আজ ক’দিন থেকে নব্য আওয়ামী লীগাররা বিচার চাইছে। কিসের বিচার, কেন চাইছে, কার কাছে চাইছে ঠিক বুঝতে পারছি না। অভিযোগটা কী? তাও পরিষ্কার না। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলাম সেই জন্য? বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর সাতাশ বছর মাংস খাইনি, তার জন্য? নিজের পয়সার কালো মুজিবকোট আজীবন পরি, এ কারণে? তাহলে এফআইআর করুন, একদিন কোর্টে দাঁড়াই। আপনাদের জারি-জুরি সব ফাঁস করে দিই।
বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক না বলে জনক বলেছি এর জন্য এত রাগের কী আছে? যা সত্য তাই বলেছি। আমি তো সব সময়ই বঙ্গবন্ধুকে জনক বলি। এখানে নতুন কী বললাম? জনককে জনক বলেছি, যা সবাই বলে। এত বছর সবাই তো বঙ্গবন্ধুকে জনক বলেই জেনে এসেছে, আমিও জেনেছি। এখানে অসুবিধার কী আছে? আপনারা বঙ্গবন্ধুর হত্যার ভালোভাবে বিচার করতে পারেন নাই, যুদ্ধাপরাধের বিচার করতে পারছেন না। বঙ্গবন্ধুকে জাতির জনক বলা, স্বাধীনতার ঘোষক না বলা বাংলাদেশ পেনাল কোড অনুসারে যদি অপরাধও হয় তাহলে কি শাস্তি হবে? ১০-১২ দিনের জেল, ৫০০ টাকা জরিমানা? নির্ভীক কলম সৈনিক জনাব মাহমুদুর রহমানের মতো জেল খাটতে রাজি আছি, তবু বঙ্গবন্ধুকে ঘোষক বলতে পারব না। বঙ্গবন্ধু জনক ছিলেন, জনক আছেন এবং যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন জনক থাকবেন। ’৯৩ সালে আমার বাবা মৌলভী মুহাম্মদ আবদুল আলী সিদ্দিকী টুঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর কবর ছুঁয়ে গিমাডাঙ্গা স্কুল মাঠে বক্তৃতা করতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘শেখ মুজিব আমার থেকে বয়সে ১০ বছরের ছোট। তারপরও সে আমার পিতা, আমার সন্তান-সন্ততিদের পিতা—তাদের সন্তানদেরও পিতা—তাই তো সে বঙ্গপিতা।’ বড় ভাই সরে সরুক আমি সেখান থেকে এক চুল সরতে পারব না।
যারা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করতে পারে না, খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভার সচিব এইচটি ইমামকে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বানায়। যে মতিয়া চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর চামড়া দিয়ে জুতা বানাতো, ডুগডুগি বাজাতো সে যেখানে মন্ত্রী। যারা জাতির পিতাকে জুতার ফিতা বলেছে তারা যখন মন্ত্রী হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে যারা ফেরাউন বলেছে তাদের আত্মীয়-স্বজনরা সরকারের নানা উচ্চ পদে আসীন। যারা উঠতে বসতে নাহকভাবে সিরাজ সিকদারের খুনি হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে গালাগাল করে, তাদের বিচার করার যাদের মুরোদ নেই, তাদের আমাকে নিয়ে কথা বলা শোভা পায় না। মাননীয় মন্ত্রী, আপনাদের চেলাদের দয়া করে বলে দিন, খুনিকেও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধুর খুনের আসামিরাও কোর্টে দাঁড়িয়ে বহু কথা বলেছে। বেশি চিপবেন না, বেশি চিপলে সব কিছুই বিস্বাদ হয়। আপনাদের কারও বাড়া ভাতে ছাই দিইনি। তাই আর ভোঁতা অস্ত্র দিয়ে খোঁচাখুঁচি করে ছালকাটা করবেন না। যদি একেবারেই সহ্য না হয় তলোয়ার তো আছেই, পারলে আমার গর্দানটা নামিয়ে দিন।
