আজ ব্যাংকে ডিপোজিট জমা দিতে গিয়ে যখন লাইনে ছিলাম তখন কাউন্টারে ছিলো ম্যাডাম।তখন পাশের কাউন্টারে যখন চারজন জমা দেওয়া শেষ হয়ে গেলে ও ম্যাডাম সে সময়ে জমা নিলো মাত্র একজনের, তাই বললাম ম্যাডাম খালিতো সমান অধিকার চান, পাশের স্যার তো চারজনের টা জমা নিয়ে নিলো আর আপনি এখনও একটা শেষ করতে পারলেন না?তখন তিনি মুচকি হেসে মাথা নীচু করে টাকা গুনতে লাগলেন। প্রকৃতি আমাদের যে ক্ষমতা দিয়েছে তা অতিক্রম করা মানুষের পক্ষে সম্ভব না।"
এধরনের আরও কিছু ঘটনা আরো বিভিন্ন জায়গায় দেখেছি। প্রায়ই দেখি বাসে মহিলাদের সংরক্ষিত আসনে পুরুষরা বসে থাকেন এবং মহিলারা এলে তাদের সহজে সিট ছেড়ে দিতে চাননা। অনেকে চেচামেচি জুড়ে দেন, নানা কথা বলেন। চেচামেচি করা লোকগুলোকে একটি কমন যু্ক্তি দিতে দেখি তা হলো: সমঅধিকারের কথা বলে আবার আসন সংরক্ষিত কেন? অন্য আরেকদিন একটি ব্যাংকে গিয়েছি। সেখানে সবাই লাইন ধরে ছিল। একজন মহিলা বলল তার বাচ্চা আছে তাকে যেন প্রায়োরিটি দিয়ে একটু আগে সুযোগ দেয়া হয়। এতে অনেকে খুব ক্ষিপ্ত হয়ে নানান কথা বলতে লাগল যার মধ্যে অনেকেই সমঅধিকারের প্রসঙ্গ টেনে আনল। শেষে মহিলাটি অপমানিত হয়ে আজকে আর কাজটি করবেইনা বলে বের হয়ে গেল।
দেখা যাচেছ মহিলাগুলো অযাচিতভাবেই এমন বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন। পাশ্চাত্যের অনুকরণে সমাজের একটি অংশ সমঅধিকারের কথা বলে থাকেন। এ ব্যাপারটি যে সব মহিলারাই ইন্টেলেকচুয়ালি বুঝেন বা এর সাথে সবাই যে একমত বা সবাই যে এ আন্দোলনের সাথে সক্রিয়, তা নয়। সেজন্য পাবলিকলি এভাবে "সমঅধিকারের খোটা" দেওয়াটা কতটুকু যুক্তি সংগত?
আসলে পাশ্চাত্যের অনুকরণে 'সমঅধিকার' শব্দটি আমদানী করা হয়েছে। সমঅধিকারের মানে যদি আমরা বুঝি স্কেল দিয়ে মেপে মেপে সব জায়গায় সমান সমান করতে হবে, তাহলে বলতে হবে এটা বড় ভ্রান্তি। বরং সমাজের নৈতিক ও আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে বলা যায় অনেক ক্ষেত্রেই মহিলাদের বেশি প্রাপ্য আবার অনেক ক্ষেত্রে পুরুষদের বেশি প্রাপ্য। এজন্যে এটি আসলে হবে "প্রাপ্য-অধিকার" বা বলা যায় "ফেয়ার ট্রিটমেন্ট"। এ জিনিসটিই ইসলামে সুন্দরভাবে হ্যান্ডেল করার নীতি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এজন্যে ইসলামের ফ্রেমওয়র্কের মধ্যে থাকলেই আলটিমেটলি সবাই সমান অধিকার পাবে। এবং অধিকার সমান করতে হলে অনেক জায়গাতেই মহিলাদের প্রেফারেন্সিয়াল ট্রিটমেন্ট লাগবে। যেমন বাসে মহিলারা কুরুচিপূর্ণ পুরুষদের হাতে নাজেহাল হবার সম্ভাবনা আছে বিধায় বাসে তাদের সংরক্ষিত সিট রাখতে হবে (বর্তমানে যা আছে তার চেয়েও বেশী থাকা উচিত)। আবার একইভাবে কোথাউ লাইন মেইনটেইন করতে হলেও মহিলাদের আলাদা লাইন বা প্রেফারেন্স পাওয়া উচিত (যেহেতু মহিলাদের সন্তান ধারন ও লালন পালনের ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করতে হয়)। এক্ষেত্রে "সম-অধিকারের" উসিলা তুলে খোটা দিয়ে নারীদেরকে বিব্রত করা উচিত নয়।
