অতিরিক্ত মেদ ভূঁড়ি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। মেদভুঁড়ি কেবল দেহের সৌন্দর্যকেই ব্যাহত করে তা নয় অল্প পরিশ্রমেই ক্লান্তি, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগসহ হৃদরোগে আক্রান্তের ঝুঁকিও বাড়ায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা দেহের অতিরিক্ত মেদ ও ওজনের সাথে হৃদরোগের যোগসূত্র রয়েছে বলে মনে করেন। ড. উলফ্ স্মিথের নেতৃত্বে সুইডিশ এক স্বাস্থ্য সমীক্ষায় জানা যায় উরু-নিতম্ব বা শরীরের অন্য অংশে মেদ বা চর্বি জমার চেয়ে যাদের পেটে চর্বি বা ভুঁড়ির পরিমাণ ও আয়তন বেশি তাদের হৃদরোগে আক্রান্তের ঝুঁকিও তিন থেকে পাঁচগুণ বেশি।
সমীক্ষায় জানা যায় যে সব পুরুষের কোমর ও নিতম্বের অনুপাত ১.০-এর বেশি অর্থাৎ কোমরের মাপ ৪০ ইঞ্চি এবং নিতম্বের মাপ ৩৬ ইঞ্চি অর্থাৎ অনুপাত ১.১ তাদের হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্তের ঝুঁকিও বেশি। মহিলাদের ক্ষেত্রে কোমর ও নিতম্বের পরিমাপ বা অনুপাত ০.৮-এর বেশি হওয়া উচিত নয়। উল্লেখ্য ৩৩ ইঞ্চি কোমর এবং ৩৬ ইঞ্চি নিতম্ব মানে অনুপাতের মান ০.৯।
গবেষকদের মতে পেট বা ভুঁড়ির (Potbelly) চর্বি কোষ তুলনামূলকভাবে খুব সক্রিয় থাকে তাই খুব দ্রুত তারা চর্বি বা ফ্যাট সঞ্চয় করে থাকে। পুুরুষদের মধ্যে মেদ-ভুঁড়ির প্রবণতাও বেশি আর তাই নারীদের তুলনায় হৃদরোগে আক্রান্তের হারও তাদের মধ্যে বেশি। বেশি বেশি সম্পৃক্ত ধরনের চর্বি খাওয়া, শারীরিক শ্রমহীনতা, জেনেটিক কারণ প্রভৃতি মেদ-ভুঁড়ির জন্ম দেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে আমাদের দেহের চর্বিকোষের সংখ্যা বংশানুক্রমে নির্ধারিত থাকে। সাধারণত পূর্ণবয়ষ্কদের দেহে ত্রিশ থেকে চল্লিশ বিলিয়ন চর্বিকোষ থাকতে পারে। বেশি বেশি খাবার গ্রহণ করলে এবং ব্যায়াম না করলে এই চর্বিকোষগুলো আকার ও ওজনে বাড়তে থাকে। বয়:প্রাপ্তির সময়ে অতিভোজনের অভ্যাস নতুন চর্বিকোষ সৃষ্টি করতেও সক্ষম।
কেবলমাত্র ডায়েটিং করে মেদভুঁড়ি কমানো যায় না। রকফেলার ইউনিভার্সিটির ডাঃ ফাউস্ট বলেন যে চর্বিকোষের আকৃতি কমানো সম্ভব তবে চর্বিকোষ নির্র্মূল করা কখনও সম্ভব নয়। তাই মেদ-ভুঁড়ি কমানোর অভিনব বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট না হয়ে পরিমিত ভোজন এবং পর্যাপ্ত ব্যায়াম বা শরীর চর্চা করে মেদ-ভুঁড়ি ও ওজন নিয়ন্ত্রণ করাই শ্রেয়।
কায়েদ-উয-জামান
সহকারী অধ্যাপক, জীববিজ্ঞান বিভাগ,
শহীদ জিয়াউর রহমান কলেজ, জামালপুর।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত দিন