তিন, ‘১৯৭১-এর আগস্টে আহত হয়ে উচ্চারণ করেছিলেন, যে কাদের সিদ্দিকী বেঁচে আছে সে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও নির্দেশ মাত্র। বিস্মরণের বাজনায় অবশেষে বঙ্গবীরের মতিভ্রম ঘটল।’
১৯৭১ সালে ধলাপাড়ার মাকড়াইয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলাম। বাঁচবো তার আশাই ছিল না। হানাদাররাও প্রচার করেছিল কাদের সিদ্দিকী ধলাপাড়ার যুদ্ধে নিহত হয়েছে। তাই ১৪ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের বিন্দুবাসিনী স্কুল মাঠে এক বিশাল জনসমাবেশে মনের অজান্তেই বলেছিলাম, ‘কাদের সিদ্দিকী ধলাপাড়ার যুদ্ধে মারা গেছে। আপনারা আজ যাকে দেখছেন সে শুধু বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও নির্দেশ।’ আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না বিস্মরণের বাজনায় কোথায় আমার মতিভ্রম ঘটলো? যে ৯ মাসে একটা মানব সন্তানের জন্ম হয় না, মাত্র সেই ৯ মাসেই আঠারো হাজার মুক্তিযোদ্ধা ও বাহাত্তর হাজার স্বেচ্ছাসেবকের এক বিশাল কাদেরিয়া বাহিনী গঠন করে পাকিস্তানি হানাদারদের পরাজিত করেছিলাম। স্বাধীনতার মাত্র চল্লিশ দিনের মাথায় এক লাখ চার হাজার অস্ত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের পদতলে বিনা প্রশ্নে জমা দিয়েছি। তাকে যখন হত্যা করা হয়েছিল, এক কাপড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে সেই হত্যার প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করেছি। অন্য অনেকের মতো একবারের জন্যও জঘন্য ভাষায় বঙ্গবন্ধুকে গালাগাল করিনি, বঙ্গবন্ধু নামের ট্যাবলেট খেয়ে এত উত্থান-পতনের মধ্যেও এখনও তার নামের মালা জপছি। এখানে তিনি ব্যতিক্রম দেখলেন কোথায়, বুঝতে পারলাম না।
আমার চরম দুর্ভাগ্য, লেখাপড়া শিখতে ছেলেবেলায় কোনো গৃহ শিক্ষক ছিল না। ‘ক’ কোথা থেকে শুরু হয়, ‘অ’ কীভাবে লিখতে হয়—তার শুরুটা লেজ থেকে, পেট থেকে, না মাথা থেকে? তার কিছুই জানতাম না। আজ কতজনের কত গুরু, কত শিক্ষক। বঞ্চনা, বঞ্চনা আর বঞ্চনায় জীবন পার করে এলাম। তারপরও বুঝলাম না তিনি ব্যতিক্রম দেখলেন কোথায়? জনাব শাজাহান সিরাজ আমার বন্ধু বা কর্মী নন। আপনার বন্ধু এবং সহকর্মী। জীবনে কখনও ওরকম হতাশ হতে আমায় দেখেছেন কখনও? এমনিতেই বৃহত্তর ময়মনসিংহের মানুষের ঘাড়ের রগ কিছুটা বাঁকা। তার মধ্যে আমার রগ যে সবচেয়ে বেশি বাঁকা তা তো আপনি ভালো করেই জানেন। জনাব শাজাহান সিরাজ আর আপনার যাত্রা একসঙ্গে শুরু হলেও ব্যবধান ছিল বিস্তর। আপনি ছিলেন বক্তৃতার যাদুকর। আমজনতার বিপুল সমর্থন ছিল আপনার দিকে। কিন্তু ’৬৩-৬৪ থেকে ছাত্র রাজনীতিতে আপনি পেছাতে পেছাতে একেবারে শূন্যের কোটায় নেমে এসেছিলেন। ’৬৩-৬৪ সালে টাঙ্গাইল মহকুমা ছাত্রলীগকে যেদিন জেলার মর্যাদা দিয়ে জনাব শওকত আলী তালুকদার সভাপতি ও আপনাকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে সত্যিই সেদিন জনাব শাজাহান সিরাজের নাম জানতাম না। সে সময় টাঙ্গাইলে ছাত্র নেতাদের প্রবাদপুরুষ ছিলেন জনাব ফজলুল করিম মিঠু, ফজলুল রহমান খান ফারুক, জনাব আলী মুজাহিদী। কালী সিনেমা না রওশন টকিজের সেই সম্মেলনে একজন লাজুক ছাত্র হিসেবে আমিও হাজির ছিলাম। ছাত্রলীগ জিন্দাবাদ জনাব আলী মুজাহিদীর এরকম একটি কবিতা, ছাত্রলীগ সঙ্গীত হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছিল। সেই সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন তখনকার ছাত্রদের প্রাণপুরুষ আইয়ুব-মোনায়েমের ত্রাস ছাত্রনেতা শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, শেখ ফজলুল হক মনি ও আরও অনেকে। সেই ’৬৩-৬৪ এর ওই সাধারণ সম্পাদকের পদের পরে আনুষ্ঠানিকভাবে দলে আর কোন পদ পাননি। জনাব শাজাহান সিরাজ পাকিস্তান আমলে একদিনের জন্যও জেলে যাননি। কিন্তু আপনি বারবার জেল খেটেছেন। এমনকি শেষবার ’৬৭-এর সেপ্টেম্বরে গ্রেফতার হয়ে ’৬৯-এর ২৩ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। কিন্তু আপনি মুক্তি পান ময়মনসিংহ কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির একরাত পর ২৩ ফেব্রুয়ারি। সে সময় ময়মনসিংহ জেলে আপনার সঙ্গে কিশোরগঞ্জের নগেন সরকার, নেত্রকোনার অজয় রায়, মুক্তাগাছার খন্দকার শহীদুল্যাহ মালেক, ময়মনসিংহের জননেতা সৈয়দ নজরুল ইসলামের ভাগিনা ছাত্রনেতা সৈয়দ আনোয়ার ও আরও অনেকে ছিলেন। সে সময় আপনার সঙ্গে আমিও ক’দিন জেলে ছিলাম। আপনাকে ময়মনসিংহ থেকে ভাড়া করা গাড়িতে আনা হয়েছিল। এখন আমার মতো রাস্তাঘাটে তখন আপনার বিপুল জনপ্রিয়তা থাকলেও দলীয় পর্যায়ে ছিলেন সবার চক্ষুশূল। সামর্থ্যবানরা কেউ আপনার জন্য আমাদের একটা ঘষা পয়সার সাহায্যও করত না। অনেক ঝকমারি করে সেদিন বল্লার সাঈদ দারোগার গাড়ি নিয়েছিলাম।
’৬৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ’৭১-এর মার্চ এই দুই বছর এক মাস আমাদের খুব একটা ভালো যায়নি। আপনি থাকতেন ঢাকার এসএম হলে। আমরা টাঙ্গাইলে। আপনি জেলে থাকতে ’৬৮ সালে করটিয়া সা’দত মহাবিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে শুধু আমরা কয়েকজন উন্মাদ জীবনপণ করে আপনার সমর্থক সোহরাব আলী খান আরজুকে জিএস পদে জয়ী করেছিলাম। কিন্তু জেল থেকে বেরুবার পর ছাত্রলীগের কোনো পদে না আপনি স্বীকৃতি পেয়েছেন, না আপনার অনুসারী হিসেবে আমরা পেয়েছি। মুক্তিযুদ্ধে অত বিশাল ভূমিকা রাখার পরও আমি টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের অনুমোদিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক হতে পারিনি।
’৭০-এ যখন ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের মহানায়ক তোফায়েল আহমেদ ছাত্রলীগের সভাপতি হন সেই কমিটিতে আপনার সাধারণ সম্পাদক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা হতে পারেননি। গভীর রাতে ইকবাল হলের মাঠে যখন ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হলো তখন দেখা গেল সাধারণ সম্পাদক পদে আপনার স্থলে জনাব শাজাহান সিরাজ অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। কোথাও আপনার নাম নেই, এমনকি একজন কার্যকরী পরিষদের সদস্য হিসেবেও নয়। আমাদের কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্বীকৃত ছিল না। আমাদের হাজার হাজার কর্মী থাকলেও জনাব শাজাহান সিরাজ সমর্থক কমিটি ছিল কেন্দ্রে স্বীকৃত। ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের পুরো কমিটি আপনার পক্ষে স্লোগান দিচ্ছিল। তাদের সঙ্গে আমরাও শরিক হয়েছিলাম। সেই প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধে নেতৃত্ব করছিল কাপাসিয়ার খালেদ খুররম। ওর বাবা ময়মসিংহে চাকরি করতেন। সেই সুবাদে ওরা ময়মনসিংহে থাকত। সেই খালেদ খুররমকে একদিনের জন্যও মর্যাদা দেননি, কোন সম্মান করেননি। বঙ্গবন্ধু নিহত হলে সে আমার সঙ্গে প্রতিরোধ সংগ্রামে শরিক হয়েছিল। আপনার দলের কেউ তার খোঁজ নেয়নি বরং প্রতি পদে পদে আমার মতো অপমান অপদস্থ করেছেন। সেই জ্বালা সইতে না পেরে পূর্ণ বয়সের আগেই কয়েক বছর আগে বড় বেশি অবহেলা নিয়ে পরপারে চলে গেছে। সত্যিকার অর্থে বলতে কী পাকিস্তানে আমিই টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের অননুমোদিত শেষ সাধারণ সম্পাদক। কারণ আমার পর আর পাকিস্তান ছিল না। আর আপনি টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের প্রথম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আপনার হাতে শুরু আমার হাতে শেষ। এছাড়া ছাত্র রাজনীতিতে আমাদের কারোরই কোনো পদ ছিল না। এখানে আমরা ছিলাম ষড়যন্ত্রের শিকার। ষড়যন্ত্রের শুরুটা হয়েছিল আপনাকে ঘিরেই, আমাকে ঘিরে নয়। বঙ্গবন্ধু স্নেহ করতেন, ভালোবাসতেন আর সাধারণ মানুষের মধ্যে ছিল আপনার দারুণ প্রভাব। যে কারণে আমাদের কেউ ফেলে দিতে পারেনি। সারা জীবনে আপনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের একজন সদস্যও হতে পারেননি, আমিও পারিনি। কারণ আমি যে আপনার দলভুক্ত ছিলাম।
আমার প্রতি আপনার এত আক্রোশ কেন তা বুঝি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব আমার হাতে না এসে যদি জনাব শাজাহান সিরাজের কোনো ভক্ত-অনুরক্তের হাতে যেত, তাহলে কি তার বিরুদ্ধে অমন করে বলতে পারতেন? পারতেন না। ভারত থেকে ফিরতেই পারতেন না। আপনাদের গুণই হলো ঝড়-তুফান থেমে গেলে, বিপদ কেটে গেলে, বিপদের কাণ্ডারীদের নিষ্ঠুরভাবে ছুড়ে মারেন, আমার ক্ষেত্রে তেমন করবেন না কেন? নিশ্চয়ই করবেন। তা না হলে বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে না তুললে আবার ক্ষমতায় যান! অনেক নেতা যে কবরে থাকতেন তা আমার চেয়ে আপনি অনেক বেশি জানেন।
চার. ‘তবে আশংকা থেকেই যায় শাজাহান সিরাজের মতো আবার এক সময় হাহাকারে বিদীর্ণ হয়ে বলবেন নাতো, ‘বিএনপিতে যোগ দিয়ে ভুল করেছিলাম।’
লেখায় ব্যঙ্গ করার কারণেই ‘আপনি’ সম্বোধন করেছেন। আপনি বড় ভাই, যা খুশী করতে পারেন। জানেনই তো রাধাকৃষ্ণ করলে তা হয় লীলা খেলা আর গরিবের বেলায় নষ্টামি। আমার বিএনপিতে যোগদান করতে হবে কেন? আমাদেরও তো কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নামে একটা দল আছে। তাই জনাব শাজাহান সিরাজের মতো হাহাকার করার সময় আসবে না। আপনারা অপেক্ষায় থাকেন, চাল, ডাল, আটা, ময়দা, আদা, তেল, নুনের যে দাম আর ঘরে ঘরে চাকরির যে অবস্থা তাতে দেখেন কী হয়। বড় ভাই হিসেবে আমার জন্য আপনার দুর্ভাবনা তো থাকতেই পারে। সেটা কোনো দোষের কথা নয়। আমি তো একেবারেই লেখাপড়া জানি না। তাই তেমন কিছু লিখে রাখার খুব একটা অভ্যাসও ছিল না। ভারতে নির্বাসিত থাকার সময় তেমন কাজ-কর্ম ছিল না বলে কিছুটা লেখালেখির অভ্যাস করেছি। আপনার আগাগোড়াই লেখার অভ্যাস ছিল। তাই ছাপার অক্ষরে না হলেও আপনার অনেক লেখা আছে। সে সবের অনেকটাই কিন্তু পরস্পর বিরোধী। আপনি যখন কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ মানে বাকশালে ছিলেন তখন আওয়ামী লীগকে এতো গালাগাল করেছেন যা নব্য আওয়ামী লীগার বেগম মতিয়া চৌধুরীর পক্ষেও সম্ভব হয়নি। এখন আবার নও মুসলিমের মতো ভীষণ গোড়া আওয়ামী লীগ হয়েছেন।