কিছু পুরুষ আবার আছেন "প্রকৃতি প্রদত্ত ক্ষমতা", ব্রেইনের সাইজ ইত্যাদি আলোচনার অবতারণা করে "পুরুষরা শ্রেষ্ঠ" বা বেশী "ক্ষমতাবান", এধরণের উপসংহারে পৌছে বেশ আত্মতৃপ্তিতে ভোগেন। আলেমদের মধ্যেও এক অংশ (অনেক সময় সুরা নিসার(৩)-৩৪ নম্বর আয়াতের উদ্বৃত্তি দিয়ে) পুরুষের শ্রেষ্ঠত্বের স্তব স্তুতিতে মুখে ফেনা তুলে ফেলেন। প্রথমত: যদি পুরুষরা শ্রেষ্ঠ হয়েও থাকে তাহলে বলতে হবে তারা নিকৃষ্ট। কেননা তারাই নারীদের বেশী নির্যাতন করছে এবং তাদের প্রাপ্য অধিকার দিচ্ছেনা। দ্বিতীয়ত: যেসব যুক্তির ভিত্তিতে অনেকে পুরুষদের তথাকথিত "শ্রেষ্ঠ" বলছে, আল্লাহর কাছে তা কোনো যুক্তি নয়। ৪৯:১৩ (সুরা হুজুরাতের ১৩) নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেই দিয়েছেন তার কাছে মর্যাদার ভিত্তি নারী বা পুরুষ হওয়া নয় বরং তাকওয়া। (অর্থাৎ মানুষ হিসেবে তারা সমান) তৃতীয়ত: পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব কোন আলোচ্য বিষয় নয়। পুরুষ ও নারীর মধ্যে শারিরীক পার্থক্য রয়েছে। অনেক দিক থেকে পুরুষ ইফিশিয়েন্ট হলেও অনেক কাজ পুরুষরা একবোরেই করতে সক্ষম নয় (যেমন সন্তান ধারণ) বলে তাদেরকে ইফিশিয়েন্সি স্কেলে নেগেটিভ মার্ক দেয়া যায়। আসল কথা হলো নারী-পুরষ কোন যুদ্ধে অবতীর্ণ নয় যে তাদের কাউকে অপরের চেয়ে ছোট করতে হবে। মূল বিষয় হলো ফেয়ার ট্রিটমেন্ট দেয়া। সমাজে মানুষ হিসেবে যাতে পুরুষ ও নারী তাদের প্রাপ্য অধিকার পায়, ফেয়ার ট্রিটমেন্ট পায়, কোন ধরনের ডিসক্রিমিনেশন-এর স্বীকার না হয় - এটা নিশ্চিত করাই আমাদের করণীয়। নারীরা যুগ যুগ ধরে নানাভাবে অধিকার থেকে বিঞ্চত এ দিকটিই মূল ভাববার বিষয়।
আগেই বলেছি, ফেয়ার ট্রিটমেন্ট বলতে পাশ্চাত্যপ্রেমী অনেকে বুঝছেন যে স্কেল ফিতা দিয়ে সব জায়গায় এক্কেবারে সমান সমান অধিকার দেয়া। আসলে এটা মোটেও সঠিক নয়। কারণ "ফেয়ার ট্রিটমেন্ট" বা প্রাপ্য অধিকার দিতে চাইলে অনেক ক্ষেত্রেই নারীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। কিন্তু স্কেল ফিতা দিয়ে মাপা "সম-অধিকারের" কথা যদি বলেন তাহলে এটা পাবার কথা না। যারা কোরআন সংশোধনের ধৃষ্টতাপূর্ণ কথা বলছেন তারা কিন্তু কৌশলে নারীদের মোহরানা, ভরণপোষণ - এসব অধিকার থেকে বঞ্চিত করে নারীদের ঠকাতে চাচেছন। এজন্য বলা যায় যারা কোরআনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন তারা আসলে নারী-অধিকারের স্বার্থে সেটা করছেননা, না বুঝে-না জেনে করছেন অথবা ইসলামকে খাটো করা, ধর্ম সম্পর্কে মানুষের মনে বিরূপ ধারণা তৈরি করার জন্য করছেন। কোরআনের ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যেই নারীর অধিকার ও স্বার্থ সবচেয়ে বেশী সংরক্ষণ করা সম্ভব।
