প্রফেসর রফিকুজ্জামান অংকে পিএইচডি করে ডক্টর হয়েছেন।
তিনি প্রতিটা কাজের ফলাফল অংক কষে বের করে ফেলেন। সে এক এলাহী কাণ্ড! যে কাউকে দেখে তিনি অংক কষে বলতে পারেন এ ব্যক্তি আজ দিনে কী কী কাজ করেছে, দিনের বাকী সময় কী করবে, কী করা উচিত সঅব!
তিনি ঘোর নাস্তিক। ইদানিং তিনি স্রষ্টা যে নেই তা অংক কষে বের করার চেষ্টা করছেন।
তার ধারনা খুব শিঘ্রই সফল হবেন তিনি।
ইতোমধ্যে তিনি তার স্বপে একটা সমীকরণ দাঁড় করিয়ে ফেলেছেন। সমীকরনের ফলাফল ‘শূন্য’ হলে বুঝতে হবে স্রষ্টা আছে। আর যদি ‘এক’ হয় তাহলে স্রষ্টা নেই।
তিনি রাত-দিন সমীকরণ নিয়ে পড়ে থাকেন। এবং মনে প্রাণে চাচ্ছেন সমীকরণের ফলাফল হোক ‘এক’।
কিন্তু চাইলেই তো হবে না। সমীকরণ মিলতে হবে। সঠিক সমাধান হতে হবে। আর তাহলেই কেল্লাফতে! তিনি যুগান্তকারী আবিষ্কারক হয়ে যাবেন। ড. রফিকুজ্জামান তার ল্যাবরেটরীতে বসে তার ‘স্রষ্টা সন্ধান’ সমীকরণ নিয়ে কাজ করছেন।
হঠাৎ কাজ থামিয়ে গলা ছেড়ে ডাকলেন- টুণ্ডুপ! অ্যাই টুণ্ডুপ!!
ডাক শুনে হাজির হলো প্রফেসর সাহেবের চাকর।
‘তুমি এতোক্ষণ দাঁড়িয়েছিলে, না বসেছিলে?’
‘জ্বি, দাঁড়াই ছিলাম।’
‘এখানে যেভাবে দাঁড়িয়ে আছো সেভাবে, না অন্যভাবে?’
টুণ্ডুপ কিভাবে এতোক্ষণ দাঁড়িয়েছিলো সে ভঙ্গি দেখালো।
প্রফেসর সাহেব টুণ্ডুপকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে খাতা কলম টেনে নিলেন। তারপর খাতায় একটা সমীকরণ লিখে সমীকরণ সমাধান করার লক্ষে লিখে যেতে লাগলেন লাইনের পর লাইন।
পুরো সাতাশ মিনিট লাগলো সমীকরণের সমাধান টানতে। সমাধান করে প্রফেসর সাহেব টুণ্ডুপের দিকে তাকালেন হাসি হাসি মুখে।
‘তুমি এতোক্ষণ চা করছিলে। আর ভাবছিলে, স্যার চায়ের জন্যে কখন আমায় ডাকবেন। ঠিক?’
‘জ্বে, ঠিক অইছে।’
‘তাহলে যাও, চা নিয়ে আসো।’
টুণ্ডুপ এখন আর এসব কথায় আশ্চর্য বা অভিভূত হয় না। আর এ অল্প কথায় আশ্চর্য হবারই বা কী আছে? স্যার এরচে’ আরো কতো কঠিন কঠিন ব্যাপার সহজ করে বলে যান!
এই তো সেদিন সকালের কথাই ধরা যাক-
টুণ্ডুপ বাগানের বেঞ্চিতে বসে আছে চুপচাপ, আনমনে। হঠাৎ সম্বিত ফিরে পেয়ে সামনে ফিরে দেখে প্রফেসর স্যার তাকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে।
টুণ্ডুপ স্যারের দিকে তাকাতেই তিনি কাছে চলে এলেন। বললেন, ‘টুণ্ডুপ, তুমি আমার চোখের আড়ালে গিয়ে একশ’ কদম হাঁটবে। সেই সাথে তোমার মনে যা আসে তা-ই ভাববে। ঠিক আছে?’
