বন্ধুহীন জীবন নাবিক বিহীন জাহাজের মতো। তাই মানুষ জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে একজন ভালো বন্ধুর প্রয়োজন অনুভব করে। কারণ, একজন প্রকৃত বন্ধু জীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার অংশীদার হয়। প্রকৃত বন্ধুই পারে আত্দার আত্মীয় হয়ে কিছুণের জন্য হলেও দুঃখ-কষ্টকে ভুলিয়ে রাখতে। প্রাচীন প্রবাদে বন্ধুত্বের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলা হতো, 'সম্পর্ক যখন জ্বরে পুড়ে তখন তার নাম হয় ভালবাসা, আর ভালবাসা যখন জ্বরে পুড়ে তার নাম হয় বন্ধুত্ব। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এরিস্টটল বলেছেন, 'দুটি দেহে একটি আত্মার অবস্থানই হলো বন্ধুত্ব।' এমারসন বলেছেন, 'প্রকৃতির সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টির নাম বন্ধুত্ব।' নিটসে বলেছেন, 'বিশ্বস্ত বন্ধু হচ্ছে প্রাণরাকারী ছায়ার মতো। যে তা খুঁজে পেলো, সে একটি গুপ্তধন পেলো।'
এবার দেখা যাক বন্ধুত্ব সম্পর্কে ইসলাম কি বলে? পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, 'মুমিনগণ যেন অন্য মুমিনকে ছেড়ে কোন কাফেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যারা এমনটি করবে, আল্লাহ তাদের সঙ্গে কোন সম্পর্ক রাখবেন না। হাদিসে বলা করা হয়েছে, 'মানুষ তার বন্ধুর আদর্শে গড়ে ওঠে। সুতরাং বন্ধু নির্বাচনের সময় খেয়াল করা উচিত সে কাকে বন্ধু বানাচ্ছে।' এর মাধ্যমে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, সব ধরনের লোকের সঙ্গে বন্ধুত্ব করাকে ইসলাম সমর্থন করে না। রাসূল (সা.) বলেছেন, 'দুনিয়াতে যার সঙ্গে বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা রয়েছে, পরকালে তার সঙ্গেই হাশর হবে ।' এজন্য বন্ধু নির্বাচনের আগে তাকে পরীা করে নেয়া জরুরি। ইমাম গাযযালী (রহঃ) বলেন, 'সবাইকে বন্ধু নির্বাচন করা যাবে না, বরং 3টি গুণ দেখে বন্ধু নির্বাচন করা উচিত। গুণ তিনটি হল- 1. বন্ধুকে হতে হবে জ্ঞানী ও বিচণ 2. বন্ধুর চরিত্র হতে হবে সুন্দর ও মাধুর্যময় এবং 3. বন্ধুকে হতে হবে নেককার ও পুণ্যবান।' ফরাসী এক প্রবাদে বলা হয়েছে, 'বন্ধুত্ব হলো তরমুজের মতো। ভালো একশটিকে পেতে হলে এক কোটি আগে পরীা করে দেখতে হয়।'
ইরানের বিখ্যাত মনীষী শেখ সাদী (রহঃ) বলেছেন, 'সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ' । এ উক্তির মুলকথা হচ্ছে, একজন উত্তম বন্ধু যেমন জীবনের গতি পাল্টে দিতে পারে, তেমনি একজন অসৎ বন্ধু জীবনকে ধ্বংসের চূড়ান্ত সীমায় পেঁৗছে দিতে পারে । তাই যাকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে তাকে আগেই যাচাই-বাছাই করে নিতে হবে। জ্ঞানী, সৎ, ন্যায়পরায়ণ, ত্যাগী, নিঃস্বার্থ, চরিত্রবান, সহজ-সরল ইত্যাদি গুণাবলি দেখে বন্ধু নির্বাচন করলে আশা করা যায় সে উত্তম বন্ধু হতে পারে।