নারীর মর্যাদা, মানুষ হিসেবে সমাজে নারীর অবস্থান, নারী অধিকারের স্বরূপ সম্পর্কে ইসলামপন্থী ও আলেমসমাজের একাংশ, পাশ্চাত্যপন্থী, প্রগতিবাদী, মেইল শভিনিস্ট সকলেরই মনোভাব পরিবর্তন করা অত্যন্ত জরুরী বলে মনে করি।
এধরনের আরও কিছু ঘটনা আরো বিভিন্ন জায়গায় দেখেছি। প্রায়ই দেখি বাসে মহিলাদের সংরক্ষিত আসনে পুরুষরা বসে থাকেন এবং মহিলারা এলে তাদের সহজে সিট ছেড়ে দিতে চাননা। অনেকে চেচামেচি জুড়ে দেন, নানা কথা বলেন। চেচামেচি করা লোকগুলোকে একটি কমন যু্ক্তি দিতে দেখি তা হলো: সমঅধিকারের কথা বলে আবার আসন সংরক্ষিত কেন? অন্য আরেকদিন একটি ব্যাংকে গিয়েছি। সেখানে সবাই লাইন ধরে ছিল। একজন মহিলা বলল তার বাচ্চা আছে তাকে যেন প্রায়োরিটি দিয়ে একটু আগে সুযোগ দেয়া হয়। এতে অনেকে খুব ক্ষিপ্ত হয়ে নানান কথা বলতে লাগল যার মধ্যে অনেকেই সমঅধিকারের প্রসঙ্গ টেনে আনল। শেষে মহিলাটি অপমানিত হয়ে আজকে আর কাজটি করবেইনা বলে বের হয়ে গেল।
দেখা যাচেছ মহিলাগুলো অযাচিতভাবেই এমন বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন। পাশ্চাত্যের অনুকরণে সমাজের একটি অংশ সমঅধিকারের কথা বলে থাকেন। এ ব্যাপারটি যে সব মহিলারাই ইন্টেলেকচুয়ালি বুঝেন বা এর সাথে সবাই যে একমত বা সবাই যে এ আন্দোলনের সাথে সক্রিয়, তা নয়। সেজন্য পাবলিকলি এভাবে "সমঅধিকারের খোটা" দেওয়াটা কতটুকু যুক্তি সংগত?
আসলে পাশ্চাত্যের অনুকরণে 'সমঅধিকার' শব্দটি আমদানী করা হয়েছে। সমঅধিকারের মানে যদি আমরা বুঝি স্কেল দিয়ে মেপে মেপে সব জায়গায় সমান সমান করতে হবে, তাহলে বলতে হবে এটা বড় ভ্রান্তি। বরং সমাজের নৈতিক ও আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে বলা যায় অনেক ক্ষেত্রেই মহিলাদের বেশি প্রাপ্য আবার অনেক ক্ষেত্রে পুরুষদের বেশি প্রাপ্য। এজন্যে এটি আসলে হবে "প্রাপ্য-অধিকার" বা বলা যায় "ফেয়ার ট্রিটমেন্ট"। এ জিনিসটিই ইসলামে সুন্দরভাবে হ্যান্ডেল করার নীতি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এজন্যে ইসলামের ফ্রেমওয়র্কের মধ্যে থাকলেই আলটিমেটলি সবাই সমান অধিকার পাবে। এবং অধিকার সমান করতে হলে অনেক জায়গাতেই মহিলাদের প্রেফারেন্সিয়াল ট্রিটমেন্ট লাগবে। যেমন বাসে মহিলারা কুরুচিপূর্ণ পুরুষদের হাতে নাজেহাল হবার সম্ভাবনা আছে বিধায় বাসে তাদের সংরক্ষিত সিট রাখতে হবে (বর্তমানে যা আছে তার চেয়েও বেশী থাকা উচিত)। আবার একইভাবে কোথাউ লাইন মেইনটেইন করতে হলেও মহিলাদের আলাদা লাইন বা প্রেফারেন্স পাওয়া উচিত (যেহেতু মহিলাদের সন্তান ধারন ও লালন পালনের ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করতে হয়)। এক্ষেত্রে "সম-অধিকারের" উসিলা তুলে খোটা দিয়ে নারীদেরকে বিব্রত করা উচিত নয়।