পাঁচ. ‘কাদের সিদ্দিকীর খোদ খাসলত সম্পর্কে জানি বলে তার কোনো কথা এবং কাজেই অবাক হই না। ’৭১-এর ডিসেম্বরেই তার হাতে যিনি অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন অবলীলায় তাকে যখন বলতে পারেন যুদ্ধের ডামাডোলে আপনাকে হত্যা না করাটা ভুল হয়েছে।’
সত্যিই আপনি আপনার নিজের জন্য অসম্ভব অসত্য বলতে পারেন। আমার খাসলত সম্পর্কে আপনি কি জানেন? আমার চালচলন, কাজ-কর্ম স্বাধীনতার পর থেকে একেবারে পরিষ্কার। কী করি না করি, কী খাই না খাই, কোথায় যাই—এসব দিবালোকের মতো ঝকঝকে তকতকে। স্বাধীনতার পর আমার কি পালিয়ে বেড়াবার কোনো সুযোগ ছিল? ছয় ফুট দুই ইঞ্চি লম্বা মানুষ আমি। এই চল্লিশ বছরে কোথাও একা যাইনি, একা হতে পারিনি। হাজার হাজার মানুষ রাস্তাঘাটে তো চিনেই, তারপর সরকারি টিকটিকি সদা পেছনে লেগেই আছে। আমাকে আপনার পছন্দ না তাই রাগারাগি করেন। অবাক তো হবেনই। সারাজীবন এত জোর-জুলুম-অত্যাচার করেও যাকে এক চুল নড়াতে পারেননি তার সম্পর্কে অবাক না হয়ে কি চলে?
’৭১-ই আপনার জন্য কাল হয়েছে। ’৭১-এর আগে ছিলেন নেতা, আমরা ছিলাম কর্মী। যদিও আমরা কয়েকজন ছাড়া অনেকেই আপনাকে ত্যাগ করেছে। ’৭১-এর মার্চে আপনি ভারতে পালিয়ে গেলে আমরা অথৈ সাগরে পড়ে যাই। জীবন উত্সর্গ করে পাকিস্তানিদের সঙ্গে মোকাবিলা করি। আপনি বলছেন, হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন। বলেন তো কী অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন? কোথায় পেয়েছিলেন সেই অস্ত্র? যদি তুলে দিয়েও থাকেন, আপনি পালিয়ে যাওয়ার পর সেই অস্ত্র কী কাজে লেগেছে? এত অহঙ্কার করেন কেন? পুলিশের ৪০-৫০টি ভাঙা অস্ত্র নিয়ে পাহাড়ের দিকে গিয়েছিলাম। আপনি তখন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হিসেবে নিশ্চয়ই আমাদের নেতা ছিলেন। নেতা হয়ে আমাদের এবং দেশবাসীকে রেখে ওভাবে পালিয়ে গেলেন কেন? দেশে থাকলে তো আপনিই নেতা হতেন। আর যুদ্ধে যেতে অপারগ হলে, পাকিস্তানি হানাদারদের মোকাবিলা না করতে পারলে নেতাগিরি ক’দিনেই শেষ হয়ে যেত। যুদ্ধের ডামাডোলে আপনাকে হত্যা না করে ভুল হয়েছে। কখন কোথায় বলেছি? আপনি যুদ্ধের সময় ছিলেন কোথায়? অনেক নেতার মতো আপনিও তো পলাতক পার্টি। ৪ অথবা ৫ এপ্রিল শেরপুরে গাড়ি ভর্তি টাকা আছে বলে খন্দকার আসাদুজ্জামান এমপি ও আপনাকে শেরপুরের জনাব নিজাম উদ্দিন ও আনিস মোক্তার এমপিরা বন্দি করেছিল। তারা তো আপনাদের আওয়ামী লীগই করত। আপনাকে দেশে আনা হয়েছিল ২৭ নভেম্বর। ভুয়াপুর থেকে কেদারপুরে আসেন ৩০ নভেম্বর। এরপরে নাগরপুরের যুদ্ধ হয় ১ এবং ২ ডিসেম্বর। বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী তাকে এলাসিন ঘাটে একজন অতি সাধারণ যোদ্ধা হিসেবে প্রথম দেখি, যে একটি সম্মুখ যুদ্ধও করেনি। আরও কিছুদিন যুদ্ধ হলে হয়তো সেও যুদ্ধ করত। আপনিই নাকি ভারতের তুরা থেকে সঙ্গে এনেছিলেন। সেও তো আপনার কর্মী। এখন আপনাকে আছোলা বাঁশ দেয়। ৪ ডিসেম্বর আনোয়ারুল আলম শহীদের সঙ্গে আপনাকে সসম্মানে সখীপুর হেড কোয়ার্টারে পাঠানো হয়। পায়ে হেঁটে সখীপুর পৌঁছতেই দু’দিন লেগেছিল। পথের ক্লান্তি দূর করতে দু’দিন বিছানাই ছাড়েননি। তারপর ১১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল স্বাধীন হয়। এই ৩-৪ দিনে যুদ্ধের ডামাডোলে আপনি ছিলেন কোথায়? আপনার সঙ্গে তো শুধু একবার একদিনের জন্য আমার কেদারপুরে দেখা হয়েছিল।