ইমাম জয়নুল আবেদীন (রহঃ) পাঁচ শ্রেণীর মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেছেন। ওই পাঁচ শ্রেণীর মানুষ হলো- মিথ্যাবাদী, ইতর, কৃপন, অভদ্র ও নির্দয়। অন্যদিকে ইমাম জাফর সাদেক (রহঃ) তিন শ্রেণীর লোকের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেছেন। ওই তিন শ্রেণী হলো- বিশ্বাসঘাতক, নির্মম ও মিথ্যাবাদী। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, শেষ বিচারের দিন সকল বন্ধুই শত্রুতে পরিণত হবে তবে একমাত্র সৎ বন্ধুই সেদিন প্রকৃত বন্ধু হিসেবে পরিচয় দেবে। তাই বন্ধু নির্বাচনের েেত্র সততা, আমানতদারি, সত্যবাদিতা, বিশ্বস্থতা প্রভৃতি গুণের প্রতি ল্য রাখতে হবে।
তবে ভালো গুণ দেখে বন্ধুত্ব করার পরও অনেক সময় বন্ধুর মনের মাঝে লুকিয়ে থাকা খারাপ গুণগুলো প্রকাশ পেয়ে যায়। এেেত্র যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সে বন্ধুর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। যেমনটি করেছিলেন, আহলে বাইতের ষষ্ঠ ইমাম হযরত জাফর সাদেক (রহঃ)। 'ইমাম জাফর সাদেকের এক বন্ধু ছিলো; যে সব সময় ইমামের সাথে ঘোরাফেরা করতো। একদিন ইমাম বাজারে গেলেন। সঙ্গে সেই বন্ধু ও তার কাজের ছেলেটি ছিলো। বাজারে ঘুরতে ঘুরতে কাজের ছেলেটি কৌতুহল বশতঃ এটা ওটা দেখছিলো এবং মাঝে মাঝে পরিচিত লোকদের সাথে কথা বলছিলো। এতে সে তার মনিবের কাছ থেকে একটু পিছিয়ে পড়লো। আর এদিকে ইমাম ও তার বন্ধুটি বাজারের মাঝখানে চলে গেল। হঠাৎ পেছনের দিকে তাকিয়ে কাজের ছেলেকে না দেখে ইমামের বন্ধুর মেজাজ বিগড়ে গেল। কিছুন পর ছেলেটি ফিরে এলে মনিব তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো। ইমামের সামনেই সে কাজের ছেলেটির বাপ-মা তুলে গালি দিলো। লোকটির অশ্লীল কথাবার্তা শুনে ইমাম অবাক হয়ে তার বন্ধুর দিকে তাকিয়ে বললেন, 'হায় আল্লাহ! একি করলে তুমি! ছেলেটির বাপ-মা তুলে গালি দিলে? আমি তো মনে করেছিলাম তুমি একজন ধার্মিক ও খোদাভীরু লোক। এখন দেখছি সামান্য তাকওয়াও তোমার মধ্যে নেই!'
ইমামের কথা শুনে লোকটি বলল, আপনাকে আর কি বলবো, এই ছেলেটি আসলেই বদ। তার মা সিন্ধু থেকে এসেছিলো। ওই বেটির জন্মেরও কোন ঠিক ছিল না। তাছাড়া সে মুসলমানও ছিল না। সেক্ষেতে তাকে কিছু বলা মোটেও অন্যায় হয়নি।'
ইমাম বললেন, 'আমি জানি ওই মহিলা একজন অমুসলিম ছিল। কিন্তু তোমার জানা দরকার, প্রত্যেক ধর্মেরই নিজ নিজ আইন কানুন আছে। একজন অমুসলিম তার নিজ ধর্মের আইন অনুযায়ী বিয়ে করলে অশুদ্ধ হয় না। তাদের বিয়ের পর সন্তানাদি জন্মগ্রহণ করলেও তা অবৈধ হয় না। তুমি ছেলেটির মাকে অন্যায়ভাবে অপবাদ দিয়েছো। তাই তোমার সাথে বন্ধুত্ব রাখা আমার প েআর সম্ভব না। আজ থেকে তোমার সাথে আমার সম্পর্কের অবসান হলো। এ ঘটনার পর ইমাম জাফর সাদেকের সাথে ওই লোকটিকে আর কখনই দেখা যায়নি।'
