আত্মসম্মান থাকে বেশি। সাহস থাকে দূরন্ত যে কোনো কাজ করে বসতে পারে। মিতুর মায়ের উচিত ছিল মেয়েকে বোঝানো, তুমি ভালো ছাত্রী, লেখাপড়া না করলে ভালো রেজাল্ট করতে পারবে না। ভাবা যায়—যদি ওর আত্মীয় না দেখত তাহলে ওর অবস্থা কী হতো রিতা ভালো ছাত্রী লাজুক স্বভাবের। মা-বাবা দুজনে চাকরিজীবী। মেয়েকে কড়া শাসনে রাখেন। কারও সামনে যাওয়া যাবে না। ছাদে ওঠা নিষেধ। পাশের বাসায় যাওয়া যাবে না কারণ ওই বাসায় একটি ছেলে আছে। রিতারও সেই বাসার প্রতিই প্রবল আকর্ষণ এর মধ্যে কিভাবে ওই বাসার ছেলে জসিমের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এসএসসি পরীক্ষার আগেই রিতা পালিয়ে যায় জসিমের সঙ্গে।
এখানেই রিতার পড়াশোনা ইতি। কি উজ্জ্বল ভবিষ্যত্ ছিল মেয়েটির। মা-বাবা অতিরিক্ত শাসনের কারণে তা নষ্ট হয়েছে। মা-বাবা বন্ধু হয়ে ওর সমস্যা সমাধান করতে পারতেন।
জলিল বাবাকে বাঘের মতো ভয় পায়। পড়াশোনায় ভালো ছিল। একদিন বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে একটা সিগারেট খায়। এ খবর বাবার কাছে পৌঁছে যায়। বাবা প্রচুর মারধর করলেন। জলিল রাগ করে অন্য ঘরে ঘুমাতে গেল। মা-বাবা খেতে ও ডাকলেন না। পরের দিন মায়ের সোনার গয়না চুরি করে ঢাকা চলে যায়। লেখাপড়ার সমাপ্তি ঘটে। সেদিন বাবা বুঝতে পারত ধূমপানের কুফলগুলো। শাসন নয় আদর সোহাগ করে ওকে বোঝানো যেত।
ছেলেমেয়েদের অন্য বাড়ি ঘুমাতে দেয়া ঠিক নয়। এতে ছেলেমেয়ে নষ্ট হতে পারে। ছেলেমেয়ে কাদের সঙ্গে মিশে আড্ডা দেয়, বন্ধুত্ব করে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ছেলেমেয়েদের ওপর এমনভাবে নজর রাখতে হবে যাতে ওরা বুঝতে না পারে। মেয়েদের সাধারণত চাচা তো ভাই মামা তো ভাই এদের সঙ্গে একা ছাড়া উচিত নয়। যেখানে যেতে হবে মা অথবা বাবা সঙ্গে নিয়ে যাবেন। পরিবারে শান্তি সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ বিবাদ ঝগড়াঝাটি থাকলে এর প্রভাব সন্তানের ওপর পড়ে। মা-বাবার চরিত্রের প্রভাব সন্তানের ওপর পড়ে। তুলির বাবা গ্রামের মেম্বর। ওর বয়সী একটা মেয়েকে বিয়ে করে আনে। বাবার ওপর তুলির রাগ-ঘৃণা ক্ষোভ, বাবার সঙ্গে কথা বলা ছেড়ে দেয়। পরে তুলি বাবার সংসার ছেড়ে ওর ভালোবাসার মানুষটির সঙ্গে চলে যায়। তুলি পড়াশোনায় ভালো ছিল শুধু ওর বাবার কারণে সোনালি ভবিষ্যত্ নষ্ট হয়েছে; বাবা-মায়ের উচিত এমন কোনো কাজ না করা যার প্রভাব সন্তানের ওপর পড়ে।
আজকের শিশু আগামী দিনের সুনাগরিক। ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা, সব শিশুরই অন্তরে। একটা বহুতল বিল্ডিং করতে হলে যেমন এর ভিত্তি মজবুত করতে হয়; ঠিক তেমনি বয়ঃসন্ধিকালে সন্তানদের সঠিক পরিচর্যা করতে পারলে সন্তানের আর বিপথে যাওয়ার সুযোগ থাকে না। মা-বাবাকে অনেক দক্ষ সচেতন হতে হবে। সন্তানের কারা বন্ধু সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কথায় বলে না, সত্ সঙ্গে স্বর্গে বাস অসত্ সঙ্গে সর্বনাশ। সন্তানদের সময় দিতে হবে। বর্তমান সময় যদিও মা-বাবা দুজনই কর্মজীবী ব্যস্ত থাকেন। তারপরও কিছুটা সময় সন্তানদের জন্য রাখতে হবে। ছুটির দিন পুরো দিনটাই সন্তানের জন্য রাখবেন। সম্ভব হলে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে বেড়াতে নিয়ে যেতে পারেন। এতে সন্তানের জ্ঞান বৃদ্ধি পায়, মনও প্রফুল্ল থাকে। বন্ধুর মতো মিশতে হবে সন্তানদের সঙ্গে। তাহলে সন্তানও কোনো কথা লুকাবে না বাবা-মাকে। ফলে বড় ধরনের অন্যায় করতে পারবে না। সন্ত্রাসীর সংখ্যা কমবে, হানাহানি, মারামারি কমবে। দেশের অরাজকতা কমবে। সুনাগরিকের সংখ্যা বাড়বে। একদিন দেশ উন্নয়নের স্বর্ণ শিখরে পৌঁছবে।
