আমাদের মনের ভেতর প্রায়ই ঝড় ওঠে। তখন আমরা ব্যতিব্যস্ত হয়ে নিজের ভেতরের মানুষটাকে খুঁজে বেড়াই। আবিষ্কার করার চেষ্টা করি আয়নার পেছনের ভাবনাগুলোকে। আবার তেমনি চারপাশের হুটহাট ব্যস্ততার মধ্যেও অনায়াসে সবাই মন গলাই-মন বাড়াই। আসলে গতানুগতিকতা ও বৃত্তের বাইরের সঙ্গে নিজেকে টেনে নিতেই এই বোধ। যেমন একটি বোধ, চিন্তার নাম রবীন্দ্রনাথ। ঘটনা বহুদিন আগের। সৃষ্টিতে প্রতি মুহূর্তে প্রতিক্ষণ আছেন কাছাকাছি পাশাপাশি। এরপরও বৈশাখ এলেই তাকে নিয়ে বেশি মাতামাতি শুরু হয়। এ তো কেবল ভালোবাসা আর ভেতরের মানুষটার হঠাৎ জাগরণের জন্যই! রবীন্দ্রনাথ চলে গেছেন আজ থেকে প্রায় দেড়শ বছর আগে। অথচ আজও তিনি তরুণ, আজও তিনি নতুন। যতবার ফিরে তাকানো যায়, ততবারই নতুন মনে হয়। এই তো রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথ ছাড়া কোনো কবি জাতির যাপনচিত্র কিংবা বৈশ্বিক প্রেক্ষিতে এমন অমোঘ হয়ে জুড়ে থাকেননি কখনো। পৃথিবীর সাহিত্য ইতিহাসে রবীন্দ্রনাথই প্রথম টেনেছেন বৈশ্বিক মেলবন্ধন। তিনিই পেরেছেন বাঙালির প্রতিদিনের প্রেম, অপ্রেম, যন্ত্রণা, বিরহের সঙ্গে এমন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকতে। পেরেছেন সেই জড়িয়ে থাকা বোধের স্ফুলিঙ্গ-প্রেম-অপ্রেম বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে। শীত-গ্রীষ্ম রোদ-বৃষ্টির মতোই বাঙালির প্রতিদিনের জীবনযাপনে বারবার অনিবার্যভাবে চলে এসেছেন রবীন্দ্রনাথ। কখনো কারও ইচ্ছায় আবার কখনো বা নেহায়েতই অনিচ্ছায়। গল্প-কবিতা-নাটক-গান-দর্শন রবীন্দ্রবলয়ের বাইরে নয় কোনো কিছুই। আর তাই ইচ্ছা-অনিচ্ছায় মননের মাধ্যাকর্ষণে বারবার প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছেন রবীন্দ্রনাথ। জনগোষ্ঠীর যাপনে এমন জড়িয়ে পড়া কবি কোথায় মিলবে?
জীবনযাপনে প্রাসঙ্গিক রবীন্দ্রনাথ নিজেই একটা জাতি-একটা বোধ আর জীবন। আর তাই রবীন্দ্রনাথকে না জানলে জানা হয় না কিছুই। অজ্ঞাত থেকে যায় জীবনের অনেক ভাবনা অনেক রঙ-রস। মজার ব্যাপার হলো, দুরদর্শী কবি বেঁচে থাকতেই এমন কথা বলে গেছেন। অমোঘ ভবিষ্যদ্বাণীর কবিগুরুর সেই বিখ্যাত লাইন_ 'আজি হতে শতবর্ষ পরে, কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি কৌতূহল ভরে'। ভাবা যায়, কাব্য জীবন আর ভাবনার সঙ্গে কবি কতটা সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছিলেন? কতটা সম্পৃক্ত থাকলে একজন কবি তার চলে যাওয়ার শত বছর পরের ঘটনাক্রম কিংবা চিন্তার এমন সুস্পষ্ট প্রকাশ ঘটাতে পারেন? কিন্তু রবীন্দ্রনাথ পেরেছেন। দেখিয়েছেন তার প্রিয় পাঠকের প্রতি কোমল 'স্পর্ধা' দেখানোর দুঃসাহস। আর এ কারণেই তিনি চিরঞ্জীব, বিশ্বকবি।
২৫ বৈশাখ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন। আর কবির জন্মদিনে বাঙালি ফুল, মালা, গান আর অনুষ্ঠানের হিড়িক পড়ে যায়। এ তো রবীন্দ্রভক্তদের দৌড়ঝাঁপ আর প্রেম-প্রণয়। কিন্তু এর বাইরেও আছেন রবীন্দ্রনাথ। ভিন্নভাবে তাকালেই দেখা যাবে অন্যদের মতো লাখ লাখ সাধারণ মানুষও প্রতি বছর দিনটিকে মনে রাখে। কেউ কেউ হয়তো নিজের বা তার স্ত্রীর জন্মদিন ভুলে গিয়ে থাকলেও কবির জন্মদিন ভুলেন না। ভুলেন না কবিকে অসীম শ্রদ্ধায় ভাসিয়ে দিতে। এ কিন্তু কোনো অনুষ্ঠান-রীতি বা হিড়িকের কথা নয়, এ শুধুই ভালোবাসার গল্প। হয়তো বহু বছরের অভ্যাসের সংস্কার। অথবা মনের ভেতরের মানুষটার কোনো একটা দায়বদ্ধতা? নাকি কোথাও ঠিক কোনো একটি জায়গায় তার বোধ ও বোধোদয়ের তলদেশে অন্তর্লীন হয়ে আছেন রবীন্দ্রনাথ?