অসময়ের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু এ কথা সবাই জানে। যে লোক রোদ উঠলে ছাতা ধার দেয় আর বৃষ্টি শূরু হলেই ছাতা নিয়ে নেয় সে কখনো বন্ধু প্রকৃত বন্ধু হতে পারে না। এ সম্পর্কে একটি বহুল প্রচলিত গল্প আছে। 'একবার দুই বন্ধু জঙ্গলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলো। হঠাৎ একটি ভাল্লুক তাদেরকে আক্রমন করতে এলো। দু'বন্ধুর মধ্যে যে গাছে উঠতে জানতো সে অন্যজনকে সাহায্য করার চেষ্টা না করে দৌড়ে গিয়ে গাছে উঠলো। অন্যজন কোন উপায় না দেখে মাটির ওপর মরার মতো শুয়ে রইলো। ভাল্লুক এসে লোকটির মুখ শুঁকে মৃত ভেবে চলে গেল। ভাল্লুক চলে যেতেই গাছের ওপর থেকে লোকটি নিচে নেমে এসে তার বন্ধুকে জিজ্ঞেস করলো, 'বন্ধু! ভাল্লুক তোমার কানে কানে কি বলল?' লোকটি জবাব দিলো- ভাল্লুকটি আমাকে বলেছে , যে বন্ধু বিপদ দেখে পালিয়ে যায়, সে প্রকৃত বন্ধু নয়; তাকে কখনো বিশ্বাস করো না।'
এ গল্প থেকে বুঝা যায় যে, সত্যিকারের বন্ধু কখনো বন্ধুর বিপদ দেখে পালিয়ে যেতে পারে না। বরং তারা বিপদে- আপদে পরস্পরকে সাহায্য করে। সে সাহায্য কোন দয়া-দাণ্যি কিংবা অনুগ্রহ নয়। সে সাহায্য জীবনেরই অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। যদি এ রকম সাহায্য না পাওয়া যায় তাহলে বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকে না।
বন্ধুত্ব যেমন সামাজিক জীবনকে সহজ ও সুন্দর করে তেমনি বন্ধুত্ব করা ঈমানের অঙ্গও বটে। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, 'যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে কাউকে ভালোবাসল, তাঁর জন্যই কাউকে ঘৃণা করল, তাঁরই সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কাউকে দান করল এবং তা থেকে বিরত থাকল তবে নিঃসন্দেহে সে নিজ ঈমানকে পূর্ণতা দান করল।' তাই বন্ধুত্ব যদি করতে হয় তাহলে
ইসলামের নির্দেশনা অনুসারে বন্ধু নির্বাচন করা উচিত। তাহলেই আমাদের জীবন হবে বিপদমুক্ত, নির্মল, ও আনন্দময়।
এবার দেখা যাক বন্ধুত্ব সম্পর্কে ইসলাম কি বলে? পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, 'মুমিনগণ যেন অন্য মুমিনকে ছেড়ে কোন কাফেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যারা এমনটি করবে, আল্লাহ তাদের সঙ্গে কোন সম্পর্ক রাখবেন না। হাদিসে বলা করা হয়েছে, 'মানুষ তার বন্ধুর আদর্শে গড়ে ওঠে। সুতরাং বন্ধু নির্বাচনের সময় খেয়াল করা উচিত সে কাকে বন্ধু বানাচ্ছে।' এর মাধ্যমে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, সব ধরনের লোকের সঙ্গে বন্ধুত্ব করাকে ইসলাম সমর্থন করে না। রাসূল (সা.) বলেছেন, 'দুনিয়াতে যার সঙ্গে বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা রয়েছে, পরকালে তার সঙ্গেই হাশর হবে ।' এজন্য বন্ধু নির্বাচনের আগে তাকে পরীা করে নেয়া জরুরি। ইমাম গাযযালী (রহঃ) বলেন, 'সবাইকে বন্ধু নির্বাচন করা যাবে না, বরং 3টি গুণ দেখে বন্ধু নির্বাচন করা উচিত। গুণ তিনটি হল- 1. বন্ধুকে হতে হবে জ্ঞানী ও বিচণ 2. বন্ধুর চরিত্র হতে হবে সুন্দর ও মাধুর্যময় এবং 3. বন্ধুকে হতে হবে নেককার ও পুণ্যবান।' ফরাসী এক প্রবাদে বলা হয়েছে, 'বন্ধুত্ব হলো তরমুজের মতো। ভালো একশটিকে পেতে হলে এক কোটি আগে পরীা করে দেখতে হয়।'
