চিরায়ত গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের ধারক পালকি আর চোখে পড়ছে না। পালকিও কোন কোন খানদানি বাড়িতে অচল হয়ে পড়ে আছে। কিংবা মিউজিয়াম পিস হয়ে কালের স্থানু সাক্ষী হয়ে আছে জাদুঘরে। বেহারাদের সুর করে সেই কিনু গোয়ালার গলি ঘুরে মাঠ প্রান্তর পেরিয়ে গন্তব্যের কাছে দূর থেকে সেই ছয় বেহারাদের আর দেখা যাচ্ছে না। তাদের ছন্দিত লয়ে হাঁটার সাথে সাথে এ গাঁও থেকে ওগাঁয়ে নাইয়র, বিয়ের কনে-বর কিংবা মান্যগণ্য ব্যক্তিদের নিয়ে যাওয়ার এ চক্রবিহীন যান সম্ভবত তার অন্তিম প্রহর গুনছে।
ছন্দের জাদুকর সত্যেন্দ্র নাথ দত্তের ভাষায়, রবীন্দ্রনাথের কবিতায়, হেমন্তের গানে কিংবা ভূপেন হাজারিকার মাদল মাদক তানে চলা পালকি এখন ঐতিহ্যের খাতায় নাম লেখাচ্ছে। সেই ন্যাংটা পুঁটো ছেলেটা আর বলে না পালকি চলে, পালকি চলে ঃ আদুল গায়ে যাচ্ছে কারা — যাচ্ছে কারা হনহনিয়ে।
রবি ঠাকুরের ’বীরপুরুষ’ কবিতার খোকা তার মাকে পালকিতে নিয়ে যাওয়ার সময় লড়ে না ডাকাতের সাথে যখন ওরা আসে তেড়ে ‘হারে রে রে’ বলে। সেই ভীষণ যুদ্ধের বর্ণনাও দিতে পারে না মাকে। মাও বলতে পারেন না , ভাগ্যে খোকা ছিল তাঁর সাথে। দাদা তার সদ্য বিয়ে হওয়া দিদিটিকে আর বলে না, এ কটা দিন থাক না দিদি , কেঁদে কেটে কঁকিয়ে, দুদিন বাদে তো নিয়েই যাবে পালকি করে সাজিয়ে। ‘মৈমনসিং গীতিকার’ দেওয়ানা মদিনাও ছুটবে না পালকিতে আবের পাংখা নিয়ে আর।
পালকি বহরের আর সেই পরিচিত দৃশ্য এখন আর দেখা যায় না। আধুনিক যোগাযোগের গোগ্রাসে পালকি হারিয়ে যাচ্ছে বিস্মৃতির অতল তলে প্রাচীন বাংলার এ বাহনটি। আসলে পালকি নামটির উৎপত্তি ফারসি ও সংস্কৃত – উভয় ইন্দোভারতীয় ভাষা থেকে আর সেই সাথে ফরাসি থেকেও। সংস্কৃতে পলাঙ্কিকা।
রবি ঠাকুরের ’বীরপুরুষ’ কবিতার খোকা তার মাকে পালকিতে নিয়ে যাওয়ার সময় লড়ে না ডাকাতের সাথে যখন ওরা আসে তেড়ে ‘হারে রে রে’ বলে। সেই ভীষণ যুদ্ধের বর্ণনাও দিতে পারে না মাকে। মাও বলতে পারেন না , ভাগ্যে খোকা ছিল তাঁর সাথে। দাদা তার সদ্য বিয়ে হওয়া দিদিটিকে আর বলে না, এ কটা দিন থাক না দিদি , কেঁদে কেটে কঁকিয়ে, দুদিন বাদে তো নিয়েই যাবে পালকি করে সাজিয়ে। ‘মৈমনসিং গীতিকার’ দেওয়ানা মদিনাও ছুটবে না পালকিতে আবের পাংখা নিয়ে আর।
পালকি বহরের আর সেই পরিচিত দৃশ্য এখন আর দেখা যায় না। আধুনিক যোগাযোগের গোগ্রাসে পালকি হারিয়ে যাচ্ছে বিস্মৃতির অতল তলে প্রাচীন বাংলার এ বাহনটি। আসলে পালকি নামটির উৎপত্তি ফারসি ও সংস্কৃত – উভয় ইন্দোভারতীয় ভাষা থেকে আর সেই সাথে ফরাসি থেকেও। সংস্কৃতে পলাঙ্কিকা।
পল্লীকবি জসিমউদ্দীন তাঁর স্মৃতিকথায় এ গাঁও থেকে ওগাঁওয়ে যাওয়া বেহারাদের পালকি নিয়ে চলার যে বিবরণ দিয়েছেন তা আমাদের আবহমান বাংলার ঐতিহ্যের অংশ। বিলুপ্ত প্রায় এ পালকি এখন নানা জাদুঘরে শোভা পাচ্ছে।
এককালে নদীনালা কম এরকম কিছু জেলা যেমন যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা, নড়াইল, ঝিনাইদহ, মাগুরা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ফরিদপুর, মাদারিপুরসহ বিভিন্ন জেলায় ৫০’ -৬০’-এ দশকেও অনেক পালকি চোখে পড়তো। বিশেষ করে বিয়ে বাড়িতে নব বরবধূ আনা নেয়ায় পালকি ব্যবহার করা হতো। চক্রযানের বিপ্লবে পালকির জায়গা করে নেয় ছৈওয়াল নকশী গরু গাড়ি। আর আধুনিকোত্তর এই যুগে জায়াগা দখল করে নিয়েছে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস। হালে লাঙ্গল যেমন গ্রামেও অচল তেমনি ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলে নানা অনুষ্ঠানে ব্যবহার করছে কার আর মাইক্রোবাস। এ যানের রমরমা ব্যবসাও একই কারণে জমে উঠেছে।
এককালে নদীনালা কম এরকম কিছু জেলা যেমন যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা, নড়াইল, ঝিনাইদহ, মাগুরা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ফরিদপুর, মাদারিপুরসহ বিভিন্ন জেলায় ৫০’ -৬০’-এ দশকেও অনেক পালকি চোখে পড়তো। বিশেষ করে বিয়ে বাড়িতে নব বরবধূ আনা নেয়ায় পালকি ব্যবহার করা হতো। চক্রযানের বিপ্লবে পালকির জায়গা করে নেয় ছৈওয়াল নকশী গরু গাড়ি। আর আধুনিকোত্তর এই যুগে জায়াগা দখল করে নিয়েছে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস। হালে লাঙ্গল যেমন গ্রামেও অচল তেমনি ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলে নানা অনুষ্ঠানে ব্যবহার করছে কার আর মাইক্রোবাস। এ যানের রমরমা ব্যবসাও একই কারণে জমে উঠেছে।
ছড়ায় বলা হয়েছে বউ সাজবে কালকি, চড়বে সোনার পালকি! না সোনার বরনীকন্যা এখন আর পালকির বদ্ধ পরিবেশে যাবে না, উঠবে আসল বা নকল ফুলে সাজানো ফুলেল এয়ারকন্ডিশন্ড কারে।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত দিন