অনেক সময় আড্ডা ভালো লাগে। তখন মা-বাবার উচিত ছেলেমেয়েদের সঙ্গে বন্ধুসুলভ ব্যবহার করা। ওদের ভালো লাগা, মন্দ লাগা নিয়ে, ওদের সঙ্গে মুক্ত আলোচনা করা। কিন্তু আমাদের দেশের বাবা-মা উল্টো আচরণ করেন। বন্ধু তো দূরের কথা, শত্রুর মতো ব্যবহার করে শাসন করার নামে। এটা করেছ কেন? ওটা করেছ কেন? তখন ছেলেমেয়েরা মা-বাবাকে ভয় ও লজ্জা পায়। চঞ্চলতা, উত্ফুল্লতা রেখে নিজেকে গুটিয়ে নেয়। নিজের ইচ্ছেকে হত্যা করে যন্ত্রচালিত মানব হয়। একটি মেয়ের মা-ই ভালো বন্ধু হতে পারেন। এক্ষেত্রে মাকে এগিয়ে আসতে হবে সবার আগে। যেমন ঋতুচক্র বা মাসিক একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এটা ভয়ভীতি বা লজ্জার কিছু না। এটা মেয়েদের জীবনে মা হওয়ার প্রথম ধাপ। এগুলো মেয়ের সঙ্গে আলোচনা করা যেতে পারে। এটা সব মেয়ের জীবনেই হয়। আমার হয়েছে, তোমার নানির হয়েছে, তোমার খালামনির হয়েছে। ঋতুস্রাবের সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে পরামর্শ দিতে পারেন। প্যাড-প্যান্টি কিনে দিতে পারেন। উষ্ণ গরম পানি ব্যবহার করতে বলতে পারেন। তখন পুষ্টিকর খাবার দিতে পারেন। ঠিক ছেলেদের তেমন যত্ন নিতে হবে। শেভিংক্রিম, লোশন কিনে দিতে পারেন। অনেক মা-বাবা ওই সময়টাকে না বুঝে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন এতে হিতে বিপরীত হয়।
মিতু দশম শ্রেণীর ছাত্রী, লেখাপড়ায় খুব ভালো ৫ম ও ৮ম শ্রেণীতে বৃত্তি পেয়েছে। ক’দিন ধরে মনটা খারাপ, লেখাপড়ার মন বসে না। বাবা দূরে থাকে। মা মারধর করে। গালাগাল করে। বাড়ি থেকে বের হতে বলে। মিতু জিদ করে বাড়ি থেকে বের হয়। ওর মা-ও পেছন পেছন ছুটছিল কিন্তু নাগাল পেল না। বাসে চড়ে বরিশাল যায়। সেখান থেকে রুপাতলি বাসস্ট্যান্ডে যায়। টিকিট করতে গিয়ে কয়েকটা বখাটে ছেলের চোখে পড়ে। কোথায় যাবে, কার সঙ্গে যাবে একা না সঙ্গে কেউ আছে এসব প্রশ্নে জর্জরিত করে। ঠিক সন্ধ্যায় ওকে নিয়ে ভিড় জমে যায়, অনেকে তামাশা করে ঠাট্টা করে। ওর ভাগ্য ভালো এমন সময় ওর এক আত্মীয়ের চোখে পড়ে। সেখানে বিব্রত অবস্থায় পড়ে। ওকে ওই জঘন্যপুরি থেকে উদ্ধার করে বাড়ি নেয়ে আসে, তখন রাত ১১টা ৩০ মিনিট। এ বয়সটায় জিদ থাকে বেশি আত্মসম্মান থাকে বেশি। সাহস থাকে দূরন্ত যে কোনো কাজ করে বসতে পারে। মিতুর মায়ের উচিত ছিল মেয়েকে বোঝানো, তুমি ভালো ছাত্রী, লেখাপড়া না করলে ভালো রেজাল্ট করতে পারবে না। ভাবা যায়—যদি ওর আত্মীয় না দেখত তাহলে ওর অবস্থা কী হতো রিতা ভালো ছাত্রী লাজুক স্বভাবের। মা-বাবা দুজনে চাকরিজীবী। মেয়েকে কড়া শাসনে রাখেন। কারও সামনে যাওয়া যাবে না। ছাদে ওঠা নিষেধ। পাশের বাসায় যাওয়া যাবে না কারণ ওই বাসায় একটি ছেলে আছে। রিতারও সেই বাসার প্রতিই প্রবল আকর্ষণ এর মধ্যে কিভাবে ওই বাসার ছেলে জসিমের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এসএসসি পরীক্ষার আগেই রিতা পালিয়ে যায় জসিমের সঙ্গে।