জ্বে, ঠিক আছে।’
‘আমি তোমার জন্যে এখানে বসে আছি। একশ’ কদম হাঁটা শেষ হলে আমার কাছে চলে আসবে। আর যা ভাববে তা মনে রেখো। যাও।’
টুণ্ডুপ কিছু না ভেবে হাঁটতে চলে গেলো। এবং একটু পর ফিরে এলো।
‘স্যার…।’
টুণ্ডুপকে কথা বলতে না দিয়ে তার সারা দেহ ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলেন। পুরো দশ মিনিট টুণ্ডুপকে কাছে থেকে, দূরে গিয়ে, সামনে-পেছনে থেকে দেখে, মুখের পেশী হাত-পা লক্ষ্য করে বিদায় করলেন।
তারপর প্রফেসর সাহেব তার ল্যাবরেটরিতে গিয়ে খাতা কলম নিয়ে বসলেন।
একটানা পরদিন বিকেল পর্যন্ত তিনি অংক কষে গেলেন। দিস্তা দিস্তা খাতা আর ডজন ডজন কলমের কালি শেষ হলো। তিনি অনেকগুলো সমীকরণের সফল সমাধান করেছেন। বেশির ভাগ সমীকরণের ফলাফল হয়েছে ‘শূন্য’ আর ‘এক’ কিছু হয়েছে ইংরেজি বর্ণমালার শেষ তিনটি অক্ষর। কিছু হয়েছে নিরেট কতগুলো সংখ্যা।
শূন্য, এক, অক্ষর, সংখ্যা বিশ্লেষণ করে প্রফেসর সাহেব বিরাট তথ্যভাণ্ডার পেয়ে গেলেন। চাকর টুণ্ডুপকে ডেকে বললেন, ‘কাল তুমি হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিলে… ভাবছিলে, একটা মেয়ের কথা।’
প্রফেসরের কথা শুনে টুণ্ডুপের হৃদপিণ্ড ধক করে উঠলো। টুণ্ডুপ সত্যি সত্যি গতকাল হাঁটার সময় একটা মেয়ের কথা ভাবছিলো। সে যখন হাঁটতে রাস্তায় যায় তখন সেখানে একটা সুন্দরী মেয়ে তার চোখে পড়ে। সে মেয়েটাকে নিয়ে অনেক কিছু ভেবেছিলো। ভেবেছিলো, এই মেয়েটার সাথে তার বিয়ে হতে পারতো। এবং বিয়ে হলে সে মেয়েটার সাথে কীরকম ব্যবহার করবে, মেয়েটা তাকে কী বলবে, এমন কি বাসর রাতের দৃশ্যও ভেবেছিলো। এসব ভাবতে ভাবতে টুণ্ডুপের গায়ে কালো ঘাম দেখা দিলো। তার গলা শুকিয়ে গেলো। স্যার কি সত্যি সত্যি অংক কষে সব জেনে গেছেন? কী সব্বোনাশ!
টুণ্ডুপ কাঁপা কাঁপা দৃষ্টিতে স্যারের দিকে তাকালো। প্রফেসর সাহেব হাসি হাসি মুখ করে তার দিকে তাকিয়ে আছেন।
‘তুমি ভেবেছিলে, ইস! আমি যদি মেয়েটিকে বিয়ে করতে পারতাম। আরো ভেবেছিলে, তুমি মেয়েটির সাথে কী করতে চাও। আমি কি ঠিক বলেছি টুণ্ডুপ?’
টুণ্ডুপ বিস্ফারিত চোখে স্যারের দিকে তাকিয়ে রইলো।
‘শোনো টুণ্ডুপ, বিয়ে মোটেও ভালো জিনিস না। মেয়েরা হলো নরকের কীট, আবর্জনার নোংরা। টিকটিকির ল্যাজ, সর্বভূক আরশোলা, আর আর… আর বোকা! বুঝতে পারছো?’
টুণ্ডুপ মাথা নাড়লো।
‘তাহলে শোনো, বিয়ে তারচেয়েও নোংরা। আর বিয়ের পর তুমি যা করবে বলে কল্পনা করেছো ওসবতো যাচ্ছেতাই। খবিস! বুঝতে পারছো? হ্যাঁ, বুঝতে পারলে এবার যাও। এসব আর ভাববে না।’
টুণ্ডুপ মাথা নেড়ে রুম থেকে বের হলো। মেয়েরা ভালো নয়, এরা টিকটিকির ল্যাজ, নরকের কীট এসব তার বিশ্বাস হয় না।
একটু পরে প্রফেসর সাহেব আবার ডাকলেন টুণ্ডুপকে। টুণ্ডুপ ল্যাবে ঢুকতেই প্রফেসর স্যার বললেন,
‘তুমি মেয়েদের সম্পর্কে আমার ধারনার কথা বিশ্বাস করনি। সেটা আমি অংক কষে এই মাত্র বের করলাম।’
