স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করার সময় লিমার ফোন নম্বর পেয়েছিলাম।
সংক্ষিপ্ত জীবনবৃত্তান্ত ছিল : ‘তালাকপ্রাপ্তা, নিঃসন্তান, ধর্মভীরু...।’
ফোন ধরেই জিজ্ঞেস করল—আমার নম্বর পেলেন কীভাবে?
সত্যি কথাটাই বললাম, স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকায় ইসনা থেকে নিয়েছি।
—ইসনা কী?
—কেন? তুমি যে ম্যাট্রিমনিয়াল সার্চ দিয়েছ ইসলামিক সোসাইটি অব নর্থ আমেরিকায়—
—ও আচ্ছা।
—দেখ লিমা, জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে টরোন্টোর ভিসা পেয়েছি। বিমানবন্দরে আসতে পারো। তার আগে তোমার একটি ছবি আমাকে পাঠাও।
—অবশ্যই।
ছবির সঙ্গে একটা ছোট্ট চিঠিও পেলাম : বাঙালি মা কি বিদেশিনী পুত্রবধূ পছন্দ করবেন?
বিমানবন্দরে সহযাত্রী ড. মার্ক গ্রিন তাঁর হোটেলে চলে গেলেন। আমি লিমাকে ফোন করলাম : কী ব্যাপার? এলে না যে!
—কলেজে বিশেষ ক্লাস চলছে, তাই যেতে পারিনি বলে দুঃখিত।
—আমার মাও এসেছেন তোমাকে দেখতে। আমরা তোমার কলেজেই অপেক্ষা করি না হয়।
—ঠিক আছে।
ক্যাফেটারিয়ায় কফিতে চুমুক দিতে দিতে লিমা বলল—বাসায় চলেন আপনারা। আমার বড় ভাই আছেন অভিভাবক। বাবা মারা গেছেন আমার পাঁচ বছর বয়সে।
লিমার চোখের রং বাদামি। খুবই সুন্দর লাগছে হালকা নীল জামায়।
—তোমার প্রথম স্বামী কী করতেন?
—ও কোনো কাজ করত না।
খাওয়া-দাওয়া ও বিশ্রাম শেষে দীর্ঘক্ষণ আলাপ-আলোচনায় সিদ্ধান্ত হলো যে, লিমার পরীক্ষা শেষেই বিয়ে হবে। আমিও ভাবলাম, মাত্র কয়টা দিনই তো। কিন্তু পরীক্ষার ফল বের হওয়ার আগেই লিমার চাকরি হয়ে গেল সৌদি আরবে। এরই মধ্যে আমারও হজ ভিসা চলে এসেছে।
দু’জনেই এক সঙ্গে হজও করলাম। ওর মাও হজ করলেন। ওর কর্মস্থলে আমারও বায়োডাটা জমা দিলাম। ওর বস বেশ প্রীত হলেন। খুব তাড়াতাড়ি আমাকেও নিয়োগপত্র দেবেন বলে জানালেন।
সুসংবাদটি দিয়ে লিমাকে বললাম : চলো, সেলিব্রেট করি।
—পূর্বরাগে আমি বিশ্বাস করি না। লিমার সংক্ষিপ্ত জবাব।
ছোটগল্প : নিয়োগপত্র
হেলাল মুহম্মদ আবু তাহের
একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আমার প্রতিবেশী। সৌজন্য সাক্ষাত্ শেষে আমার জীবনবৃত্তান্ত পেশ করার অনুমতি চাইলাম। সাদরে তিনি তা গ্রহণ করলেন এবং বেশ কিছুক্ষণ দেখার পর জানতে চাইলেন—তা আপনি কি পূর্ণকালীন না খণ্ডকালীন কাজ চান?
স্যার, এ আপনাদের ব্যাপার। এখনি যোগ দিতে হলে লিয়েন নেব দেড় বছর।
—থাক, মাত্র দেড় বছর লিয়েন না নিয়ে অপেক্ষা করুন।
—ঠিক আছে স্যার। ধন্যবাদ।
* * *
অবসর শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগে দেখা করলাম। জানতে চাইলাম—এখন আমার কী করণীয়?
—অবসরের পরদিন যোগ দেবেন। আচ্ছা, প্রারম্ভিক বেতন কত চান?
—আপনারা কত দিতে চাচ্ছেন?
—দেখুন, আমাদের প্রতিষ্ঠান একটু সমস্যায় আছে এখন, তাই আমরা আপাতত চল্লিশ হাজার দেব, কিছুদিন পর বাড়বে।
—বেশ ভালো। যোগ দেব।
* * *
অবসরের পর দিন যোগ দিতে গেলে পরিচালক সাদরে বরণ করলেন। গ্রন্থাগারিকও অনেকক্ষণ আলাপ করার পর বললেন, আচ্ছা আপনার নিয়োগপত্রটি কই?
নিয়োগপত্র সংগ্রহের উদ্দেশ্যে মহাসচিবের কাছে গেলাম। তিনি পাঠালেন সভাপতির কাছে। সভাপতি হঠাত্ অসুস্থ হয়ে পড়ায় দায়িত্ব পেলেন সহ-সভাপতি। তিনিও আমার প্রতিবেশী এবং অত্যন্ত সহানুভূতিশীল। কিন্তু এই মুহূর্তে কোনো সহযোগিতা করতে পারবেন না বলে সবিনয়ে জানালেন । কারণ নাকি মন্দা।
সুত্র : আমার দেশ
ফোন ধরেই জিজ্ঞেস করল—আমার নম্বর পেলেন কীভাবে?