আসলে রবীন্দ্র সংস্কৃতির একটি গোপন চোরা স্রোত দিনের কোনো এক সময় তাকে নিজের কাছে নিজেকে নিবেদন করার সংস্কৃতি শেখায়। সে শুধু সেই মানুষটিই জানে অত্যন্ত অমোঘভাবে, আসলে বাঙালি কোনো অবচেতনেই রবীন্দ্রনাথকে ভুলতে চান না। অথবা চাইলেও পারেন না। রবীন্দ্রনাথ তার যাবতীয় নিয়ে আজও দেড়শ বছর পর এমন অমোঘ, এমন অনিবার্য, এমন প্রাসঙ্গিক_ যা বলে শেষ করা যাবে না। তাই বারে বারে প্রতিদিনের যাপনের যাবতীয় গ্লানি, আলো, অন্ধকার, সুখ, অসুখ নিয়ে তাকে মনে হয় তিনিই সেই অনির্বাণ শিখা, যে আসলে মৃত্যুর থেকেও বড়। আর তিনি পুরনো হওয়ার নন। তিনি সব সময়ই নতুন আজ-কাল-পরশু কিংবা হাজার বছর পরও ওই নতুনই!
জীবনযাপনে প্রাসঙ্গিক রবীন্দ্রনাথ নিজেই একটা জাতি-একটা বোধ আর জীবন। আর তাই রবীন্দ্রনাথকে না জানলে জানা হয় না কিছুই। অজ্ঞাত থেকে যায় জীবনের অনেক ভাবনা অনেক রঙ-রস। মজার ব্যাপার হলো, দুরদর্শী কবি বেঁচে থাকতেই এমন কথা বলে গেছেন। অমোঘ ভবিষ্যদ্বাণীর কবিগুরুর সেই বিখ্যাত লাইন_ 'আজি হতে শতবর্ষ পরে, কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি কৌতূহল ভরে'। ভাবা যায়, কাব্য জীবন আর ভাবনার সঙ্গে কবি কতটা সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছিলেন? কতটা সম্পৃক্ত থাকলে একজন কবি তার চলে যাওয়ার শত বছর পরের ঘটনাক্রম কিংবা চিন্তার এমন সুস্পষ্ট প্রকাশ ঘটাতে পারেন? কিন্তু রবীন্দ্রনাথ পেরেছেন। দেখিয়েছেন তার প্রিয় পাঠকের প্রতি কোমল 'স্পর্ধা' দেখানোর দুঃসাহস। আর এ কারণেই তিনি চিরঞ্জীব, বিশ্বকবি।
২৫ বৈশাখ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন। আর কবির জন্মদিনে বাঙালি ফুল, মালা, গান আর অনুষ্ঠানের হিড়িক পড়ে যায়। এ তো রবীন্দ্রভক্তদের দৌড়ঝাঁপ আর প্রেম-প্রণয়। কিন্তু এর বাইরেও আছেন রবীন্দ্রনাথ। ভিন্নভাবে তাকালেই দেখা যাবে অন্যদের মতো লাখ লাখ সাধারণ মানুষও প্রতি বছর দিনটিকে মনে রাখে। কেউ কেউ হয়তো নিজের বা তার স্ত্রীর জন্মদিন ভুলে গিয়ে থাকলেও কবির জন্মদিন ভুলেন না। ভুলেন না কবিকে অসীম শ্রদ্ধায় ভাসিয়ে দিতে। এ কিন্তু কোনো অনুষ্ঠান-রীতি বা হিড়িকের কথা নয়, এ শুধুই ভালোবাসার গল্প। হয়তো বহু বছরের অভ্যাসের সংস্কার। অথবা মনের ভেতরের মানুষটার কোনো একটা দায়বদ্ধতা? নাকি কোথাও ঠিক কোনো একটি জায়গায় তার বোধ ও বোধোদয়ের তলদেশে অন্তর্লীন হয়ে আছেন রবীন্দ্রনাথ?
আসলে রবীন্দ্র সংস্কৃতির একটি গোপন চোরা স্রোত দিনের কোনো এক সময় তাকে নিজের কাছে নিজেকে নিবেদন করার সংস্কৃতি শেখায়। সে শুধু সেই মানুষটিই জানে অত্যন্ত অমোঘভাবে, আসলে বাঙালি কোনো অবচেতনেই রবীন্দ্রনাথকে ভুলতে চান না। অথবা চাইলেও পারেন না। রবীন্দ্রনাথ তার যাবতীয় নিয়ে আজও দেড়শ বছর পর এমন অমোঘ, এমন অনিবার্য, এমন প্রাসঙ্গিক_ যা বলে শেষ করা যাবে না। তাই বারে বারে প্রতিদিনের যাপনের যাবতীয় গ্লানি, আলো, অন্ধকার, সুখ, অসুখ নিয়ে তাকে মনে হয় তিনিই সেই অনির্বাণ শিখা, যে আসলে মৃত্যুর থেকেও বড়। আর তিনি পুরনো হওয়ার নন। তিনি সব সময়ই নতুন আজ-কাল-পরশু কিংবা হাজার বছর পরও ওই নতুনই!
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত দিন