এখানেই রিতার পড়াশোনা ইতি। কি উজ্জ্বল ভবিষ্যত্ ছিল মেয়েটির। মা-বাবা অতিরিক্ত শাসনের কারণে তা নষ্ট হয়েছে। মা-বাবা বন্ধু হয়ে ওর সমস্যা সমাধান করতে পারতেন।
জলিল বাবাকে বাঘের মতো ভয় পায়। পড়াশোনায় ভালো ছিল। একদিন বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে একটা সিগারেট খায়। এ খবর বাবার কাছে পৌঁছে যায়। বাবা প্রচুর মারধর করলেন। জলিল রাগ করে অন্য ঘরে ঘুমাতে গেল। মা-বাবা খেতে ও ডাকলেন না। পরের দিন মায়ের সোনার গয়না চুরি করে ঢাকা চলে যায়। লেখাপড়ার সমাপ্তি ঘটে। সেদিন বাবা বুঝতে পারত ধূমপানের কুফলগুলো। শাসন নয় আদর সোহাগ করে ওকে বোঝানো যেত।
ছেলেমেয়েদের অন্য বাড়ি ঘুমাতে দেয়া ঠিক নয়। এতে ছেলেমেয়ে নষ্ট হতে পারে। ছেলেমেয়ে কাদের সঙ্গে মিশে আড্ডা দেয়, বন্ধুত্ব করে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ছেলেমেয়েদের ওপর এমনভাবে নজর রাখতে হবে যাতে ওরা বুঝতে না পারে। মেয়েদের সাধারণত চাচা তো ভাই মামা তো ভাই এদের সঙ্গে একা ছাড়া উচিত নয়। যেখানে যেতে হবে মা অথবা বাবা সঙ্গে নিয়ে যাবেন। পরিবারে শান্তি সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ বিবাদ ঝগড়াঝাটি থাকলে এর প্রভাব সন্তানের ওপর পড়ে। মা-বাবার চরিত্রের প্রভাব সন্তানের ওপর পড়ে। তুলির বাবা গ্রামের মেম্বর। ওর বয়সী একটা মেয়েকে বিয়ে করে আনে। বাবার ওপর তুলির রাগ-ঘৃণা ক্ষোভ, বাবার সঙ্গে কথা বলা ছেড়ে দেয়। পরে তুলি বাবার সংসার ছেড়ে ওর ভালোবাসার মানুষটির সঙ্গে চলে যায়। তুলি পড়াশোনায় ভালো ছিল শুধু ওর বাবার কারণে সোনালি ভবিষ্যত্ নষ্ট হয়েছে; বাবা-মায়ের উচিত এমন কোনো কাজ না করা যার প্রভাব সন্তানের ওপর পড়ে।
আজকের শিশু আগামী দিনের সুনাগরিক। ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা, সব শিশুরই অন্তরে। একটা বহুতল বিল্ডিং করতে হলে যেমন এর ভিত্তি মজবুত করতে হয়; ঠিক তেমনি বয়ঃসন্ধিকালে সন্তানদের সঠিক পরিচর্যা করতে পারলে সন্তানের আর বিপথে যাওয়ার সুযোগ থাকে না। মা-বাবাকে অনেক দক্ষ সচেতন হতে হবে। সন্তানের কারা বন্ধু সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কথায় বলে না, সত্ সঙ্গে স্বর্গে বাস অসত্ সঙ্গে সর্বনাশ। সন্তানদের সময় দিতে হবে। বর্তমান সময় যদিও মা-বাবা দুজনই কর্মজীবী ব্যস্ত থাকেন। তারপরও কিছুটা সময় সন্তানদের জন্য রাখতে হবে। ছুটির দিন পুরো দিনটাই সন্তানের জন্য রাখবেন। সম্ভব হলে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে বেড়াতে নিয়ে যেতে পারেন। এতে সন্তানের জ্ঞান বৃদ্ধি পায়, মনও প্রফুল্ল থাকে। বন্ধুর মতো মিশতে হবে সন্তানদের সঙ্গে। তাহলে সন্তানও কোনো কথা লুকাবে না বাবা-মাকে। ফলে বড় ধরনের অন্যায় করতে পারবে না। সন্ত্রাসীর সংখ্যা কমবে, হানাহানি, মারামারি কমবে। দেশের অরাজকতা কমবে। সুনাগরিকের সংখ্যা বাড়বে। একদিন দেশ উন্নয়নের স্বর্ণ শিখরে পৌঁছবে।
সূত্র : আমার দেশ
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত দিন