টুণ্ডুপ একথা শুনে আশ্চর্য হলো না। সে এরকম হবে বলেই ভেবেছিলো। স্যারের কথায় সে জীবনে একবারই আশ্চর্য হয়েছে। এখন তার অনুভূতি শূন্য। ব্যাপারটা সে সহজভাবে নিয়েছে। হয়তো ভাবছে, স্যারের অংক কষে বের করাটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু এটা যে সায়েন্টিস্ট কিংবা সুধীমহলের কাছে যুগান্তকারী আবিস্কার সে কথা তো আর টুণ্ডুপ জানে না।
তাই আজকে যখন টুণ্ডুপকে সব কিছু জিজ্ঞেস করে স্যার বললো, সে এতোক্ষণ চা করছিলো আর স্যারের চা লাগবে কি না ভাবছিলো তখন এটা সে স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছে। এখন বরং সে স্যারকে একাজে সহায়তা করে।
যেমন সে কখন কী করছে তা মনে রাখার চেষ্টা করে যেনো স্যার জিজ্ঞেস করলে ঠিক ঠিক বলতে পার। টুণ্ডুপ স্যারকে খুব ভালোবাসে। স্যারের জন্যে সে জীবনও দিয়ে দিতে পারে।
এই টুণ্ডুপ-ই একদিন তার চরিত্র পাল্টে ফেললো। যেদিন জানতে পারলো ‘স্রষ্টা নেই’ এটা প্রমাণ করার জন্যে স্যার প্রাণপণ চেষ্টা করছে সেদিন থেকেই স্যার তার চোখের বিষ হয়ে গেলো।
একবার ভাবলো, স্যারকে এসব কাজ করা থেকে বারণ করবে সে। পরক্ষণে এ সিদ্ধান্ত বাদ দিলো। স্যার তার বারণ শুনবে তো না-ই উল্টো হয়তো রেগে তাকে ঘাড় ধরে বাড়ি থেকে বেরও করে দিতে পারে।
তাই টুণ্ডুপ চিন্তা করতে লাগলো কিভাবে স্যারকে এই পাপের কাজ থেকে বিরত রাখা যায়!
হ্যাঁ, এটাতো অবশ্যই পাপের কাজ। যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন তাঁকে অস্বীকার করাতো অবশ্যই পাপ। টুণ্ডুপ পাপী হতে চায় না।
একবার ভাবলো স্যারের ল্যাবে আগুন লাগিয়ে দেবে। তাহলে সব কিছুর সাথে ‘স্রষ্টা সন্ধান’ সমীকরণও পুড় যাবে। এই চিন্তাও বাদ দিলো। স্যারকে সে চেনে। আগুন লেগে সবকিছু পুড়ে গেলেও স্যার দমবার পাত্র নয়। তিনি নতুনভাবে আবার শুরু করবেন। তাছাড়া এতো সুন্দর একটা ল্যাবরেটরি পুড়ে ফেলতেও টুণ্ডুপের মন সায় দিচ্ছিলো না।
সে অন্য চিন্তা করতে লাগলো। চিন্তায় চিন্তায় সে অস্থির। ভয়েও অস্থির। যদি তার চিন্তার কথা স্যার অংক কষে বের করে ফেলেন!
তবে ভাগ্যের ব্যাপার, স্যার এখন ‘স্রষ্টা সন্ধান’ সমীকরণ নিয়ে এতোই ব্যস্ত যে, অন্যান্য সমীকরণ নিয়ে তিনি মাথা ঘামান না।
টুণ্ডুপ সারাদিন বাসার কাজ-কর্ম করে আর স্যারের ল্যাবের আশেপাশে ঘুরঘুর করে সুযোগের অপেক্ষায়। একদিন সত্যি সত্যি সুযোগ এসে যায় টুণ্ডুপের হাতের নাগালে।
দুই.
কী একটা কাজে প্রফেসর স্যার তাড়াহুড়ো করে বাসা থেকে বের হয়ে গেলে টুণ্ডুপ গিয়ে ঢুকলো স্যারের ল্যাবে। লেখার টেবিলে খাতার স্তুপ।
এতোক্ষণ স্যার যে খাতাটার মধ্যে লিখছিলো ওটাই টেনে নিলো টুণ্ডুপ। কী সব হিবিজিবি লেখা! টুণ্ডুপের মাথায় সেসব ঢুকে না। সে শুধু চিনলো ইংরেজি বর্ণমালার কিছু অক্ষর আর সংখ্যাগুলো। এছাড়া আরো অনেক সাংকেতিক চিহ্নতে ভর্তি খাতা।
টুণ্ডুপ সমীকরণের শেষ লাইনটি কিছু পরিবর্তন করে দিলো। যেমন- ‘ওয়ান’-এর পেট কেটে বানিয়ে দিলো ‘সেভেন’। ‘ওয়াই’-এর সাথে একটা ‘এক্স’ বসিয়ে দিলো।
এরকম আরো বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করে ল্যাব থেকে সরে গেলো টুণ্ডুপ। ভাবলো, দেখা যাক এবার সমীকরণের ফলাফল কী দাঁড়ায়!
তিন.
