আজকে যারা মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান কালকে তারাই হবে সন্তানের মাতা-পিতা। সুতরাং আজকের অবাধ্য সন্তান কালকে কখনও বাধ্য, অনুগত ও সৎ সন্তান নিজেদের জন্য কামনা করতে পারে না। আজকের অধিকাংশ সন্তানই স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করে জ্ঞান আহরণ করছে। ভালোমন্দ বিচার করার ক্ষমতা অর্জন করছে; তথাপি দেখা যায় তারা তাদের মাতা-পিতার প্রতি যথার্থ দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। ইউরোপ আমেরিকায় দেখা যায় বৃদ্ধ মাতা-পিতার জন্য সরকারি আশ্রম খোলা হয়েছে। মাতা-পিতার প্রতি সন্তানের অনীহা অযত্ন ও ভালোবাসার অভাবে ওই দেশের সরকার বৃদ্ধদের জন্য এরকম আশ্রম খুলতে বাধ্য হয়েছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও এরকম আশ্রম রয়েছে। আমাদের দেশেও দেখা যায় অনেক ছেলে বিয়ে করার পর মাতা-পিতাকে ফেলে নিজের সংসার নিয়ে আলাদা বসবাস করছে। কোন মুসলমান সন্তানের আচরণ এমন হতে পারে না! অথচ আমরা মুসলমান হয়েও এরকম আচরণ করছি। মাতা-পিতার অবাধ্য হচ্ছি, তাদের অযত্ন অবহেলা করছি। শুধু টাকা-পয়সা দিয়ে মাতা-পিতাকে সাহায্য করলেই তাদের প্রতি দায়িত্ব সম্পন্ন হয় না। এখন আমরা পবিত্র কোরআনের আলোকে এ বিষয়ের ওপর আলোচনা করব।
সুরা বনি ইসরাইলে ২৪নং আয়াতে আল্লাহপাক নির্দেশ দিচ্ছেন,
‘তোমাদের পিতা-মাতা বার্ধক্যে পৌঁছলে তাদের প্রতি সদাচরণ করবে। (এমনকি) তাদের উদ্দেশ্যে উহ্ শব্দটি পর্যন্ত করবে না। তাদের ধমক দেবে না বরং কথা বলবে আদবের সঙ্গে বিনয়, নম্র ও অনুকম্পিত থেকে। তাদের জন্যে আর আল্লাহর কাছে প্রার্থনা কর এভাবে, ওহে আমার প্রতিপালক তাদের প্রতি অনুগ্রহ কর সেভাবে যেভাবে তারা শিশু ও শৈশবে আমাদেরকে লালন পালন করেছেন।’ মাতা-পিতার প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালন করা, তাদের হুকুম মান্য করা, তাদের যত্ন করা, তাদের ভালোবাসা, তাদের প্রতি শোকর ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ইত্যাদি বিষয়কে আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনে ফরজ করে দিয়েছেন। (দেখুন- আনকাবুত- ৮, আহ্কাফ-১৫, বাকারা- ৮৩, নিসা- ৩৬, আনয়াম- ১৫১, লুকমান - ১৪, মরিয়ম- ১২, ১৩, ১৪, ৩০, ৩১, ৩২ ইত্যাদি)। পবিত্র কোরআন দৃষ্টে নবীদের (আ.) জীবনীতে দেখা যায় তাঁরা তাঁদের মাতা-পিতার অনুগত এবং বাধ্য ছিলেন এবং তাদের প্রতি যথাযথ দায়িত্ব এবং কর্তব্য সম্পাদন করেছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা মাতা-পিতার আদব, সম্মান এবং তাদের প্রতি সদ্ব্যবহার করাকে প্রতিটি মুসলমানের এবাদতের সঙ্গে শামিল করে ফরজ করে দিয়েছেন। যেমন সুরা লোকমানের ১৪নং আয়াতে আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ের সঙ্গে মাতা-পিতার শুকরিয়া আদায় করাকেও আল্লাহতালা ফরজ ঘোষণা করেছেন। মাতা-পিতার প্রতি কৃতজ্ঞ না হলে শত এবাদত করেও আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া যায় না একথা পবিত্র কোরআন এবং হাদিস শরিফ দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত। মাতা-পিতা যদি কাফের মুশরিকও হয় তবুও আল্লাহপাক এ দায়িত্ব থেকে