কিছু পুরুষ আবার আছেন "প্রকৃতি প্রদত্ত ক্ষমতা", ব্রেইনের সাইজ ইত্যাদি আলোচনার অবতারণা করে "পুরুষরা শ্রেষ্ঠ" বা বেশী "ক্ষমতাবান", এধরণের উপসংহারে পৌছে বেশ আত্মতৃপ্তিতে ভোগেন। আলেমদের মধ্যেও এক অংশ (অনেক সময় সুরা নিসার(৩)-৩৪ নম্বর আয়াতের উদ্বৃত্তি দিয়ে) পুরুষের শ্রেষ্ঠত্বের স্তব স্তুতিতে মুখে ফেনা তুলে ফেলেন। প্রথমত: যদি পুরুষরা শ্রেষ্ঠ হয়েও থাকে তাহলে বলতে হবে তারা নিকৃষ্ট। কেননা তারাই নারীদের বেশী নির্যাতন করছে এবং তাদের প্রাপ্য অধিকার দিচ্ছেনা। দ্বিতীয়ত: যেসব যুক্তির ভিত্তিতে অনেকে পুরুষদের তথাকথিত "শ্রেষ্ঠ" বলছে, আল্লাহর কাছে তা কোনো যুক্তি নয়। ৪৯:১৩ (সুরা হুজুরাতের ১৩) নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেই দিয়েছেন তার কাছে মর্যাদার ভিত্তি নারী বা পুরুষ হওয়া নয় বরং তাকওয়া। (অর্থাৎ মানুষ হিসেবে তারা সমান) তৃতীয়ত: পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব কোন আলোচ্য বিষয় নয়। পুরুষ ও নারীর মধ্যে শারিরীক পার্থক্য রয়েছে। অনেক দিক থেকে পুরুষ ইফিশিয়েন্ট হলেও অনেক কাজ পুরুষরা একবোরেই করতে সক্ষম নয় (যেমন সন্তান ধারণ) বলে তাদেরকে ইফিশিয়েন্সি স্কেলে নেগেটিভ মার্ক দেয়া যায়। আসল কথা হলো নারী-পুরষ কোন যুদ্ধে অবতীর্ণ নয় যে তাদের কাউকে অপরের চেয়ে ছোট করতে হবে। মূল বিষয় হলো ফেয়ার ট্রিটমেন্ট দেয়া। সমাজে মানুষ হিসেবে যাতে পুরুষ ও নারী তাদের প্রাপ্য অধিকার পায়, ফেয়ার ট্রিটমেন্ট পায়, কোন ধরনের ডিসক্রিমিনেশন-এর স্বীকার না হয় - এটা নিশ্চিত করাই আমাদের করণীয়। নারীরা যুগ যুগ ধরে নানাভাবে অধিকার থেকে বিঞ্চত এ দিকটিই মূল ভাববার বিষয়।
আগেই বলেছি, ফেয়ার ট্রিটমেন্ট বলতে পাশ্চাত্যপ্রেমী অনেকে বুঝছেন যে স্কেল ফিতা দিয়ে সব জায়গায় এক্কেবারে সমান সমান অধিকার দেয়া। আসলে এটা মোটেও সঠিক নয়। কারণ "ফেয়ার ট্রিটমেন্ট" বা প্রাপ্য অধিকার দিতে চাইলে অনেক ক্ষেত্রেই নারীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। কিন্তু স্কেল ফিতা দিয়ে মাপা "সম-অধিকারের" কথা যদি বলেন তাহলে এটা পাবার কথা না। যারা কোরআন সংশোধনের ধৃষ্টতাপূর্ণ কথা বলছেন তারা কিন্তু কৌশলে নারীদের মোহরানা, ভরণপোষণ - এসব অধিকার থেকে বঞ্চিত করে নারীদের ঠকাতে চাচেছন। এজন্য বলা যায় যারা কোরআনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন তারা আসলে নারী-অধিকারের স্বার্থে সেটা করছেননা, না বুঝে-না জেনে করছেন অথবা ইসলামকে খাটো করা, ধর্ম সম্পর্কে মানুষের মনে বিরূপ ধারণা তৈরি করার জন্য করছেন। কোরআনের ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যেই নারীর অধিকার ও স্বার্থ সবচেয়ে বেশী সংরক্ষণ করা সম্ভব।
নারীর মর্যাদা, মানুষ হিসেবে সমাজে নারীর অবস্থান, নারী অধিকারের স্বরূপ সম্পর্কে ইসলামপন্থী ও আলেমসমাজের একাংশ, পাশ্চাত্যপন্থী, প্রগতিবাদী, মেইল শভিনিস্ট সকলেরই মনোভাব পরিবর্তন করা অত্যন্ত জরুরী বলে মনে করি।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত দিন