একবার আমি ও আমার এক বন্ধু সফর শেষে বাড়ি ফেরার সময় হোটেলে যাই কিছু খাওয়ার জন্য। হোটেল বয়কে আমরা হাফ বাটি করে হালিম, ১টি করে সিঙ্গাড়া ও ছোট মিষ্টি আনতে বললাম। কিছুক্ষণ পর হোটেল বয় ফুল বাটি করে হালিম, দুটি করে সিঙ্গাড়া ও বড় মিষ্টি নিয়ে এল। দেখেই আমরা তাকে কিছু বলতে যাচ্ছিলাম, ঠিক তখনই হোটেল মালিক হাসিমুখে বলে উঠল, ‘কম করে জিনিস খাইয়ে আমরা কি অপরাধী সাজব, যত পারেন খেয়ে যান, চিন্তা কইরেন না।’ আমরা তার কথার মাথামুণ্ডু কিছু না বুঝলেও আর আপত্তি করিনি। খাওয়া শেষে যখন বিল দিতে গেলাম, তখন ঘটল আরেক কাণ্ড। হোটেল মালিক বলল—‘টাকা লাগব না, আপনারা চইল্যা যান।’ তারপরও আমি তাকে টাকা দিতে চাইলাম, কিন্তু তিনি টাকা নিলেন না। আমার বন্ধু বলল—বিনা টাকায় এত খাতির এই যুগে তো মহাপ্রাপ্তির ব্যাপার। পরে জানতে পারি, সেদিন শহরের শামীম চৌধুরীর নাতি ও তার বন্ধুর সেই হোটেলে আসার কথা ছিল।
চৌধুরী সাহেব তাকে সকালে বলেছিল, সকাল ৯টা-১০টার দিকে তোমার হোটেলে আমার নাতি ও তার বন্ধু আসবে। আমার নাতি হলুদ শার্ট ও সবুজ প্যান্ট পরে আসবে। তুমি তাদের চাহিদার বেশিই খাবার পরিবেশন করবে। ভাগ্যক্রমে সেদিন আমিও একই পোশাক পরেছিলাম। আর হোটেল মালিকও চৌধুরীর নাতিকে আগে কখনও দেখেনি। আর বিল নিতে চৌধুরী সাহেব নিষেধ করেছিল পরে দিয়ে দেবে বলে। তাই সেদিন হোটেল মালিক ওই কাণ্ড ঘটিয়েছিল। পরে ঘটনা জানাজানি হলে বাজারে হাসির রোল পড়ে যায়। একথা শুনে আমার ও আমার বন্ধুর তো হাসিই থামছিল না। এখন পাঠক বুঝলেন তো, বিনা টাকায় এত খাতিরের রহস্য কি?
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত দিন