কোন মুসলমান তথা মানব সন্তানকে রেহাই দেননি। যেমন কুরতুবি এ বিষয়ের সমর্থনে বোখারির একটি হাদিস উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন- হজরত আসমা (রা.) রাসূলুল্লাহকে (সা.) জিজ্ঞাসা করলেন, আমার জননী মুশরিকা। তিনি আমাকে দেখতে আসেন। তাকে আদর-আপ্যায়ন করা জায়েজ হবে কি? প্রিয়নবী (সা.) বললেন, অবশ্যই তুমি তোমার মাকে আদর-যত্ন করবে। পবিত্র কোরআনে এ ব্যাপারে নির্দেশ আছে, পিতা-মাতা যদি তোমাদের কাফের হতে আদেশ করে তা তোমাদের পালন করা জায়েজ নয়। তবে দুনিয়াবি যাবতীয় সদ্ব্যবহার তাদের সঙ্গে বজায় রাখবে। জেহাদে অংশগ্রহণ করার চেয়েও মাতা-পিতার সেবাযত্নে অংশগ্রহণ করা উত্তম। বুখারিতে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহর (সা.) কাছে এক ব্যক্তি জেহাদে যাওয়ার অনুমতি চাইলে তিনি তাকে বললেন, তোমার ঘরে কি তোমার মাতা-পিতা আছে? সে বলল, জি হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তাহলে তুমি তোমার মাতা-পিতার সেবাযত্ন করেই জেহাদে অংশগ্রহণ কর। সুলতানুল আরেফিন হজরত বায়েজিদ বোস্তামির (রা.) মাতৃভক্তির কথা আমরা অনেকেই জানি, এক রাতে জননী নিদ্রারত অবস্থায় পানি চাইলে বায়েজিদ দেখলেন ঘরে পানি নেই। তিনি কলসি নিয়ে ঝরনায় পানি আনতে গেলেন। এসে দেখলেন মা জননী ঘুমিয়ে পড়েছেন। তিনি পানির পাত্র নিয়ে মায়ের শিয়রে দাঁড়িয়ে রইলেন। কখন মা জননী আবার পানি চাইবেন এবং তৎক্ষণাৎ তাকে পানি দিতে হবে। এভাবে সারারাত দাঁড়িয়ে রইলেন। সকাল হলে মা জননী দেখলেন তার আদরের সন্তান তার শিয়রে পানি হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ছেলের মাতৃভক্তির কথা মাতার জানতে আর বাকি রইল না। হাত তুলে পুত্রের জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করলেন। আল্লাহপাক মায়ের দোয়া কবুল করলেন। বায়েজিদ হয়ে গেলেন জগৎ বিখ্যাত অলি আল্লাহ। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কথাও আমরা জানি। তিনি মায়ের নির্দেশ পালন করতে গিয়ে সাঁতরিয়ে উত্তাল নদী উত্তরণ করে মায়ের কাছে হাজির হয়েছিলেন। আমাদের সন্তানদের এসব দৃষ্টান্ত স্মরণ রাখা উচিত। এভাবেই একজন মানুষ আদর্শ মানুষ হতে পারে।
সুরা বনি ইসরাইলে ২৪নং আয়াতে আল্লাহপাক নির্দেশ দিচ্ছেন,
‘তোমাদের পিতা-মাতা বার্ধক্যে পৌঁছলে তাদের প্রতি সদাচরণ করবে। (এমনকি) তাদের উদ্দেশ্যে উহ্ শব্দটি পর্যন্ত করবে না। তাদের ধমক দেবে না বরং কথা বলবে আদবের সঙ্গে বিনয়, নম্র ও অনুকম্পিত থেকে। তাদের জন্যে আর আল্লাহর কাছে প্রার্থনা কর এভাবে, ওহে আমার প্রতিপালক তাদের প্রতি অনুগ্রহ কর সেভাবে যেভাবে তারা শিশু ও শৈশবে আমাদেরকে লালন পালন করেছেন।’ মাতা-পিতার প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালন করা, তাদের হুকুম মান্য করা, তাদের যত্ন করা, তাদের ভালোবাসা, তাদের প্রতি শোকর ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ইত্যাদি বিষয়কে আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনে ফরজ করে দিয়েছেন। (দেখুন- আনকাবুত- ৮, আহ্কাফ-১৫, বাকারা- ৮৩, নিসা- ৩৬, আনয়াম- ১৫১, লুকমান - ১৪, মরিয়ম- ১২, ১৩, ১৪, ৩০, ৩১, ৩২ ইত্যাদি)। পবিত্র কোরআন দৃষ্টে নবীদের (আ.) জীবনীতে দেখা যায় তাঁরা তাঁদের মাতা-পিতার অনুগত এবং বাধ্য ছিলেন এবং তাদের প্রতি যথাযথ দায়িত্ব এবং কর্তব্য সম্পাদন করেছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা মাতা-পিতার আদব, সম্মান এবং তাদের প্রতি সদ্ব্যবহার করাকে প্রতিটি মুসলমানের এবাদতের সঙ্গে শামিল করে ফরজ করে দিয়েছেন। যেমন সুরা লোকমানের ১৪নং আয়াতে আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ের সঙ্গে মাতা-পিতার শুকরিয়া আদায় করাকেও আল্লাহতালা ফরজ ঘোষণা করেছেন। মাতা-পিতার প্রতি কৃতজ্ঞ না হলে শত এবাদত করেও আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া যায় না একথা পবিত্র কোরআন এবং হাদিস শরিফ দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত। মাতা-পিতা যদি কাফের মুশরিকও হয় তবুও আল্লাহপাক এ দায়িত্ব থেকে কোন মুসলমান তথা মানব সন্তানকে রেহাই দেননি। যেমন কুরতুবি এ বিষয়ের সমর্থনে বোখারির একটি হাদিস উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন- হজরত আসমা (রা.) রাসূলুল্লাহকে (সা.) জিজ্ঞাসা করলেন, আমার জননী মুশরিকা। তিনি আমাকে দেখতে আসেন। তাকে আদর-আপ্যায়ন করা জায়েজ হবে কি? প্রিয়নবী (সা.) বললেন, অবশ্যই তুমি তোমার মাকে আদর-যত্ন করবে। পবিত্র কোরআনে এ ব্যাপারে নির্দেশ আছে, পিতা-মাতা যদি তোমাদের কাফের হতে আদেশ করে তা তোমাদের পালন করা জায়েজ নয়। তবে দুনিয়াবি যাবতীয় সদ্ব্যবহার তাদের সঙ্গে বজায় রাখবে। জেহাদে অংশগ্রহণ করার চেয়েও মাতা-পিতার সেবাযত্নে অংশগ্রহণ করা উত্তম। বুখারিতে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহর (সা.) কাছে এক ব্যক্তি জেহাদে যাওয়ার অনুমতি চাইলে তিনি তাকে বললেন, তোমার ঘরে কি তোমার মাতা-পিতা আছে? সে বলল, জি হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তাহলে তুমি তোমার মাতা-পিতার সেবাযত্ন করেই জেহাদে অংশগ্রহণ কর। সুলতানুল আরেফিন হজরত বায়েজিদ বোস্তামির (রা.) মাতৃভক্তির কথা আমরা অনেকেই জানি, এক রাতে জননী নিদ্রারত অবস্থায় পানি চাইলে বায়েজিদ দেখলেন ঘরে পানি নেই। তিনি কলসি নিয়ে ঝরনায় পানি আনতে গেলেন। এসে দেখলেন মা জননী ঘুমিয়ে পড়েছেন। তিনি পানির পাত্র নিয়ে মায়ের শিয়রে দাঁড়িয়ে রইলেন। কখন মা জননী আবার পানি চাইবেন এবং তৎক্ষণাৎ তাকে পানি দিতে হবে। এভাবে সারারাত দাঁড়িয়ে রইলেন। সকাল হলে মা জননী দেখলেন তার আদরের সন্তান তার শিয়রে পানি হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ছেলের মাতৃভক্তির কথা মাতার জানতে আর বাকি রইল না। হাত তুলে পুত্রের জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করলেন। আল্লাহপাক মায়ের দোয়া কবুল করলেন। বায়েজিদ হয়ে গেলেন জগৎ বিখ্যাত অলি আল্লাহ। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কথাও আমরা জানি। তিনি মায়ের নির্দেশ পালন করতে গিয়ে সাঁতরিয়ে উত্তাল নদী উত্তরণ করে মায়ের কাছে হাজির হয়েছিলেন। আমাদের সন্তানদের এসব দৃষ্টান্ত স্মরণ রাখা উচিত। এভাবেই একজন মানুষ আদর্শ মানুষ হতে পারে।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত দিন