স্বাধীনতার পর ৫ অথবা ৬ জানুয়ারি টাঙ্গাইল নিরালার মোড়ে যে জঘন্য ভাষায় ছাত্র ইউনিয়নের নেতা হামিদুল হক মোহনের জন্য আমাকে ও মুক্তি বাহিনীকে গালাগাল করেছিলেন তাতো আপনার ভুলে যাওয়ার কথা নয়। আমি আপনার ছোট ভাই না হয়ে সেদিন অন্য কেউ হলে বকাবকির ‘ব’ও করতে পারতেন না। নরম মাটি পেলে বিড়ালেও খামচায়—এটাই সত্য। লোক হাসাতে লিখছেন, লেখেন। কিন্তু একটু আগে-পিছে ভেবেচিন্তে লিখেন।
ছয়. ’৭৫-পরবর্তী ভারত সীমান্তে জীবন বাঁচাতে প্রতিরোধের মহড়াকালে প্রতিরোধী বাহিনীর বঙ্গবন্ধু-প্রেমীদের তার অনুগত থাকতে যে কঠোর নির্দেশ দিতে পারেন এবং কোন নীতি ও আদর্শের কথা উচ্চারণ করলে চরমতম দণ্ডের হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন, তারপরও প্রতিবাদ করায় আমাকে প্রতিরোধ সংগ্রাম থেকে বিযুক্ত করা, জাতীয় ছাত্রলীগের সদস্য নুরুল ইসলাম সৈয়দকে হত্যা করতে যার চৈতন্যে কোনো যন্ত্রণা হয়নি তার পরিণতি আজকের মতোই হবে তা বলাই বাহুল্য। বঙ্গবীর আবদুুল কাদের সিদ্দিকীর স্খলন বা পতন হলো তা কিন্তু ভাবা ঠিক হবে না। আসলরূপে তার আত্মপ্রকাশ ঘটল মাত্র।’
এইটুকু পড়ে পাঠক কিন্তু আমার কোনো নতুন রূপ খুঁজে পাবে না। যা ছিলাম তাই তারা দেখবে। কিন্তু আপনার এখানে কিছুটা নতুন ভূমিকা খুঁজে পাবে। আমি যদি জীবন বাঁচাতে প্রতিরোধের মহড়া দিয়ে থাকি সেখানে আপনিও কিন্তু ছিলেন। আর যদি এটা ধরে নেয়া হয় যে, আমরা বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদ প্রতিরোধ করিনি। তাহলে দুশমনরা যে বলে বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর ইন্নালিল্লাহ পাঠ করার লোক খুঁজে পাওয়া যায়নি, কোন প্রতিবাদ-প্রতিরোধ হয়নি সেটাই সত্য প্রমাণিত হবে। আজকে মন বোঝাই বিক্ষোভ ও অসন্তোষ নিয়ে ফরমায়েশি যে লেখা লিখছেন—এর কিন্তু ওপিঠও আছে। মুক্তিযুদ্ধে যেমন এক পয়সার কোনো ভূমিকা রাখেননি, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিরোধ সংগ্রামেও আপনার তেমন ভূমিকা ছিল না। আমাদেরকে বিব্রত করা ছাড়া আপনার খুব একটা অবদানও খুঁজে পাওয়া যাবে না। দু’চার দিন যা প্রতিরোধ শিবিরে ছিলেন অন্তত একশ’জন যোদ্ধার একদিনের খাবার টাকা আপনার একদিন সিগারেট ফুঁকতে লাগত। শিলিগুঁড়ি আর কলকাতায়ই ছিলেন বেশি। আমাকে সহকর্মীদের খাওয়ার টাকা থেকে টাকা বাঁচিয়ে আপনার সিগারেট খাওয়ার খরচ পাঠাতে হতো। আপনি সব সময় বিপুল গালাগাল করতে পারেন, সে যোগ্যতা আপনার অসাধারণ। রেকর্ডপত্র নাই মনে করে অবলীলায় এখন যা খুশী তাই বলবেন না। ’৭৫-এর পরের আপনাদের অনেকের বক্তৃতার রেকর্ড আছে। ছবি, চিঠিপত্র তো আছেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতিরোধ সংগ্রামের সময় থেকেই অনেক চিঠি দিয়েছেন। সর্বজনাব শেখ সেলিম, মোস্তফা মোহসীন মন্টু, মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম, অধ্যাপক আবু সাঈদ, আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন, সামসুদ্দিন মোল্লা, রওশন আলী, ডা. এসএ মালেকসহ আরও অনেকে যারা শিবিরে ছিলেন তারা সর্বোতভাবে সাহায্য করতে চেয়েছেন—এসবই কী তাহলে ফাঁকি, মিথ্যা আশ্বাস, ফাঁকা বুলি ছিল?