ইরানের বিখ্যাত মনীষী শেখ সাদী (রহঃ) বলেছেন, 'সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ' । এ উক্তির মুলকথা হচ্ছে, একজন উত্তম বন্ধু যেমন জীবনের গতি পাল্টে দিতে পারে, তেমনি একজন অসৎ বন্ধু জীবনকে ধ্বংসের চূড়ান্ত সীমায় পেঁৗছে দিতে পারে । তাই যাকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে তাকে আগেই যাচাই-বাছাই করে নিতে হবে। জ্ঞানী, সৎ, ন্যায়পরায়ণ, ত্যাগী, নিঃস্বার্থ, চরিত্রবান, সহজ-সরল ইত্যাদি গুণাবলি দেখে বন্ধু নির্বাচন করলে আশা করা যায় সে উত্তম বন্ধু হতে পারে।
ইমাম জয়নুল আবেদীন (রহঃ) পাঁচ শ্রেণীর মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেছেন। ওই পাঁচ শ্রেণীর মানুষ হলো- মিথ্যাবাদী, ইতর, কৃপন, অভদ্র ও নির্দয়। অন্যদিকে ইমাম জাফর সাদেক (রহঃ) তিন শ্রেণীর লোকের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেছেন। ওই তিন শ্রেণী হলো- বিশ্বাসঘাতক, নির্মম ও মিথ্যাবাদী। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, শেষ বিচারের দিন সকল বন্ধুই শত্রুতে পরিণত হবে তবে একমাত্র সৎ বন্ধুই সেদিন প্রকৃত বন্ধু হিসেবে পরিচয় দেবে। তাই বন্ধু নির্বাচনের েেত্র সততা, আমানতদারি, সত্যবাদিতা, বিশ্বস্থতা প্রভৃতি গুণের প্রতি ল্য রাখতে হবে।
তবে ভালো গুণ দেখে বন্ধুত্ব করার পরও অনেক সময় বন্ধুর মনের মাঝে লুকিয়ে থাকা খারাপ গুণগুলো প্রকাশ পেয়ে যায়। এেেত্র যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সে বন্ধুর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। যেমনটি করেছিলেন, আহলে বাইতের ষষ্ঠ ইমাম হযরত জাফর সাদেক (রহঃ)। 'ইমাম জাফর সাদেকের এক বন্ধু ছিলো; যে সব সময় ইমামের সাথে ঘোরাফেরা করতো। একদিন ইমাম বাজারে গেলেন। সঙ্গে সেই বন্ধু ও তার কাজের ছেলেটি ছিলো। বাজারে ঘুরতে ঘুরতে কাজের ছেলেটি কৌতুহল বশতঃ এটা ওটা দেখছিলো এবং মাঝে মাঝে পরিচিত লোকদের সাথে কথা বলছিলো। এতে সে তার মনিবের কাছ থেকে একটু পিছিয়ে পড়লো। আর এদিকে ইমাম ও তার বন্ধুটি বাজারের মাঝখানে চলে গেল। হঠাৎ পেছনের দিকে তাকিয়ে কাজের ছেলেকে না দেখে ইমামের বন্ধুর মেজাজ বিগড়ে গেল। কিছুন পর ছেলেটি ফিরে এলে মনিব তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো। ইমামের সামনেই সে কাজের ছেলেটির বাপ-মা তুলে গালি দিলো। লোকটির অশ্লীল কথাবার্তা শুনে ইমাম অবাক হয়ে তার বন্ধুর দিকে তাকিয়ে বললেন, 'হায় আল্লাহ! একি করলে তুমি! ছেলেটির বাপ-মা তুলে গালি দিলে? আমি তো মনে করেছিলাম তুমি একজন ধার্মিক ও খোদাভীরু লোক। এখন দেখছি সামান্য তাকওয়াও তোমার মধ্যে নেই!'