প্রফেসর রফিকুজ্জামান সমীকরণের সমাধান দেখে ভয় পেয়ে গেলেন। আজকে তিনি ‘স্রষ্টা সন্ধান’ সমীকরণের সমাধান করেছেন। তার হিসেব অনুযায়ী সমাধান হওয়া উচিত ছিলো ‘শূন্য’ অথবা ‘এক’।
কিন্তু এ কী! তিনি সমীকরণের সমাধান যা পেয়েছেন সে অনুযায়ী প্রজেক্ট দাঁড় করালে তো মারাত্মক কিছু ঘটে যাবে!
ভাবতে ভাবতে প্রফেসরের দেহে রাম ঘাম দেখা দিলো। কিন্তু তিনি দমে গেলেন না। পরদিন থেকে তিনি তার ল্যাবরেটরীতে সমীকরণের সমাধান অনুযায়ী প্রাকটিক্যাল করার জন্যে প্রজেক্ট দাঁড়া করানো শুরু করলেন।
দিন-রাত তিনি এখন কেমিক্যাল আর বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিয়ে পড়ে থাকেন। ছোট-ছোট সমীকরণের সমাধান টানেন। সে অনুযায়ী খুশি মনে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করেন। সফল হলে আনন্দিত হন। বিফল হলে প্রথম থেকে আবার শুরু করেন।
চার.
একমাস পর।
‘স্রষ্টা সন্ধান’ সমীকরণ থেকে যে সমাধান ড. রফিকুজ্জামান পেয়েছেন সে অনুযায়ী কাজ করে তিনি যেটা আবিষ্কার করেছেন- ‘থিওরি অব মাইন্ড’ সূত্র। থিওরি অব মাইন্ড ব্যবহার করে মানুষ মনের গতিতে যেখানে খুশি যেতে পারবে। কেউ যদি ভাবে সে এখন মঙ্গল গ্রহে আছে তাহলে সে মঙ্গল গ্রহেই থাকবে।
ব্যাপারটা অনেকটা কর্পূরের মতো। কর্পূর যেমন বাতাসে খোলা অবস্থায় রাখলে উবে যায়। মানুষও সে রকম উবে যায়, তারপর যেখানে ইচ্ছে সেখানে মিলিত হয় তার দেহের ফ্লেভার আর কোয়ার্কগুলো।
দেহের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অণুগুলো বিশ্লেষণ করলে যে কণা পাওয়া যায় তাকে বলে পরমাণু। পরমাণুর তিনটি স্থায়ী মৌলিক কণিকা (ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন) এবং অস্থায়ী মৌলিক কণিকাকে বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায় কোয়ার্ক। কোয়ার্ককে বিশ্লেষণ করলে যা পাওয়া যায় তাহলো বিভিন্ন ফ্লেভার ও কালার।
বৈজ্ঞানিকরা জানে না, ফ্লেভার ও কালারকে বিশ্লেষণ করলে কী পাওয়া যায়!
এই অজানা তথ্যই বের হয়ে এসেছে ড. রফিকুজ্জামানের ‘স্রষ্টা সন্ধান’ সমীকরণের সমাধানে। এবং তা থেকেই ড. রফিকুজ্জামান আবিষ্কার করেছেন ‘থিওরি অব মাইন্ড’ সূত্র।
ব্যাপারটা এতোই অবিশ্বাস্য যে, ড. রফিকুজ্জামান নিজেই বিশ্বাস করতে পারেন না। কিন্তু সমীকরণের তত্ত্বও মিথ্যা নয়। তিনি সূত্র ব্যবহার করে ইতোমধ্যে চাঁদ থেকে ঘুরেও এসেছেন।
একদিন প্রফেসর সাহেবের ল্যাবে আগুন লেগে সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেলো।
‘স্রষ্টা সন্ধান’ সমীকরণ থেকে শুরু করে ‘থিওরি অব মাইন্ড’ সূত্রসহ সব যন্ত্রপাতি- সব পুড়ে গেলো।
এরপর প্রফেসর আরো বেশ কয়েকবার ‘থিওরি অব মাইন্ড’ সূত্রটি সমীকরণ করে বের করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সমীকরণ সমাধান শেষে দেখেন সূত্র নেই!
তিনি হতাশ হন না। আবার প্রথম থেকে শুরু করেন। আবার। এবং আবার।
পাঁচ.
শেষ পর্যন্ত তিনি হাতশ হলেন। কিংবা বলা যায় হাল ছেড়ে দিলেন।
তিনি এখন ‘স্রষ্টা সন্ধান’ সমীকরণটির সমাধান করার চেষ্টা শুরু করেছেন পুনরায়। সমাধান ‘শূন্য’ হলে স্রষ্টা আছে আর ‘এক’ হলে স্রষ্টা নেই।
সমাধান কি আদৌ ‘এক’ অথবা ‘শূন্য’ হবে? নাকি ভুল করে আবার কোনো যুগান্তকারী সূত্র আবিষ্কার হবে? নাকি………?!