শুধু সৈয়দ নুরুর কথা লিখেছেন। এতে মনে হয় আপনাদের একটু সুবিধা হয়। মৌলভী সৈয়দের কথা তো লেখেননি? আবদুল খালেক খসরু, সাখাওয়াত হোসেন মান্নান, আলী আজম আলমগীর (আলম), নজিবর রহমান নীহার, মোঃ ইবনে সউদ, রেজাউল করিম, নূরুল ইসলাম, নূরুল আমিন, রেজাউল করিম, মিজানুল হক মুকুল, মোহাম্মদ আলী, আবদুর রাজ্জাক, মোহাম্মদ বাবলু, মোহাম্মদ সোলায়মান, আবদুর রহিম আজাদ, সুশীল ভৌমিক বেলু, শ্রী বামুন সরকার, আবদুল খালেক, রাধারমন রায় ঝান্টু, দুলাল দে বিপ্লব, রজব আলী, বলরাম সরকার, আবদুল আজজ, নিরানন্দ দাস, সুশীল দত্ত, ফনেস সাংমা, তপন চাম্বগং, এ্যলিসন মারাক, সুধীন, গোবিনিক মারাক, আবুল কাশেম, দুলাল মিয়া, রঞ্জিত কুমার জেস, সম্রাট সাংমা শহীদ, জয়েশ্বর বর্মণ, সুদর্শন সাংমা, মফিজুর রহমান খাঁন, নিখিল দে, সুবোধ চন্দ্র ধর, আলকাস সরকার, দ্বিপাল চন্দ্র দাস, হামিদুল ইসলাম, ফজর আলী, হেনরী সাংমা, শান্তি বিকাশ সাহা পল্টু, মনোরঞ্জন বিশ্বাস, আগস্টিন চিসিম, আবদুুল হেকিম, হাবিবুর রহমান, মুসলিম উদ্দিন তালুকদার, রঞ্জিত সাংমা, অনন্ত বর্মণ, প্রাণবল্লব বর্মণ, সুশীল, সুদর্শন মানকিন, জোবেদ আলী, হারু সাংমা, নজরুল ইসলাম, মোজাম্মেল হক, আবু বক্কর সিদ্দিক, ধীরেন্দ্র চন্দ্র পাল, হযরত সাংমা, পল্টু সাহা, মতিলাল দাস, আখলমন মাঝি, সুব্রত, ইসহাক আলী, মোঃ আবদুল আজিজ, মোঃ আরব আলী তাদের কথা কেন বাদ দিলেন? তাদের বাপ-দাদার নাম-ঠিকানাসহ দিতে পারতাম লেখা বড় হয় তাই দিলাম না। তারা নিজের জীবন দিয়ে আপনাদের বাঁচিয়েছেন—তাই বাদ দিয়েছেন।
প্রতিরোধ সংগ্রামে শহীদ হলে তাদের অবদানকে খাটো করার জন্য অন্যভাবে চালিয়ে দেয়ার এ অপতত্পরতা আপনাদের চিরকালের। সময় থাকতে এসব বন্ধ করুন। আমার পরিণতি নিয়ে ভাববেন না। আপনাদের পরিণতি নিয়ে একটু ভাবুন। দেশের অবস্থা খুব একটা ভালো না। আর আপনি আপনার দল এবং সরকারের কোনোখানেই নীতি-নির্ধারক নন। চালের দাম পঞ্চাশ টাকা, ডালের দাম সোয়াশ’, তেল-চিনি-নুন আকাশছোঁয়া। ঘরে ঘরে চাকরি দিতে চেয়েছিলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেছেন, এ পর্যন্ত একলাখ ত্রিশ হাজার লোকের চাকরি দিয়েছেন। তাহলে পাঁচ বছরে দুই লাখ ষাট হাজারের বেশি দিতে পারছেন না। ঘরে ঘরে চাকরি দিলে অনেক হয়ে যাবে। শুধু পরিবারপিছু একটি করে চাকরি দিতে হলে অন্তত দুই-আড়াই কোটি চাকরি দরকার, দিয়েছেন একলক্ষ ত্রিশ হাজার। এভাবে চাকরি দিলে একশ’ বছর