সত্যি কথাটাই বললাম, স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকায় ইসনা থেকে নিয়েছি।
—ইসনা কী?
—কেন? তুমি যে ম্যাট্রিমনিয়াল সার্চ দিয়েছ ইসলামিক সোসাইটি অব নর্থ আমেরিকায়—
—ও আচ্ছা।
—দেখ লিমা, জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে টরোন্টোর ভিসা পেয়েছি। বিমানবন্দরে আসতে পারো। তার আগে তোমার একটি ছবি আমাকে পাঠাও।
—অবশ্যই।
ছবির সঙ্গে একটা ছোট্ট চিঠিও পেলাম : বাঙালি মা কি বিদেশিনী পুত্রবধূ পছন্দ করবেন?
বিমানবন্দরে সহযাত্রী ড. মার্ক গ্রিন তাঁর হোটেলে চলে গেলেন। আমি লিমাকে ফোন করলাম : কী ব্যাপার? এলে না যে!
—কলেজে বিশেষ ক্লাস চলছে, তাই যেতে পারিনি বলে দুঃখিত।
—আমার মাও এসেছেন তোমাকে দেখতে। আমরা তোমার কলেজেই অপেক্ষা করি না হয়।
—ঠিক আছে।
ক্যাফেটারিয়ায় কফিতে চুমুক দিতে দিতে লিমা বলল—বাসায় চলেন আপনারা। আমার বড় ভাই আছেন অভিভাবক। বাবা মারা গেছেন আমার পাঁচ বছর বয়সে।
লিমার চোখের রং বাদামি। খুবই সুন্দর লাগছে হালকা নীল জামায়।
—তোমার প্রথম স্বামী কী করতেন?
—ও কোনো কাজ করত না।
খাওয়া-দাওয়া ও বিশ্রাম শেষে দীর্ঘক্ষণ আলাপ-আলোচনায় সিদ্ধান্ত হলো যে, লিমার পরীক্ষা শেষেই বিয়ে হবে। আমিও ভাবলাম, মাত্র কয়টা দিনই তো। কিন্তু পরীক্ষার ফল বের হওয়ার আগেই লিমার চাকরি হয়ে গেল সৌদি আরবে। এরই মধ্যে আমারও হজ ভিসা চলে এসেছে।
দু’জনেই এক সঙ্গে হজও করলাম। ওর মাও হজ করলেন। ওর কর্মস্থলে আমারও বায়োডাটা জমা দিলাম। ওর বস বেশ প্রীত হলেন। খুব তাড়াতাড়ি আমাকেও নিয়োগপত্র দেবেন বলে জানালেন।
সুসংবাদটি দিয়ে লিমাকে বললাম : চলো, সেলিব্রেট করি।
—পূর্বরাগে আমি বিশ্বাস করি না। লিমার সংক্ষিপ্ত জবাব।
ছোটগল্প : নিয়োগপত্র
হেলাল মুহম্মদ আবু তাহের
একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আমার প্রতিবেশী। সৌজন্য সাক্ষাত্ শেষে আমার জীবনবৃত্তান্ত পেশ করার অনুমতি চাইলাম। সাদরে তিনি তা গ্রহণ করলেন এবং বেশ কিছুক্ষণ দেখার পর জানতে চাইলেন—তা আপনি কি পূর্ণকালীন না খণ্ডকালীন কাজ চান?
স্যার, এ আপনাদের ব্যাপার। এখনি যোগ দিতে হলে লিয়েন নেব দেড় বছর।
—থাক, মাত্র দেড় বছর লিয়েন না নিয়ে অপেক্ষা করুন।
—ঠিক আছে স্যার। ধন্যবাদ।
* * *
অবসর শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগে দেখা করলাম। জানতে চাইলাম—এখন আমার কী করণীয়?
—অবসরের পরদিন যোগ দেবেন। আচ্ছা, প্রারম্ভিক বেতন কত চান?
—আপনারা কত দিতে চাচ্ছেন?
—দেখুন, আমাদের প্রতিষ্ঠান একটু সমস্যায় আছে এখন, তাই আমরা আপাতত চল্লিশ হাজার দেব, কিছুদিন পর বাড়বে।
—বেশ ভালো। যোগ দেব।
* * *
অবসরের পর দিন যোগ দিতে গেলে পরিচালক সাদরে বরণ করলেন। গ্রন্থাগারিকও অনেকক্ষণ আলাপ করার পর বললেন, আচ্ছা আপনার নিয়োগপত্রটি কই?
নিয়োগপত্র সংগ্রহের উদ্দেশ্যে মহাসচিবের কাছে গেলাম। তিনি পাঠালেন সভাপতির কাছে। সভাপতি হঠাত্ অসুস্থ হয়ে পড়ায় দায়িত্ব পেলেন সহ-সভাপতি। তিনিও আমার প্রতিবেশী এবং অত্যন্ত সহানুভূতিশীল। কিন্তু এই মুহূর্তে কোনো সহযোগিতা করতে পারবেন না বলে সবিনয়ে জানালেন । কারণ নাকি মন্দা।
সুত্র : আমার দেশ
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত দিন