আজ থেকে প্রায় সাড়ে ৩০০ বছর আগের ঘটনা। এমন একটি মসজিদ তৈরি হবে যেখানে হাতেগোনা কয়েকজন মানুষ দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে পারবে। জানালা থাকবে না, দরজা থাকবে তবে ছোট আকৃতির। দেশের সবচেয়ে ছোট মসজিদ হবে সেটি।
বগুড়া জেলার প্রাচীনতম শহর সান্তাহার। সেই সান্তাহার থেকে ৩ কিলোমিটার ভেতরে একটি গ্রাম, তারাপুর। সকাল সকাল আমরা বের হলাম সেই গ্রামের উদ্দেশে। আঁকাবাঁকা রাস্তার দুই ধারে প্রচুর গাছ। গ্রামে ঢুকতেই কেমন জানি মনটা ভরে গেল। মাটির বাড়ি সারিসারি এক তলা, দুই তলা। বেশ কয়েকটা বাড়ি পেরিয়ে পেঁৗছে গেলাম একটা প্রাইমারি স্কুলে। সেখানে সবাইকে এ মসজিদের কথা বলতেই আমাদের এর ঠিকানা বলে দিলেন। শুরু হলো মাটির রাস্তা। গ্রামের যে এত সৌন্দর্য তা তারাপুর গ্রাম দেখলেই বোঝা যাবে। আমরা কয়েক মিনিটের মধ্যে পেঁৗছে গেলাম আমাদের লক্ষ্যস্থান সেই ক্ষুদ্র মসজিদের কাছে।
সুনসান জায়গা। দেড়শ' বছরের অধিক সময় ধরে এই মসজিদে নামাজ পড়া বন্ধ হয়ে আছে। কারা, কেন এই মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন এ নিয়ে বর্তমান গ্রামবাসীর মধ্যে অনেক মতবিরোধ আছে। আমরা সবার কথার গুরুত্ব দেই। সেখানে যেহেতু এই মসজিদের কোনো ইতিহাস নেই, সেহেতু এ মসজিদটির যে দুই-চারটে কথিত ইতিহাস আছে হয়তো এর মধ্যেই একটি ইতিহাস আছে যেটি সত্য। তাই আমরা আশপাশে থাকা বয়স্ক, যুবক, তরুণ সব ধরনের মানুষের কাছ থেকেই মসজিদ সম্পর্কে জানতে চাই।
তরুণ আরিফুল ইসলাম জনি বললেন, সান্তাহারের ছাতিয়ান গ্রাম ইউনিয়নের রানী ভবানীর বাবার বাড়ি। সান্তাহারের আশপাশসহ আমাদের তারাপুরও রানী ভবানীর বাবার রাজ্যত্ব ছিল। তারই অংশ হিসেবে রানী ভবানীর আসা-যাওয়া ছিল এ গ্রামে। একজন মুসলমান মহিলা এই গ্রামে ছিলেন, যিনি পরহেজগার। হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা হওয়ার কারণে ওই মহিলার নামাজ পড়ার অনেক অসুবিধা হতো। রানী ভবানী এমন কথা জানতে পেরে তিনি নিজেই এই গ্রামে চলে আসেন আর সেই মহিলাকে যেন কেউ তার নামাজ পড়াতে অসুবিধা না করতে পারে, সে জন্য তার পেয়াদারদের হুকুম দেন_ তার জন্য রাজকীয় নকশায় একটি মসজিদ তৈরি করে দেওয়া হোক। এভাবেই এ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। তবে এটাও তার দাদার মুখ থেকে শোনা। দাদা আবার শুনেছেন তার দাদার কাছে।
এক পর্যায়ে আমরা এ মসজিদটি মেপে দেখি। লম্বায় এই মসজিদের উচ্চতা ১৫ ফুট আর প্রস্থ ৮ ফুট, দৈর্ঘ্য ৮ ফুট। মসজিদের দরজার উচ্চতা ৪ ফুট আর চওড়া দেড় ফুট। একটি মানুষ অনায়াসে সেখানে ঢুকতে বা বের হতে পারবে। একটি গম্বুজ আছে যেটা অনেকটাই উঁচুতে। আর দেয়ালের পুরুত্ব দেড় ফুট। এ ছাড়া দেয়ালটি ইটের তৈরি। যে ইটগুলো মসজিদের দেয়ালে ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলোর সবটার অর্ধেক ভাঙা। মসজিদের দরজায় দুটি রাজকীয় নির্দেশনার আদলে নির্মিত খিলান আছে। মুসলিম স্থাপত্যের নিদর্শন সংবলিত মিনার, দরজার খিলান এবং মেহরাবই মসজিদটির প্রাচীন ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে আছে।
আসলে এটি এত পুরনো আর সংস্করণের অভাবে এটির যে অবস্থা, মসজিদটি দেখার পরও তেমনভাবে বিশেষ চিহ্ন বা নিদর্শন চোখে পড়ে না। এমন একটি নিদর্শন আমাদের সংরক্ষণ করা এখনই দরকার।