তিনি প্রতিটা কাজের ফলাফল অংক কষে বের করে ফেলেন। সে এক এলাহী কাণ্ড! যে কাউকে দেখে তিনি অংক কষে বলতে পারেন এ ব্যক্তি আজ দিনে কী কী কাজ করেছে, দিনের বাকী সময় কী করবে, কী করা উচিত সঅব!
তিনি ঘোর নাস্তিক। ইদানিং তিনি স্রষ্টা যে নেই তা অংক কষে বের করার চেষ্টা করছেন।
তার ধারনা খুব শিঘ্রই সফল হবেন তিনি।
ইতোমধ্যে তিনি তার স্বপে একটা সমীকরণ দাঁড় করিয়ে ফেলেছেন। সমীকরনের ফলাফল ‘শূন্য’ হলে বুঝতে হবে স্রষ্টা আছে। আর যদি ‘এক’ হয় তাহলে স্রষ্টা নেই।
তিনি রাত-দিন সমীকরণ নিয়ে পড়ে থাকেন। এবং মনে প্রাণে চাচ্ছেন সমীকরণের ফলাফল হোক ‘এক’।
কিন্তু চাইলেই তো হবে না। সমীকরণ মিলতে হবে। সঠিক সমাধান হতে হবে। আর তাহলেই কেল্লাফতে! তিনি যুগান্তকারী আবিষ্কারক হয়ে যাবেন। ড. রফিকুজ্জামান তার ল্যাবরেটরীতে বসে তার ‘স্রষ্টা সন্ধান’ সমীকরণ নিয়ে কাজ করছেন।
হঠাৎ কাজ থামিয়ে গলা ছেড়ে ডাকলেন- টুণ্ডুপ! অ্যাই টুণ্ডুপ!!
ডাক শুনে হাজির হলো প্রফেসর সাহেবের চাকর।
‘তুমি এতোক্ষণ দাঁড়িয়েছিলে, না বসেছিলে?’
‘জ্বি, দাঁড়াই ছিলাম।’
‘এখানে যেভাবে দাঁড়িয়ে আছো সেভাবে, না অন্যভাবে?’
টুণ্ডুপ কিভাবে এতোক্ষণ দাঁড়িয়েছিলো সে ভঙ্গি দেখালো।
প্রফেসর সাহেব টুণ্ডুপকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে খাতা কলম টেনে নিলেন। তারপর খাতায় একটা সমীকরণ লিখে সমীকরণ সমাধান করার লক্ষে লিখে যেতে লাগলেন লাইনের পর লাইন।
পুরো সাতাশ মিনিট লাগলো সমীকরণের সমাধান টানতে। সমাধান করে প্রফেসর সাহেব টুণ্ডুপের দিকে তাকালেন হাসি হাসি মুখে।
‘তুমি এতোক্ষণ চা করছিলে। আর ভাবছিলে, স্যার চায়ের জন্যে কখন আমায় ডাকবেন। ঠিক?’
‘জ্বে, ঠিক অইছে।’
‘তাহলে যাও, চা নিয়ে আসো।’
টুণ্ডুপ এখন আর এসব কথায় আশ্চর্য বা অভিভূত হয় না। আর এ অল্প কথায় আশ্চর্য হবারই বা কী আছে? স্যার এরচে’ আরো কতো কঠিন কঠিন ব্যাপার সহজ করে বলে যান!
এই তো সেদিন সকালের কথাই ধরা যাক-
টুণ্ডুপ বাগানের বেঞ্চিতে বসে আছে চুপচাপ, আনমনে। হঠাৎ সম্বিত ফিরে পেয়ে সামনে ফিরে দেখে প্রফেসর স্যার তাকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে।
টুণ্ডুপ স্যারের দিকে তাকাতেই তিনি কাছে চলে এলেন। বললেন, ‘টুণ্ডুপ, তুমি আমার চোখের আড়ালে গিয়ে একশ’ কদম হাঁটবে। সেই সাথে তোমার মনে যা আসে তা-ই ভাববে। ঠিক আছে?’