ইমামের কথা শুনে লোকটি বলল, আপনাকে আর কি বলবো, এই ছেলেটি আসলেই বদ। তার মা সিন্ধু থেকে এসেছিলো। ওই বেটির জন্মেরও কোন ঠিক ছিল না। তাছাড়া সে মুসলমানও ছিল না। সেক্ষেতে তাকে কিছু বলা মোটেও অন্যায় হয়নি।'
ইমাম বললেন, 'আমি জানি ওই মহিলা একজন অমুসলিম ছিল। কিন্তু তোমার জানা দরকার, প্রত্যেক ধর্মেরই নিজ নিজ আইন কানুন আছে। একজন অমুসলিম তার নিজ ধর্মের আইন অনুযায়ী বিয়ে করলে অশুদ্ধ হয় না। তাদের বিয়ের পর সন্তানাদি জন্মগ্রহণ করলেও তা অবৈধ হয় না। তুমি ছেলেটির মাকে অন্যায়ভাবে অপবাদ দিয়েছো। তাই তোমার সাথে বন্ধুত্ব রাখা আমার প েআর সম্ভব না। আজ থেকে তোমার সাথে আমার সম্পর্কের অবসান হলো। এ ঘটনার পর ইমাম জাফর সাদেকের সাথে ওই লোকটিকে আর কখনই দেখা যায়নি।'
অসময়ের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু এ কথা সবাই জানে। যে লোক রোদ উঠলে ছাতা ধার দেয় আর বৃষ্টি শূরু হলেই ছাতা নিয়ে নেয় সে কখনো বন্ধু প্রকৃত বন্ধু হতে পারে না। এ সম্পর্কে একটি বহুল প্রচলিত গল্প আছে। 'একবার দুই বন্ধু জঙ্গলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলো। হঠাৎ একটি ভাল্লুক তাদেরকে আক্রমন করতে এলো। দু'বন্ধুর মধ্যে যে গাছে উঠতে জানতো সে অন্যজনকে সাহায্য করার চেষ্টা না করে দৌড়ে গিয়ে গাছে উঠলো। অন্যজন কোন উপায় না দেখে মাটির ওপর মরার মতো শুয়ে রইলো। ভাল্লুক এসে লোকটির মুখ শুঁকে মৃত ভেবে চলে গেল। ভাল্লুক চলে যেতেই গাছের ওপর থেকে লোকটি নিচে নেমে এসে তার বন্ধুকে জিজ্ঞেস করলো, 'বন্ধু! ভাল্লুক তোমার কানে কানে কি বলল?' লোকটি জবাব দিলো- ভাল্লুকটি আমাকে বলেছে , যে বন্ধু বিপদ দেখে পালিয়ে যায়, সে প্রকৃত বন্ধু নয়; তাকে কখনো বিশ্বাস করো না।'
এ গল্প থেকে বুঝা যায় যে, সত্যিকারের বন্ধু কখনো বন্ধুর বিপদ দেখে পালিয়ে যেতে পারে না। বরং তারা বিপদে- আপদে পরস্পরকে সাহায্য করে। সে সাহায্য কোন দয়া-দাণ্যি কিংবা অনুগ্রহ নয়। সে সাহায্য জীবনেরই অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। যদি এ রকম সাহায্য না পাওয়া যায় তাহলে বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকে না।
বন্ধুত্ব যেমন সামাজিক জীবনকে সহজ ও সুন্দর করে তেমনি বন্ধুত্ব করা ঈমানের অঙ্গও বটে। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, 'যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে কাউকে ভালোবাসল, তাঁর জন্যই কাউকে ঘৃণা করল, তাঁরই সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কাউকে দান করল এবং তা থেকে বিরত থাকল তবে নিঃসন্দেহে সে নিজ ঈমানকে পূর্ণতা দান করল।' তাই বন্ধুত্ব যদি করতে হয় তাহলে
ইসলামের নির্দেশনা অনুসারে বন্ধু নির্বাচন করা উচিত। তাহলেই আমাদের জীবন হবে বিপদমুক্ত, নির্মল, ও আনন্দময়।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত দিন