সূত্র : সমকাল
বগুড়া জেলার প্রাচীনতম শহর সান্তাহার। সেই সান্তাহার থেকে ৩ কিলোমিটার ভেতরে একটি গ্রাম, তারাপুর। সকাল সকাল আমরা বের হলাম সেই গ্রামের উদ্দেশে। আঁকাবাঁকা রাস্তার দুই ধারে প্রচুর গাছ। গ্রামে ঢুকতেই কেমন জানি মনটা ভরে গেল। মাটির বাড়ি সারিসারি এক তলা, দুই তলা। বেশ কয়েকটা বাড়ি পেরিয়ে পেঁৗছে গেলাম একটা প্রাইমারি স্কুলে। সেখানে সবাইকে এ মসজিদের কথা বলতেই আমাদের এর ঠিকানা বলে দিলেন। শুরু হলো মাটির রাস্তা। গ্রামের যে এত সৌন্দর্য তা তারাপুর গ্রাম দেখলেই বোঝা যাবে। আমরা কয়েক মিনিটের মধ্যে পেঁৗছে গেলাম আমাদের লক্ষ্যস্থান সেই ক্ষুদ্র মসজিদের কাছে।
সুনসান জায়গা। দেড়শ' বছরের অধিক সময় ধরে এই মসজিদে নামাজ পড়া বন্ধ হয়ে আছে। কারা, কেন এই মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন এ নিয়ে বর্তমান গ্রামবাসীর মধ্যে অনেক মতবিরোধ আছে। আমরা সবার কথার গুরুত্ব দেই। সেখানে যেহেতু এই মসজিদের কোনো ইতিহাস নেই, সেহেতু এ মসজিদটির যে দুই-চারটে কথিত ইতিহাস আছে হয়তো এর মধ্যেই একটি ইতিহাস আছে যেটি সত্য। তাই আমরা আশপাশে থাকা বয়স্ক, যুবক, তরুণ সব ধরনের মানুষের কাছ থেকেই মসজিদ সম্পর্কে জানতে চাই।
তরুণ আরিফুল ইসলাম জনি বললেন, সান্তাহারের ছাতিয়ান গ্রাম ইউনিয়নের রানী ভবানীর বাবার বাড়ি। সান্তাহারের আশপাশসহ আমাদের তারাপুরও রানী ভবানীর বাবার রাজ্যত্ব ছিল। তারই অংশ হিসেবে রানী ভবানীর আসা-যাওয়া ছিল এ গ্রামে। একজন মুসলমান মহিলা এই গ্রামে ছিলেন, যিনি পরহেজগার। হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা হওয়ার কারণে ওই মহিলার নামাজ পড়ার অনেক অসুবিধা হতো। রানী ভবানী এমন কথা জানতে পেরে তিনি নিজেই এই গ্রামে চলে আসেন আর সেই মহিলাকে যেন কেউ তার নামাজ পড়াতে অসুবিধা না করতে পারে, সে জন্য তার পেয়াদারদের হুকুম দেন_ তার জন্য রাজকীয় নকশায় একটি মসজিদ তৈরি করে দেওয়া হোক। এভাবেই এ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। তবে এটাও তার দাদার মুখ থেকে শোনা। দাদা আবার শুনেছেন তার দাদার কাছে।
এক পর্যায়ে আমরা এ মসজিদটি মেপে দেখি। লম্বায় এই মসজিদের উচ্চতা ১৫ ফুট আর প্রস্থ ৮ ফুট, দৈর্ঘ্য ৮ ফুট। মসজিদের দরজার উচ্চতা ৪ ফুট আর চওড়া দেড় ফুট। একটি মানুষ অনায়াসে সেখানে ঢুকতে বা বের হতে পারবে। একটি গম্বুজ আছে যেটা অনেকটাই উঁচুতে। আর দেয়ালের পুরুত্ব দেড় ফুট। এ ছাড়া দেয়ালটি ইটের তৈরি। যে ইটগুলো মসজিদের দেয়ালে ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলোর সবটার অর্ধেক ভাঙা। মসজিদের দরজায় দুটি রাজকীয় নির্দেশনার আদলে নির্মিত খিলান আছে। মুসলিম স্থাপত্যের নিদর্শন সংবলিত মিনার, দরজার খিলান এবং মেহরাবই মসজিদটির প্রাচীন ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে আছে।
আসলে এটি এত পুরনো আর সংস্করণের অভাবে এটির যে অবস্থা, মসজিদটি দেখার পরও তেমনভাবে বিশেষ চিহ্ন বা নিদর্শন চোখে পড়ে না। এমন একটি নিদর্শন আমাদের সংরক্ষণ করা এখনই দরকার।
সূত্র : সমকাল
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত দিন