জ্বে, ঠিক আছে।’
‘আমি তোমার জন্যে এখানে বসে আছি। একশ’ কদম হাঁটা শেষ হলে আমার কাছে চলে আসবে। আর যা ভাববে তা মনে রেখো। যাও।’
টুণ্ডুপ কিছু না ভেবে হাঁটতে চলে গেলো। এবং একটু পর ফিরে এলো।
‘স্যার…।’
টুণ্ডুপকে কথা বলতে না দিয়ে তার সারা দেহ ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলেন। পুরো দশ মিনিট টুণ্ডুপকে কাছে থেকে, দূরে গিয়ে, সামনে-পেছনে থেকে দেখে, মুখের পেশী হাত-পা লক্ষ্য করে বিদায় করলেন।
তারপর প্রফেসর সাহেব তার ল্যাবরেটরিতে গিয়ে খাতা কলম নিয়ে বসলেন।
একটানা পরদিন বিকেল পর্যন্ত তিনি অংক কষে গেলেন। দিস্তা দিস্তা খাতা আর ডজন ডজন কলমের কালি শেষ হলো। তিনি অনেকগুলো সমীকরণের সফল সমাধান করেছেন। বেশির ভাগ সমীকরণের ফলাফল হয়েছে ‘শূন্য’ আর ‘এক’ কিছু হয়েছে ইংরেজি বর্ণমালার শেষ তিনটি অক্ষর। কিছু হয়েছে নিরেট কতগুলো সংখ্যা।
শূন্য, এক, অক্ষর, সংখ্যা বিশ্লেষণ করে প্রফেসর সাহেব বিরাট তথ্যভাণ্ডার পেয়ে গেলেন। চাকর টুণ্ডুপকে ডেকে বললেন, ‘কাল তুমি হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিলে… ভাবছিলে, একটা মেয়ের কথা।’
প্রফেসরের কথা শুনে টুণ্ডুপের হৃদপিণ্ড ধক করে উঠলো। টুণ্ডুপ সত্যি সত্যি গতকাল হাঁটার সময় একটা মেয়ের কথা ভাবছিলো। সে যখন হাঁটতে রাস্তায় যায় তখন সেখানে একটা সুন্দরী মেয়ে তার চোখে পড়ে। সে মেয়েটাকে নিয়ে অনেক কিছু ভেবেছিলো। ভেবেছিলো, এই মেয়েটার সাথে তার বিয়ে হতে পারতো। এবং বিয়ে হলে সে মেয়েটার সাথে কীরকম ব্যবহার করবে, মেয়েটা তাকে কী বলবে, এমন কি বাসর রাতের দৃশ্যও ভেবেছিলো। এসব ভাবতে ভাবতে টুণ্ডুপের গায়ে কালো ঘাম দেখা দিলো। তার গলা শুকিয়ে গেলো। স্যার কি সত্যি সত্যি অংক কষে সব জেনে গেছেন? কী সব্বোনাশ!
টুণ্ডুপ কাঁপা কাঁপা দৃষ্টিতে স্যারের দিকে তাকালো। প্রফেসর সাহেব হাসি হাসি মুখ করে তার দিকে তাকিয়ে আছেন।
‘তুমি ভেবেছিলে, ইস! আমি যদি মেয়েটিকে বিয়ে করতে পারতাম। আরো ভেবেছিলে, তুমি মেয়েটির সাথে কী করতে চাও। আমি কি ঠিক বলেছি টুণ্ডুপ?’
টুণ্ডুপ বিস্ফারিত চোখে স্যারের দিকে তাকিয়ে রইলো।
‘শোনো টুণ্ডুপ, বিয়ে মোটেও ভালো জিনিস না। মেয়েরা হলো নরকের কীট, আবর্জনার নোংরা। টিকটিকির ল্যাজ, সর্বভূক আরশোলা, আর আর… আর বোকা! বুঝতে পারছো?’
টুণ্ডুপ মাথা নাড়লো।
‘তাহলে শোনো, বিয়ে তারচেয়েও নোংরা। আর বিয়ের পর তুমি যা করবে বলে কল্পনা করেছো ওসবতো যাচ্ছেতাই। খবিস! বুঝতে পারছো? হ্যাঁ, বুঝতে পারলে এবার যাও। এসব আর ভাববে না।’
টুণ্ডুপ মাথা নেড়ে রুম থেকে বের হলো। মেয়েরা ভালো নয়, এরা টিকটিকির ল্যাজ, নরকের কীট এসব তার বিশ্বাস হয় না।
একটু পরে প্রফেসর সাহেব আবার ডাকলেন টুণ্ডুপকে। টুণ্ডুপ ল্যাবে ঢুকতেই প্রফেসর স্যার বললেন,
‘তুমি মেয়েদের সম্পর্কে আমার ধারনার কথা বিশ্বাস করনি। সেটা আমি অংক কষে এই মাত্র বের করলাম।’