লাগবে তখন দেশের লোকসংখ্যা হবে ৬০ কোটি। কথা এবং কাজের অসঙ্গতি দূর করুন। লিবিয়া থেকে প্রায় তিরিশ হাজার শ্রমিক এরই মধ্যে ফিরে এসেছে। লিবিয়ার পরে সিরিয়া তারপর জর্ডান, কুয়েত, কাতার, ইরান, ইরাক সব জায়গায় অশান্তি। সৌদি আরবও নিরাপদ নয়। তাই আমার পরিণতি নিয়ে ভাবছেন! আমি আপনাদের পরিণতি নিয়ে খুবই চিন্তিত। আপনারা আমায় ভাতে মারতে পারেন, পানিতে মারতে পারেন। কিন্তু আপনারা যে মানুষের পায়ে পিষ্ট হয়ে মারা যাবেন সেটা একটু বোঝার চেষ্টা করুন। আমার চরকায় তেল না ঢেলে যেটুকু তেল আছে তা নিজেদের চরকায় ঢালুন। চরকার আওয়াজ কিছুটা কমবে।
সাত. ‘আলাপচারিতায় এবং সভা-সমাবেশে সব সময়ই বলে আসছি বীরমাত্রই ঘটনাক্রমের জাতক। নেতা দীর্ঘ রাজনীতি প্রক্রিয়াজাত। কাদের সিদ্দিকী ’৭১-এর জনযুদ্ধের জাতক। জন উচ্ছ্বাস স্তিমিত এবং জনজাগরণ বিবশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এবং স্বাধীনতার অভ্যুদয়ে ঘটনাক্রমে যারাই প্রচারের হাইটে এসেছেন সে জিয়া হোক, জলিল হোক, রব হোক, হউক সে কাদের সিদ্দিকী। সবাই যে আপন ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধির ডুবো সাঁতারে ক্লান্ত হয়ে তলিয়ে যাবে তা বলাই বাহুল্য। জিয়া, রব, জলিল, কাদের সিদ্দিকী একই স্মরণীয় যাত্রী মাত্র। সময়ে অনেকেই এই স্মরণীতে যুক্ত হবেন যে তাতে কোন সন্দেহ নেই। এটাই সমাজ বিকাশের অমোঘ নিয়ম।’
চমত্কার! এবার আসলরূপে আবির্ভূত হয়েছেন। যুদ্ধ করব আমরা, দেশ স্বাধীন করব আমরা আর দেশটাকে লুটেপুটে খাবেন আপনারা। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমরা যদি দেশ চালাতাম, যেমনি ফিদেল কাস্ট্রো চালিয়েছেন, হোচিমিন চালিয়েছেন, দেশ স্বাধীন করে তেমনি আমরা চালালে এই বিড়ম্বনার কথা শুনতে হতো না। আপনারা চাচ্ছেন যুদ্ধ করে জীবন দিয়ে আমরা গোলামরা দেশটা স্বাধীন করে দিই, আপনারা পায়ের উপর পা তুলে রাজত্ব করেন। ঠিকই বলেছেন। কিন্তু যুদ্ধটা যদি দশ বছর চলতো তাহলে আপনার মতো বকধর্মী নেতারা অবশ্যই বুঝতে পারতেন কত ধানে কত চাল। যুদ্ধ বিগ্রহ, ঝড়-ঝাপটায় আমরা, আর ঝড় থামলে আপনারা। সত্য বলার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। দেখা যাক, দেশবাসী আপনাদের অভিসন্ধি ধরতে পারে কিনা। এখন আর জনসাধারণকে অত বোকা ভাবা উচিত নয়। দু’একটি কালা অক্ষর তাদের পেটেও আছে।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত দিন