টুণ্ডুপ একথা শুনে আশ্চর্য হলো না। সে এরকম হবে বলেই ভেবেছিলো। স্যারের কথায় সে জীবনে একবারই আশ্চর্য হয়েছে। এখন তার অনুভূতি শূন্য। ব্যাপারটা সে সহজভাবে নিয়েছে। হয়তো ভাবছে, স্যারের অংক কষে বের করাটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু এটা যে সায়েন্টিস্ট কিংবা সুধীমহলের কাছে যুগান্তকারী আবিস্কার সে কথা তো আর টুণ্ডুপ জানে না।
তাই আজকে যখন টুণ্ডুপকে সব কিছু জিজ্ঞেস করে স্যার বললো, সে এতোক্ষণ চা করছিলো আর স্যারের চা লাগবে কি না ভাবছিলো তখন এটা সে স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছে। এখন বরং সে স্যারকে একাজে সহায়তা করে।
যেমন সে কখন কী করছে তা মনে রাখার চেষ্টা করে যেনো স্যার জিজ্ঞেস করলে ঠিক ঠিক বলতে পার। টুণ্ডুপ স্যারকে খুব ভালোবাসে। স্যারের জন্যে সে জীবনও দিয়ে দিতে পারে।
এই টুণ্ডুপ-ই একদিন তার চরিত্র পাল্টে ফেললো। যেদিন জানতে পারলো ‘স্রষ্টা নেই’ এটা প্রমাণ করার জন্যে স্যার প্রাণপণ চেষ্টা করছে সেদিন থেকেই স্যার তার চোখের বিষ হয়ে গেলো।
একবার ভাবলো, স্যারকে এসব কাজ করা থেকে বারণ করবে সে। পরক্ষণে এ সিদ্ধান্ত বাদ দিলো। স্যার তার বারণ শুনবে তো না-ই উল্টো হয়তো রেগে তাকে ঘাড় ধরে বাড়ি থেকে বেরও করে দিতে পারে।
তাই টুণ্ডুপ চিন্তা করতে লাগলো কিভাবে স্যারকে এই পাপের কাজ থেকে বিরত রাখা যায়!
হ্যাঁ, এটাতো অবশ্যই পাপের কাজ। যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন তাঁকে অস্বীকার করাতো অবশ্যই পাপ। টুণ্ডুপ পাপী হতে চায় না।
একবার ভাবলো স্যারের ল্যাবে আগুন লাগিয়ে দেবে। তাহলে সব কিছুর সাথে ‘স্রষ্টা সন্ধান’ সমীকরণও পুড় যাবে। এই চিন্তাও বাদ দিলো। স্যারকে সে চেনে। আগুন লেগে সবকিছু পুড়ে গেলেও স্যার দমবার পাত্র নয়। তিনি নতুনভাবে আবার শুরু করবেন। তাছাড়া এতো সুন্দর একটা ল্যাবরেটরি পুড়ে ফেলতেও টুণ্ডুপের মন সায় দিচ্ছিলো না।
সে অন্য চিন্তা করতে লাগলো। চিন্তায় চিন্তায় সে অস্থির। ভয়েও অস্থির। যদি তার চিন্তার কথা স্যার অংক কষে বের করে ফেলেন!
তবে ভাগ্যের ব্যাপার, স্যার এখন ‘স্রষ্টা সন্ধান’ সমীকরণ নিয়ে এতোই ব্যস্ত যে, অন্যান্য সমীকরণ নিয়ে তিনি মাথা ঘামান না।
টুণ্ডুপ সারাদিন বাসার কাজ-কর্ম করে আর স্যারের ল্যাবের আশেপাশে ঘুরঘুর করে সুযোগের অপেক্ষায়। একদিন সত্যি সত্যি সুযোগ এসে যায় টুণ্ডুপের হাতের নাগালে।
দুই.
কী একটা কাজে প্রফেসর স্যার তাড়াহুড়ো করে বাসা থেকে বের হয়ে গেলে টুণ্ডুপ গিয়ে ঢুকলো স্যারের ল্যাবে। লেখার টেবিলে খাতার স্তুপ।
এতোক্ষণ স্যার যে খাতাটার মধ্যে লিখছিলো ওটাই টেনে নিলো টুণ্ডুপ। কী সব হিবিজিবি লেখা! টুণ্ডুপের মাথায় সেসব ঢুকে না। সে শুধু চিনলো ইংরেজি বর্ণমালার কিছু অক্ষর আর সংখ্যাগুলো। এছাড়া আরো অনেক সাংকেতিক চিহ্নতে ভর্তি খাতা।
টুণ্ডুপ সমীকরণের শেষ লাইনটি কিছু পরিবর্তন করে দিলো। যেমন- ‘ওয়ান’-এর পেট কেটে বানিয়ে দিলো ‘সেভেন’। ‘ওয়াই’-এর সাথে একটা ‘এক্স’ বসিয়ে দিলো।
এরকম আরো বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করে ল্যাব থেকে সরে গেলো টুণ্ডুপ। ভাবলো, দেখা যাক এবার সমীকরণের ফলাফল কী দাঁড়ায়!
তিন.
প্রফেসর রফিকুজ্জামান সমীকরণের সমাধান দেখে ভয় পেয়ে গেলেন। আজকে তিনি ‘স্রষ্টা সন্ধান’ সমীকরণের সমাধান করেছেন। তার হিসেব অনুযায়ী সমাধান হওয়া উচিত ছিলো ‘শূন্য’ অথবা ‘এক’।
কিন্তু এ কী! তিনি সমীকরণের সমাধান যা পেয়েছেন সে অনুযায়ী প্রজেক্ট দাঁড় করালে তো মারাত্মক কিছু ঘটে যাবে!
ভাবতে ভাবতে প্রফেসরের দেহে রাম ঘাম দেখা দিলো। কিন্তু তিনি দমে গেলেন না। পরদিন থেকে তিনি তার ল্যাবরেটরীতে সমীকরণের সমাধান অনুযায়ী প্রাকটিক্যাল করার জন্যে প্রজেক্ট দাঁড়া করানো শুরু করলেন।
দিন-রাত তিনি এখন কেমিক্যাল আর বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিয়ে পড়ে থাকেন। ছোট-ছোট সমীকরণের সমাধান টানেন। সে অনুযায়ী খুশি মনে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করেন। সফল হলে আনন্দিত হন। বিফল হলে প্রথম থেকে আবার শুরু করেন।
চার.
একমাস পর।
‘স্রষ্টা সন্ধান’ সমীকরণ থেকে যে সমাধান ড. রফিকুজ্জামান পেয়েছেন সে অনুযায়ী কাজ করে তিনি যেটা আবিষ্কার করেছেন- ‘থিওরি অব মাইন্ড’ সূত্র। থিওরি অব মাইন্ড ব্যবহার করে মানুষ মনের গতিতে যেখানে খুশি যেতে পারবে। কেউ যদি ভাবে সে এখন মঙ্গল গ্রহে আছে তাহলে সে মঙ্গল গ্রহেই থাকবে।
ব্যাপারটা অনেকটা কর্পূরের মতো। কর্পূর যেমন বাতাসে খোলা অবস্থায় রাখলে উবে যায়। মানুষও সে রকম উবে যায়, তারপর যেখানে ইচ্ছে সেখানে মিলিত হয় তার দেহের ফ্লেভার আর কোয়ার্কগুলো।
দেহের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অণুগুলো বিশ্লেষণ করলে যে কণা পাওয়া যায় তাকে বলে পরমাণু। পরমাণুর তিনটি স্থায়ী মৌলিক কণিকা (ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন) এবং অস্থায়ী মৌলিক কণিকাকে বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায় কোয়ার্ক। কোয়ার্ককে বিশ্লেষণ করলে যা পাওয়া যায় তাহলো বিভিন্ন ফ্লেভার ও কালার।
বৈজ্ঞানিকরা জানে না, ফ্লেভার ও কালারকে বিশ্লেষণ করলে কী পাওয়া যায়!
এই অজানা তথ্যই বের হয়ে এসেছে ড. রফিকুজ্জামানের ‘স্রষ্টা সন্ধান’ সমীকরণের সমাধানে। এবং তা থেকেই ড. রফিকুজ্জামান আবিষ্কার করেছেন ‘থিওরি অব মাইন্ড’ সূত্র।
ব্যাপারটা এতোই অবিশ্বাস্য যে, ড. রফিকুজ্জামান নিজেই বিশ্বাস করতে পারেন না। কিন্তু সমীকরণের তত্ত্বও মিথ্যা নয়। তিনি সূত্র ব্যবহার করে ইতোমধ্যে চাঁদ থেকে ঘুরেও এসেছেন।
একদিন প্রফেসর সাহেবের ল্যাবে আগুন লেগে সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেলো।
‘স্রষ্টা সন্ধান’ সমীকরণ থেকে শুরু করে ‘থিওরি অব মাইন্ড’ সূত্রসহ সব যন্ত্রপাতি- সব পুড়ে গেলো।
এরপর প্রফেসর আরো বেশ কয়েকবার ‘থিওরি অব মাইন্ড’ সূত্রটি সমীকরণ করে বের করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সমীকরণ সমাধান শেষে দেখেন সূত্র নেই!
তিনি হতাশ হন না। আবার প্রথম থেকে শুরু করেন। আবার। এবং আবার।
পাঁচ.
শেষ পর্যন্ত তিনি হাতশ হলেন। কিংবা বলা যায় হাল ছেড়ে দিলেন।
তিনি এখন ‘স্রষ্টা সন্ধান’ সমীকরণটির সমাধান করার চেষ্টা শুরু করেছেন পুনরায়। সমাধান ‘শূন্য’ হলে স্রষ্টা আছে আর ‘এক’ হলে স্রষ্টা নেই।
সমাধান কি আদৌ ‘এক’ অথবা ‘শূন্য’ হবে? নাকি ভুল করে আবার কোনো যুগান্তকারী সূত্র আবিষ্কার হবে? নাকি………?!
সূত্র : অনলাইন
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত দিন